হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত-হযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদের কারো মত নই। ”
বুখারী শরীফ ও ফতহুল বারী কিতাবে আরো বর্ণিত আছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনুরূপ নই। ”
বুখারী শরীফ ও ফতহুল বারী কিতাবে এ প্রসঙ্গে আরো বর্ণিত আছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “তোমাদের মধ্যে আমার অনুরূপ কে রয়েছে?” অর্থাৎ অন্য কেউই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - উনার মত নয় বা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য কারো মত নন। জনৈক কবি বলেছেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাশার, তবে তিনি অন্যান্য বাশারের মত নন। যেরূপ ইয়াকুত পাথর, অন্যান্য পাথরের মত নয়।
”
আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমস্ত বিষয়েরই ইলম দান করেছেন, যা মহান আল্লাহ পাক - উনার অসীম কুদরতী কলম বা কলমে আ’লার আওতায়ও আসেনি। যা লাওহে মাহফুজও আয়ত্ব করতে পারেনি। কশ্মিনকালেও সৃষ্টির শুরু থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত তাঁর মত কেউ পয়দা হয়নি এবং কেউ তাঁর সমকক্ষ হবে না। সমস্ত কায়িনাতে তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো অনেক দুরের কথা তাঁর পুত-পবিত্রা আহলিয়াগণ অর্থাৎ হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণের শানেই আল্লাহ পাক সূরা আহযাবে ইরশাদ করেন, “হে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - উনার স্ত্রীগণ! আপনারা অন্যান্য মহিলাদের মত নন।
” সুতরাং যেই রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম - উনার আহলিয়া হওয়ার কারণে তাঁরা দুনিয়ার সকল মহিলাদের থেকে তুলনাহীন হলেন, সেই মহান ব্যক্তিত্ব যিনি একমাত্র আল্লাহ পাক - উনার পরেই সমস্ত প্রকার শ্রেষ্ঠত্ব, ভালাই ও কল্যাণের একচ্ছত্র অধিকারী, তিনি আমাদের মত মানুষ হন কি করে?
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মত একজন বাশার, তবে আমার প্রতি ওহী নাযিল হয়। ” (সূরা কাহফ/১১০)-এ আয়াতে কারিমার প্রেক্ষিতে অনেকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমাদের মতই মানুষ বলে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এটা সম্পূর্ণরূপে অশুদ্ধ ও ভুল। কারণ আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যার প্রতি ওহী নাযিল হয়। বরং আমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজের প্রতি ওহী নাযিলের দাবী করে, তবে সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি সম্প্রদায় হয়েছে।
সূরা কাহফ - উনার ১১০ নম্বর আয়াত শরীফের সঠিক ও নির্ভরযোগ্য ব্যাখ্যা হলো, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র আদম সন্তান হিসেবে মানুষের অনুরূপ। সেজন্যই বণী আদমকে আশরাফুল আখলুকাত করা হয়েছে, অর্থাৎ আল্লাহ পাক মানুষকে আশরাফিয়াত দান করেছেন বা সৃষ্টির সেরা করেছেন। হাক্বীক্বত তিনি আমাদের মত মানুষ নন।
লক্ষ-কোটি দিক বা বিষয় রয়েছে, যার দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ পাক - উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মত মানুষ নন, বরং তিনি “নূরে মুজাস্সাম” বা নূরের সৃষ্টি। হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম পর্যন্ত সকল পুত-পবিত্র মহিলা ও পুরুষ আলাইহিমুস সালামগণের মধ্যে তিনি সরাসরি নূর আকারে স্থানান্তরিত হয়েছেন এবং সর্বশেষে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম - উনার রেহেম শরীফ হতে নূর হিসেবেই যমীনে তাশরীফ এনেছেন।
সে কারণে তাঁর শরীর মুবারকের কোন ছায়া ছিল না।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - উনার শরীর মুবারকে যা কিছু ছিল, তার সবই ছিল পবিত্র থেকে পবিত্রতম। এমনকি উনার নূরুশ শিফা – নূরুন নাজাত মুবারকও ছিল পাক ও পবিত্রতো অবশ্যই বরং পবিত্রতা ও নাযাত পাওয়ার মাধ্যম। যা পান করার কারণে জাহান্নামী লোকের জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। তিনি যে হাযত পুরা করতেন তাও কোন মানুষ দেখতে পেত না।
যমীন তা সাথে সাথেই গ্রাস করে ফেলত বা খেয়ে ফেলত। উনার শরীর মুবারকে কশ্মিনকালেও মশামাছি বসতো না।
সাধারণ মানুষের স্ত্রীকে তালাক দিলে বা স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে অন্য কেউ বিবাহ করতে পারে। কিন্তু আল্লাহ পাক - উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - উনার বিদায়ের পরে উম্মুল মু’মিনীনগণকে অন্য কোন মানুষের জন্য বিবাহ করা হারাম। সাধারণ মানুষের মৃত্যুর পরে তার মীরাছ (পরিত্যক্ত সম্পদ) বণ্টন করতে হয়।
কিন্তু আল্লাহ পাক - উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - উনার ক্ষেত্রে তা নয়।
অসংখ্য, অগণিত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেগুলো একমাত্র হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - উনার জন্য খাছ। যা অন্য কোন মানুষ তো দূরের কথা অন্যান্য কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণকেও দান করা হয়নি। কাজেই তিনি কোন দিক থেকেই আমাদের মত মানুষ নন।
সকলের উচিত আল্লাহ পাক - উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - উনার প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা রেখে খালিছভাবে বেশি বেশি ছলাত ও সালাম পাঠ করা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।