শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের উপকণ্ঠে জাগরণের রোডমার্চে দফায় দফায় হামলার সময় একটি হাতবোমার আঘাতে ভেঙে যায় এই মুক্তিযোদ্ধার গাড়ির কাচ। ভাঙা কাচ বেঁধে এই মুক্তিযোদ্ধার মাথায়, রক্ত গড়িয়ে ভিজে যায় গেঞ্জি-ট্রাউজার।
এরপর বগুড়ায় ব্যান্ডেজ করে ওষুধ নিয়ে মাকসুদুল ফিরে আসেন রোডমার্চের সহযোদ্ধাদের কাছে। আহত অবস্থায়ও রাতে জাগরণকর্মীদের সঙ্গেই ছিলেন, ঘুরে ঘুরে নবীন যোদ্ধাদের আন্দোলনে উত্সাহ দেন তিনি।
সকাল হতেই রোডমার্চের গাড়ি চলতে শুরু করলে বিভিন্ন পথসভায় সদা হাস্যমুখ, সদালাপী এই মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে থাকেন।
রংপুরের পীরগঞ্জে পথসভা চলাকালে মাকসুদুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই আহত হওয়া তো বড় কোন বিষয় না। সকলের সঙ্গে আছি এটাই বড় বিষয়।
“ব্যথা একটু লাগে, তবে মনের দিক থেকে ভেঙে পড়লে তো শুয়ে থাকতে হবে। এ কারণে সবার সঙ্গেই আছি। ”
একাত্তরের ১৭ জুলাই সিলেটের ধলাই এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করতে গিয়ে শত্রুদের বোমায় আহত হন মাকসুদুল।
“সেই সময় ভারতের কমলপুরে প্রায় দেড়মাস চিকিত্সা নিয়ে রণাঙ্গনে ফিরে আসি। তখনো পুরো সুস্থ হইনি। কিছুদিনের মধ্যেই আঘাতের বিভিন্ন জায়গায় পেকে যায়। এরপর আবার চিকিত্সা নিতে হয়। ”
তখনকার ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের এই সদস্যকে স্বাধীনতার পরও আমাকে চিকিত্সা নিতে হয়েছে।
“এখনো দুটি স্প্লিন্টার দেহে রয়ে গেছে। তবে সেগুলো তেমন একটা সমস্যা করে না,” বলেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
মাসকসুদুলকে দেখে উজ্জীঅবিত জাগরণকর্মী সেলিম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাকে প্রথম থেকেই দেখে এসেছি। তাকে প্রাণচাঞ্চল্য দেখে অবাক হয়েছি। তিনি আসলে এই মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করেন, একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চান।
“বয়সে তিনি বৃদ্ধ হলেও মনের দিক থেকে তরুণ আছেন। তার মাথায় সিরিয়াস আঘাত, এ জন্য আমি তার সঙ্গে কথা বলিনি। কিন্তু এরপরও তাকে দারুণ উত্সাহে সবার সঙ্গে কথা বলতে দেখেছি। ”
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।