আমি সাধারনের থেকেও সাধারন , অসাধারনের চেয়েও অসাধারন । । তবুও আমি তোমাদের একজন । ।
সম্প্রতি লন্ডন-ভিত্তিক সংস্থা ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপিরেশন’ প্রকাশ করেছে দেশের সেরা দশজন প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকা, যারা যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি সারা বিশ্বে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছেন।
এই ১০ প্রভাবশালীর মধ্যে তিনজন কাজ করেন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে। গতকাল লন্ডনের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কমনওয়েলথ রুমে এই সেরা দশ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।
প্রযুক্তিতে অবদান রাখা ব্যক্তিত্বদের তালিকায় রয়েছেন জোয়াদ করিম, সালমান খান ও সুমাইয়া কাজী।
ইউটিউবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জোয়াদ করিম
ইউটিউবের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও একবার না একবার হলেও সবাই ইউটিউবে প্রবেশ করেছেন।
বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি ও মুভি/মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল অফিসিয়াল চ্যানেল থাকলেও শুরুতে কিন্তু মোটেই তেমনটা ছিল না। ব্যক্তিগত বা হোম ভিডিও আপলোডের স্থান হিসেবেই যাত্রা শুরু করে ইউটিউব। আর এই যাত্রা শুরু হয় যেই তিনজনের হাত ধরে তাদের মধ্যে একজন এই জোয়াদ করিম। আর তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। সেরা ১০ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় তিনি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন।
বাংলাদেশি হলেও জোয়াদ জন্মগ্রহণ করেন জার্মানিতে। পরবর্তীতে ১৯৯২-এ পরিবারসহ তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। পরবর্তীতে তিনি জনপ্রিয় অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে পেপালে কাজ করার সময় দু’জন সহকর্মী চাড হারলে ও স্টিভ চিনের সঙ্গে মিলে ২০০৫ সালে ভিডিও শেয়ারিং-এর ধারণা নিয়ে ইউটিউব প্রতিষ্ঠা করেন। ইউটিউবের প্রথম আপলোড করা ভিডিয়োটিতে জোয়াদ করিমকে সান ডিয়েগো চিড়িয়াখানায় দেখা যায়।
খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সালমান খান
খান একাডেমি মূলত একটি অলাভজনক শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট।
২০০৬-এ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খান এই শিক্ষামূলক সাইটটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এমআইটি ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছিলেন।
খান একাডেমি সাইটটিতে রয়েছে পড়াশোনার জন্য হাজার হাজার রিসোর্স। রয়েছে এক লাখেরও বেশি অনুশীলনী, চার হাজারেরও বেশি মাইক্রো-লেকচার যেগুলো ভিডিও আকারে ইউটিউবে সংরক্ষিত রয়েছে। সাইটটিতে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, ইতিহাস, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, মেডিসিন, অর্থনীতি, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, জৈব রসায়ন, আর্টস, কম্পিউটার বিজ্ঞানসহ প্রচুর বিষয়ে পড়াশোনার জন্য রিসোর্স রয়েছে।
এই সব পাঠই বিশ্বব্যাপী যে কোনো শিক্ষার্থীর জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সহজলভ্য। খান একাডেমি প্রতি মাসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ৩০ কোটিরও বেশি পাঠ প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছে। সারাবিশ্বে ব্যাপক সাড়া ফেলা এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা ও শিক্ষক সালমান খান যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ভারতের কলকাতায় এবং বাবা বাংলাদেশের বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। লুইজিয়ানার পাবলিক স্কুল থেকে পাশ করে পরবর্তীতে তিনি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে পড়াশোনা করেন।
সালমান খান বিশ্বের সেরা ১০ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় রয়েছেন চতুর্থ স্থানে।
সোশাল নেটওয়ার্ক সুমাজির প্রতিষ্ঠাতা সুমাইয়া কাজী
সুমাজি মূলত একটি ইন্টেলিজেন্ট সোশাল নেভিগেশন সিস্টেম যেটি ব্যক্তিগত ও পেশাদার নেটওয়ার্কের জন্য কাজে লাগানো হয়। এর প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর সোশাল মিডিয়ার কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে নতুন নতুন কানেকশন সুপারিশ করতে সক্ষম। মূলত এ কাজে এটি ফেসবুক ও প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক লিংকডইন-এর উপর বাড়তি ‘লেয়ার’ হিসেবে কাজ করে থাকে। ব্যবহারকারীর নেটওয়ার্ক ও তার কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন সুযোগগুলোকে অগ্রাধিকার দেয় এবং নতুন নতুন ব্যবহারকারীকে সুপারিশ করে থাকে।
সুমাইয়া কাজী এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তির নির্মাতা ও সুমাজি নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা। এটি মূলত সান ফ্র্যান্সিসকো ভিত্তিক একটি স্টার্ট-আপ যেটি ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছে। সুমাইয়া কাজী ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউডে জন্মগ্রহণ করলেও বেড়ে ওঠেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে থেকে ২০০৪-এ ডিগ্রি অর্জন করে তিনি সান মাইক্রো সিস্টেমস-এ কাজ করতে শুরু করেন। সেখানে কাজ করার সময়ই তিনি তার প্রথম কোম্পানি ‘দ্য কালচার কানেক্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন যেটি তরুণ পেশাদারদের জন্য একটি মিডিয়া কোম্পানি হিসেবে কাজ করেন।
পরবর্তীতে ২০১১-এর এপ্রিলে তিনি সুমাজি প্রতিষ্ঠা করেন। স্টার্ট-আপদের নিয়ে সেরা প্রকাশনা টেকক্রাঞ্চ-এর ‘টেকক্রাঞ্চ ডিজরাপ্ট স্টার্ট-আপ ব্যাটলফিল্ড’-এ সুমাজি ফাইনালিস্ট পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয়। সেখানে এটি Ommidzar Network অ্যাওয়ার্ড পায় যার বিভাগ ভিল “স্টার্ট আপ মোস্ট লাইকলি টু চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড”। গতকাল প্রকাশিত সেরা দশ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় নয় নম্বর অবস্থানে রয়েছেন সুমাইয়া কাজী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।