মুক্ত মন....সারাক্ষণ
.... গেট খুলে রাস্তায় বের হতেই আচমকা ধুলো-বালি সমেত ঘূর্ণি-বাতাসের ঝাঁপটা এসে লাগল নাকে-মুখে।
চোখ দুটো ভীষণভাবে জ্বালা করে উঠল।
এক চোখ বুজে আরেক চোখের এক-চতুর্থাংশ খোলা রেখে হাঁটতে লাগলাম।
দাঁত দাঁত পড়তেই বালু কিচ কিচ করে উঠছে।
জিহ্বায় অদ্ভুত স্বাদ পেলাম, বালুর স্বাদ।
খানিক সামনে এগুতেই কিছু একটার সাথে হোচট খেয়ে সদ্য কেনা জুতা জোড়ার একটি পাটি ছিড়ে গেল।
যেখানে দু'চোখ খোলা রেখে পথ চলতেই হর হামেশা হোচট খেতে হয়, সেখানে এক চোখের এক-চতুর্থাংশ খোলা রেখে পথ চললে একপাটি জুতা কেন, পুরো পা-ই তো ছিড়ে যাবার কথা !
বহু কষ্টে খোড়াতে খোড়াতে রাস্তার পাশে অবস্থতি শাহজান মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালাম। আগে চোখ দুটো ধোয়া দরকার।
আবছা দৃষ্টিতে দোকানের সামনে রাখা পানিভর্তি বালতি হতে দু'হাতে চোখে-মুখে আচ্ছা মতো পানি ছিটিয়ে দিলাম।
"আরে করেন কি, করেন কি?" বলে চেঁচিয়ে উঠলেন শাহজান মিয়া।
ততক্ষণে চোখ-মুখ ধোয়া শেষ আমার।
চোখ মেলে দেখি, শাহজান মিয়ার কাপ ধোয়া নোংরা পানি এসে বালতিতে জমা হচ্ছে।
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ালাম।
চোখ-মুখ আঠা আঠা লাগছে। ঠোঁটে মিষ্টি স্বাদ পেলাম।
কাপ ধোয়া পানি বলে কথা!
নরম সোনালি রোদে ঝলমল করছে চারদিক।
"ভাইজানের কোনো সমস্যা?" জিজ্ঞেস করলেন শাহজান মিয়া।
আমি হাসলাম। ছোট্ট করে বললাম,"না। "
...হাঁটতে শুরু করলাম।
মুচির দোকানে যেতে হবে।
ছেড়া জুতা সম্বলিত পা-খানা টেনে টেনে হাঁটছি আর ভাবছি, বসন্তের প্রথম দিনটির সাথে ভালোই মোলাকাত হলো আমার!
...................................................
আমার হৃদয়-এক পুরুষহরিণি-
পৃথিবীর সব হিংসা ভুলে গিয়ে
চিতার চোখের ভয়-চমকের কথা সব পিছু ফেলে রেখে
তোমাকে কি চাই নাই ধরা দিতে?
আমার বুকের প্রেম ঐ মৃত মৃগদের মতো
যখন ধুলায় রক্তে মিশে গেছে
এই হরিণীর মতো তুমি বেঁচেছিলে নাকি
জীবনের বিম্সয়ের রাতে
কোনো এক বসন্তের রাতে?
-জীবনান্দ দাশ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।