খুঁজে ফিরি নিজেকে নিজের অন্তরালে
শেষ বেলায় এসে সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছিলাম। সারা দিনের বেচা কেনার হিসেব নিকেশ মিটিয়ে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। শাটারটা বন্ধ করবার জন্য যেই মাত্র হাত বাড়ালাম, তখনি পেছন থেকে পায়ের শব্দ শুনতে পেলাম। আগ্রহ ভরে তাকিয়ে দেখলাম পেছন ফিরে।
এমা, দেখে তো আমার চোখ দুখান ছানা বরা হয়ে গেল।
একি, এই শেষ বেলায় দোকানের মালিক এসে হাজির । আমি তো কিছুই মিলাতে পারছিলাম না। মনের মধ্যে দুরু দুরু ভয় হলো শুরু ।
মালিককে দেখে , দোকান আবার খুললাম। উনি সারাদিনের হিসেব পাই টু পাই করে দেখলেন।
গম্ভীর ভঙ্গিতে বললেন , বাকির হিসেবটা একটু বেশিই হয়ে গেলনা বৈকি ! আমি তার পানে ফেল ফেল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ,হুজুর হুজুর করবার ইয়াত্তা করলাম। এক কথা , দুই কথা বলতে বলতে বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে। আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে , বোকা ঘড়িকে থামিয়ে দেবার এক খামোখা চেষ্টা করলাম। আর মনে মনে ভাবলাম , আজ বুঝি বৌ আমার ঘরেই ঢুকতে দিবেনা।
বৌ বার বার মুঠো ফোনে বলেছিল, "আজ কিন্তু পালং শাকের সাথে শিং মাছের ঝোল করেছি তোমার জন্য, সাথে জলপাইয়ের আচারোও করেছি।
তুমি কিন্তু আজ খুব তাড়াতাড়ি চলে এসো গো । আজ নতুন একটা বই দেখতে যাবো , তোমাকে নিয়ে । আমি আজ লাল শাড়িতে তোমার দেয়া সেই ছোট্ট লাল টিপ পরে থাকবো। তুমি কিন্তু আজ দেরি করোনা গো। "
এভাবে ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছি আর অন্য দিকে মালিকের কথার সাথে জি জি , ইয়েস ইয়েস বলসি।
হঠাট, মালিক বলে উঠলেন, আচ্ছা- বাড়ুন কোথায় বলেন তো?
দেখেন কিছু। কি করেন সারা দিন ; শুধু বেচা -কেনা করলেই হবে । চারপাশটা কি ময়লা হয়ে গেছে। এদিকটাও তো লক্ষ্য রাখতে হবে।
আমি এবার সত্যি সত্যি ভাবতে লাগলাম- এইবার বুঝি , আমার নতুন বৌ সত্যি সত্যি বাপের বাড়ি চলে যাবে।
আমি বাড়ুন এনে চারি-পাশ পরিষ্কার অভিযানে নেমে পড়লাম।
আর মনে মনে বলছি-"বাড়ুন তুমি জালায় দিলে আমার মনের আগুন "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।