আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এমন সরকারের নজির বিশ্বের কোথাও নেই, আরেকটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন জরুরি

মানুষ নিদ্রিত এবং মৃত্যুর পরপরই সে জেগে উঠবে।


বর্তমান সরকার যথাযত প্রক্রিয়া ও সবার অংশগ্রহনমূলক নয়। তাই গণতন্ত্রকে সুসংহত ও রাজনৈতিক স্থিতিশিলতার জন্য যতদ্রুত সম্ভব আরেকটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরী। আর এজন্য দরকার বলপ্রয়োগ বা কঠোর বিপরীতে না থেকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ বের করা। টাইমনিউজের সঙ্গে আলাপকালে বিশিষ্টজনরা এমনই মত দিলেন।



সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন,নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। ভোটারের উপস্থিতি, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, সবার অংশগ্রহণ এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মানদণ্ড। এর কোনটিই গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পূর্ণ হয়নি। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

তিনি বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্বাচন হয়েছে বলে দাবি করা হলেও সংবিধানের স্পিরিটের সঙ্গে এর সঙ্গতি নেই।

সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে এবং আদালতের একাধিক রায়ের মধ্যেও নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিশেষ ক্ষমতা দেয়া আছে। কিন্তু এ নির্বাচনে তা বাস্তবায়ন হয়নি।

মজুমদার বলেন,সার্বজনীন মানবাধিকার সনদসহ বাংলাদেশের স্বাক্ষরিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সনদেও সার্বজনীন নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের কথা উল্লেখ রয়েছে। এসব কোন কিছুই নির্বাচন কমিশন অনুসরণ করেনি।

প্রখ্যাত আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, বিগত নির্বাচনের মাধ্যমে বিরোধীদলবিহীন যে সংসদ গঠিত হয়েছে- এমন সরকারের নজির বর্তমান বিশ্বের কোথাও নেই।

কারণ এ সংসদে সরকার ও বিরোধীদল একই জোটের। এ ধরনের একটি সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯১৭ সালে সাবেক সোভিয়ত ইউনিয়নে। তাই এ সরকারকে বহুদলীয় সরকার বলা যায় না। বরং এটা একটি দলীয় সরকার।

সংবিধানের কোন ধারা বলে এ ধরনের সরকার গঠিত হয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'হু কেয়ার এবাউট কনসটিটিউশন?'

শাহদীন মালিক বলেন, জাল ভোট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ও নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।

অবাধে জাল ভোট দেয়ার খবর ও ছবি প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। এমন জাল ভোট কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর মাধ্যমে নির্বাচনটি একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছে।

ড মালিক বলেন, ডক্ট্রিন অব ফ্যাক্ট অ্যান্ড ভ্যালিড বলে একটা বিষয় আছে। অর্থাৎ,ঘড়ির কাঁটাকে পেছনে ঠেলা যায় না।

যা হয়েছে তা ভাল না হলেও পেছনে ফেরার আর সুযোগ নেই। এখন সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এ নির্বাচন বাতিল করা সম্ভব নয়। সেটা হিসেব করেই বিরোধী দলকে কর্মসূচি দেয়া উচিত।

তিনি বলেন,বিচারপতি খায়রুল হকের দেয়া পর্যবেক্ষণে নির্বাচন কমিশনকে বলা ছিল, গ্রহণযোগ্য ও সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।

কিন্তু তা হয়নি।

তিনি বলেন,সরকারের সামনে দুটি পথ খোলা আছে। আত্মোপলব্ধি করে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়া। আর দ্বিতীয়ত,বলপ্রয়োগ। কিন্তু বলপ্রয়োগ আমাদেরকে নিয়ে যাবে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।



ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হয়েছে এর মাধ্যমে দেশে একটি 'নিউ বেনিফিসিয়াল ডেমক্রেসি' এর সুচনা হয়েছে। এটা জাতীর জন্য একটি কলঙ্কজনক ইতিহাস হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকহারে বিতর্কিত হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ভোটারবিহীন এ নির্বাচন জনগণের মধ্যে একটা নাড়া দিয়েছে। সাত কোটি ভোটারের ভোট দিতে না পারার আকুতি তীব্র হয়ে বেরিয়ে এসেছে।

এখন উভয় দলকেই নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।

উৎসঃ টাইমনিউজবিডি.কম


বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ার : বৃটিশ আইনজীবী স্টুয়ার্ট স্টিভেন।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।