এখন অনেকে ঘের দেওয়া সালোয়ার পরছেন। কারও কাছে এটি পাতিয়ালা সালোয়ার, কেউ’বা চেনে কুঁচি দেওয়া সালোয়ার নামে। যে-নামেই পরিচিতি হোক না কেনো, ফ্যাশন আটকে আছে সালোয়ারের কুঁচির ভাঁজে ভাঁজে।
কামিজ যেকোনো নকশারই হোক না কেন, এই সালোয়ারের কাপড় এক রঙা হওয়াই ভালো। এতে কুঁচি ও ভাঁজের সৌন্দর্য ফুটে উঠে ভালোভাবে।
“যে সালোয়ারের ছাঁট নিয়ে এত মাতামাতি তার আগমন পাকিস্তানের পেশোয়ার থেকে। তবে আসল ছাঁটে থাকে অনেক বেশি কুঁচি। সেখান থেকে কিছুটা কুঁচি কমিয়েই আমরা পরছি। তৈরি করে নিয়েছি এর দেশি একটা স্টাইল। ” বললেন দেশি ফ্যাশন হাউজ বিবিয়ানার কর্ণধার লিপি খন্দকার।
তিনি আরও বলেন, “যে রকম কাপড় নেওয়া হোক না কেনো, তা হতে হবে নরম। সিল্ক, ডুপিয়ান, সুতি, উন্নত খাদি দিয়ে বানালে কুঁচিসালোয়ার ভালো হয়। তবে কাপড় শক্ত ও মোটা হলে পরার পর পায়ের গড়ন ভারী দেখাবে। এই সালোয়ার বানাতে প্রয়োজন হয় ৩ থেকে ৪ গজ কাপড়। কতটুকু কুঁচি চাচ্ছেন তার উপরেই নির্ভর করবে কাপড়ের পরিমাণ।
”
“মেয়েদের ফ্যাশনে এই সালোয়ার বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ঘরোয়া পরিবেশ, আড্ডা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি অফিসেও এই সালোয়ার গ্রহণীয়। স্বাচ্ছন্দ্যই যেন এর বড় কারণ। ” যোগ করলেন লিপি খন্দকার।
কুঁচির পর কুঁচি, ভাঁজের পর ভাঁজ-এ যেন নকশার খেলা।
কুঁচি সালোয়ারের আসল সৌন্দর্য এটাই। এই সালোয়ারে নকশা নিয়ে খেলা করা যায় অনেকভাবে; কাটছাঁটে আনা যায় পরিবর্তন। নানান রকম নামে সালোয়ারটি চলছে। বলা যায়, কুঁচির রকমফেরেই তৈরি হয় আলাদা স্টাইল।
দরজি ঘরগুলো ঘুরে খোঁজ পাওয়া গেল নানান রকম কুঁচি দেওয়া সালোয়ারের কাট-ছাঁট।
কয়েক স্টাইলে এ সালোয়ার তৈরি হয়।
স্টাইল-১ : সালোয়ারের পেছনে কোনো কুঁচি হবে না, যা হবে সব সামনে। সামনের দুই পাশে দু-একটা বড় কুঁচি, বাকি ছোট কুঁচির সংখ্যা হবে ৩-৪টি। বড় কুঁচিগুলোর মাপ হবে সাধারণত আড়াই ইঞ্চি। ছোট কুঁচিগুলো হয় আধা ইঞ্চি করে।
স্টাইল-২ : এই সালোয়ারের কুঁচিগুলো হয় অনেক বেশি এবং ঘন। তবে অনেকে কম কুঁচি পছন্দ করেন। তাই সামনে ও পেছনে চারদিকে ঘুরিয়ে সমানসংখ্যক কুঁচি দেওয়া হয়। মন চাইলে ৪টা করে ৮টা, ৫টা করে ১০টা অথবা ৬টা করে ১২টা দেওয়া যায়। কুঁচিগুলো হবে এক থেকে সোয়া এক ইঞ্চি মাপের।
স্টাইল-৩ : কোমরের দুইদিকে ৪ থেকে ৫ ইঞ্চির মতো জায়গায় কুঁচি হবে না, বাকি জায়গায় মনমতো বসান হয় কুঁচি। এক থেকে সোয়া এক ইঞ্চির মতো বড় হবে কুঁচিগুলো।
স্টাইল-৪ : কম কুঁচি দিয়ে এবং অনেক ফুলিয়ে করা হয় এই স্টাইলটি। গোড়ালির দিকে এসে হঠাতই বন্ধ হয়ে যাবে মুহুরি। স্টাইলও ফুটে উঠে কম মুহুরির মধ্য দিয়ে।
মুহুরির জায়গায় করাতে পারেন কারুকাজ। এটা আর কিছুই নয়, নিচের দিকে ২ থেকে সাড়ে ৩ ইঞ্চির মতো জায়গা শক্ত করে বেঁধে দেয়। দেখতে ভালোই লাগে। এ ছাড়া দিতে পারেন পাইপিং, হুক, চেইন ইত্যাদি। চাইলে লেসও লাগাতে পারেন।
লিপি বলেন, “লম্বায় ছোট বা বড় টি-শার্ট, ফতুয়া দিয়ে এ সালোয়ার পরলে বেশ মানায়। কামিজ পরলে লম্বায় ছোট কামিজই এই সালোয়ারের সঙ্গে ভালো যায়। না হলে কুঁচি ও ভাঁজের বাহার বৃথা যাবে। ভালো লাগবে ফতুয়া, টিউনিক ধাঁচের খাটো টপ এবং ছোট বেবি ফ্রক। সব বয়সেই এটি পরা যায়।
তবে সাবলীলভাবে পরার বিষয়টা নির্ভর করবে যার যার ব্যক্তিত্বের উপর। ”
যেখানে পাবেন
বিবিয়ানা, অঞ্জনস, বিবি প্রোডাকশনস, কে ক্রাফট, যাত্রাসহ বেশিরভাগ ফ্যাশন হাউজেই কিনতে পাওয়া যায় এই সালোয়ার। এ ছাড়া নিজের মনের মতো করে বানিয়ে নিতে বিভিন্ন দর্জিবাড়ি তো আছেই।
ছবি : অপুর্ব খন্দকার
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।