ধর্ম বিদ্বেষীরা আর কট্টর জামাতিরা তফাৎ যাও।
সাগর রুনি হত্তাকান্ডের ২ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলো আজ। ভাবছিলাম, পাষাণের মতো এবার আমিও মেঘের কান্নাকে এড়িয়ে যাবো, কিন্তু পত্রিকার পেজ গুলো উল্টাতে গিয়ে মেঘের ছবিটি দেখে আর থাকতে পারলাম না। মেঘের কান্না ভেজা চোখ দেখে ঝাপসা হয়ে এলো আমার চোখ দুটোও।
জানি, প্রতিবছর এ দিনটি এলে মেঘের বাবা মা'র হত্যাকারীরাই লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে টেলিভিশনের সামনে এসে আওড়াবে অনেক অনেক বড় বড় বুলি, শুনাবে আশার বানী।
সে আশার বানী শুনে বরাবরের মতোই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবো আমি, ফেলবে তুমিও। কিন্তু তুমি আমি খুব ভালো করেই জানি যে, তাদের সেই বুলি আর আশার বানী গুলো কেবল বাতাস হয়েই ভেসে বেড়াবে এই দেশে, একটা পরিষ্কার টিস্যু হয়ে সেগুলো কখনো কোনও মেঘের চোখের পানি মুছে দিতে আসবে না।
কি? ছবিটি দেখে এখন তোমারও চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে?
মন খারাপ করো না। কানে কানে তোমাকে একটা স্বপ্নের কথা বলি,
প্রায় প্রতিদিনই এই স্বপ্নটা দেখি আমি,
"দেখি, বাবা মা হারানো মেঘের চোখের জল,
ইলিয়াস আলীর মতো গুম হওয়া অসংখ্য মানুষের ছেলে-মেয়ে ও স্বজনদের চোখের জল,
২৫ শে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ হওয়া সেনাসদস্যদের ছেলে-মেয়ে ও স্বজনদের চোখের জল, ৫ই মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নিহতদের স্বজনদের চোখের জল,
রানা প্লাজার নিচে চাঁপা পড়া, তাজরিন গার্মেন্টসের মতো এমন অনেক গার্মেন্টসের আগুন পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া শ্রমিকদের চোখের জল,
শেয়ার বাজারে সর্বস্বান্ত হওয়া মানুষ, অধিকার বঞ্চিত নির্যাতিত শিক্ষকদের চোখের জল, সর্বোপরি নির্যাতিত, নিপীড়িত, লাঞ্চিত, নিগৃহীত এমন অগণিত মানুষের চোখের লবণাক্ত জল গুলো একটু একটু করে জমাট বেধে একদিন সেগুলো সমুদ্র থেকে মহাসমুদ্রে রূপান্তরিত হবে। "
বিশাল বিশাল সেই ঢেউগুলো ভয়ঙ্কর গর্জন তুলে আছড়ে পরবে শহর-নগর-বন্দরে, জেলা থেকে গ্রামে, ভাসিয়ে দেবে এদেশের প্রতিটি অলি গলি।
যেই নোনা জলগুলো ধুয়ে মুছে ছাফ করে নিয়ে যাবে শুধুমাত্র এমন শত সহস্র মানুষের কান্নার কারন হওয়া মানুষরূপী জানোয়ারগুলিকে।
অতঃপর,আমরা আবার নতুন করে সাজাবো এদেশটাকে। যেখানে থাকবে মেঘ, ইলিয়াস আলীর কন্যার মতো এমন অসংখ্য নিষ্পাপ এতিম শিশুরা। থাকবে উপরের মতো নির্যাতিত, লাঞ্চিত, বঞ্চিত সকল মানুষেরা। থাকবো আমি, থাকবে তুমিও।
সেদিন আমরা সবাই একসাথে মিলে আবারও নতুন ফসল ফলাবো এদেশে, স্বাধীনভাবে। ফসলের সবুজ সেই ক্ষেতে হাতে হাত রেখে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াবো আমি আর তুমি। মনের আনন্দে গান গাইবো, হাসবো, খেলবো। এবং দু'হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করবো প্রতিনিয়ত।
ভাবতে পারছো, কতো ভালো লাগবে সেদিনগুলো আমাদের সবার কাছে!
তবে এসো, আজ কিছুক্ষনের জন্য হলেও বিনম্র কণ্ঠে সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করি আমরা, এমন সুন্দর দিনগুলোর জন্য...!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।