আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিআই জরিপে আওয়ামীলীগ এগিয়ে, বিএনপি তলিয়ে।



বাংলাদেশের ভোটারদের বড় অংশই মনে করেন, দেশ ভুল পথে এগোচ্ছে। এ জন্য রাজনৈতিক সংঘাত, ঘন ঘন হরতাল আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে তাঁরা প্রধান কারণ বলে মনে করেন। রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ছাড় দিয়ে অবিলম্বে সংলাপে বসার পক্ষেও মত দিয়েছেন প্রধান দুই দলের সমর্থকেরা।
‘নির্বাচনোত্তর পরিবেশ’ দেশব্যাপী জরিপ, জানুয়ারি ২০১৪ শীর্ষক এক জরিপে এ মত উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই) পরিচালিত এই জরিপটি চালানো হয় ১১ থেকে ১৫ জানুয়ারি দেশের সাত বিভাগের ৩৯টি জেলায়।

১৮ ও তার চেয়ে বেশি বয়সের দেড় হাজার ভোটার জরিপে অংশ নেন। বহুস্তর ভিত্তিতে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে এ জরিপ চালানো হয়।
ধরা যাক, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনটা হলো। তখন কাকে ভোট দিতেন? জরিপে এ প্রশ্নের উত্তরে ৪২ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগ এবং ৩৫ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার কথা জানান। এখন ভোট হলে কোন দলকে ভোট দেবেন? উত্তরে ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ আওয়ামী লীগ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ বিএনপির পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন।


গতকাল রোববার গুলশানে ডিআইয়ের দপ্তরে কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেন সংস্থার কর্মকর্তারা। ডিআইয়ের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ ও সংস্কারবিষয়ক কর্মসূচির (ডিপিআর) পরিচালক ডেভিড ড্যাটম্যান জানান, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সাতটি জরিপ চালিয়েছে ডিআই।
ডিআইয়ের গবেষণা পরিচালক ডিকি ডুরাডি জানান, জরিপের পাশাপাশি প্রায় একই ধরনের প্রশ্নের ভিত্তিতে ফোনে আরেকটি জরিপ চালানো হয়। এক হাজার ৪৪ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে তৈরি এই জরিপের ফলও প্রায় একই।
ডিআইয়ের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ ও সংস্কারবিষয়ক (ডিপিআর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে নিয়েলসন বাংলাদেশের সহায়তায় জরিপটি পরিচালিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (ইউএসএইড) ও যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (ইউকেএইড) অর্থায়নে পাঁচ বছর মেয়াদি ডিপিআর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
দেশ কি সঠিক পথে চলছে, নাকি ভুল পথে চলছে? এ প্রশ্নের উত্তরে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৯ শতাংশ মত দিয়েছেন, দেশ ভুল পথে চলছে। আর ২৯ শতাংশ সঠিক পথে চলছে বলে মত দেন। এ জন্য রাজনৈতিক সংঘাত, ঘন ঘন হরতাল ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে কারণ হিসেবে দেখছেন যথাক্রমে ৮৯, ৬৬ ও ৫৪ শতাংশ মানুষ।
জরিপে অংশ নেওয়া দেড় হাজার মানুষের ৭৭ শতাংশ জানান, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তাঁরা ভোট দেননি।

অর্থাৎ ভোট দেওয়া মানুষের হার ছিল ২৩ শতাংশ। ভোট দেননি এমন মানুষের ৬৬ শতাংশই জানান, তাঁদের এলাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় তাঁরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।
এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত নতুন সরকারের ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখা যায়, আস্থা রাখা যায়, কম আস্থা রাখা যায় ও আস্থা রাখা যায় না। এ বিষয়ে ৪০ শতাংশ মনে করেন, আস্থা রাখা যায় না; ১৭ শতাংশ মনে করেন কম আস্থা রাখা যায়।
নতুন সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবে, নাকি পূর্ণ মেয়াদে থাকা উচিত নয়, জানতে চাইলে ৫৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন, সরকারের মেয়াদ সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত।

জরিপে ৫৯ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন, পাঁচ বছরের আগেই দেশে আরেকটি নির্বাচন হওয়া উচিত। এর বিপক্ষে মত দেওয়া লোকজনের হার ৩৫ শতাংশ। বর্তমান সরকারকে এক বছরের কম সময় ক্ষমতায় দেখতে চান উত্তরদাতাদের ৪১ শতাংশ। আর ৩৮ শতাংশ মানুষ এ সরকারকে আবার চার থেকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চান।
বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে জরিপকারীদের কাছে কিছু প্রশ্ন করা হয়।

আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে বর্তমান সরকারকে সংলাপে বসার পক্ষে মত দিয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থক ৫৭ শতাংশ। আর বিএনপি-সমর্থক ৫২ শতাংশ মনে করেন, সংঘাতের পথ ছেড়ে বিএনপির উচিত অবিলম্বে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসা।
জরিপের কিছু ফলাফলে দুই দলের সমর্থকদের অনেকটা কাছাকাছি মতামত পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য দায়ী লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-সমর্থকদের যথাক্রমে ৮৬ ও ৮৪ শতাংশ লোক মত দিয়েছেন। বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ার পক্ষে আওয়ামী লীগের ৬২ ও বিএনপির ৮৫ শতাংশ সমর্থক মত দিয়েছেন।


মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অব্যাহত রাখার প্রস্তাবকে আওয়ামী লীগের ৭৬ শতাংশ ও বিএনপির ৫০ শতাংশ সমর্থক সমর্থন দিয়েছেন।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.