মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন র্যাবের ভক্ত যারা তাদের কাছে এই লেখাটি হয়তো ভাল লাগবে না। এটা সম্পুর্ণই র্যাব সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমি এখন পর্যন্ত একটা র্যাবকেও হাসতে দেখিনি। এখানে হাসা বলতে আমি হো হো করে হাসার কথা বলছি না। র্যাবেরা যখন নিজেদের মধ্যে কথা বলে তখনও ঘুনাক্ষরের জন্যও মুচকি হাসে না।
হয়ত পেশাগতভাবে তাদের ভাবগাম্ভীর্য ধরে রাখাটা জরুরী তবুও আমার কাছে অস্বাভাবিক ঠেকে। আমার মনে হয়, একজন মানুষের হাসিতেই তার মানবিকতার পরিচয় যথাযথভাবে ফুটে ওঠে। কিন্তু শুধুমাত্র হাসে না বলেই সমগ্র র্যাব জাতিকে আমি অমানুষ আখ্যা দিয়ে ছেলেমানুষের পরিচয় দেব না। হাজার হোক, শত শত অপরাধের মূলোৎপাটনের জন্যে র্যাবের ভূমিকাকে তো আর আমরা খাটো করে দেখতে পারি না! তা হোকনা কোন নিরীহ মানুষ সেই অপরাধ অভিজানের বলির পাঁঠা। একটা দুইটা লিমনের পা কাটা পড়ুক, দেশের বৃহত্তর স্বার্থের কাছে তো তা কিছুই নয়! মানবতার লঙ্ঘন করে হলেও দেশ শত্রু মুক্ত হোক, এটাই তো সবাই চায়! জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ তাঁর বই 'হলুদ হিমু কালো র্যাব' এ র্যাবকে নিয়ে বিদ্রূপ করলেও এতে করে লেখকের মানবাধিকারের উপর সমর্থনই ফুটে ওঠে।
যেকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যখন মাত্রাতিরিক্ত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠে তক্ষনই হয় মানবতার লঙ্ঘন। কোন অপরাধী ক্রসফায়ারের যোগ্য আর কোন অপরাধী ক্ষমার যোগ্য এর বিচার করার দায়িত্ব র্যাবকে কে দিয়েছে? কেউ কী গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবে যেসব অপরাধী র্যাবের তথাকথিত ক্রসফ্রায়ারে মারা গিয়েছে তারা সকলেই মৃত্যুদন্ডের যোগ্য? একজন নিরপরাধ ব্যক্তিও যদি সেখানে মারা যায় তাহলে কি তা মানবতার মৃত্যু হবে না? অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে যখন দেশে সেনাবাহিনী নামান হল তখন তাদের হাতে বেশকিছু মানুষ রনস্যজনকভাবে হার্ট এটাকে মারা যায়। সেসব কোন মৃত্যুরই বিচার হয় নি। ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের সবাইকে বিচার কার্য থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে র্যাবের স্বেচ্ছাচারিতার বিচার হয় না।
নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার করেও তারা পার পেয়ে যায়।
ভারতের মত বৃহৎ রাষ্ট্রে যখন পুলিসরাই বড় বড় সব অপরাধের অপরাধিদেরকে ধরতে তৎপর সেখানে এদেশে পুলিশবাহিনীকে শক্তিশালী না করে র্যাবের মত স্বেচ্ছাচারী বাহিনী কেন নামানো হল? ভারতেও তো র্যাবের সমগোত্রীয় র্যাফ (র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স) আছে কিন্তু তাদেরকে তো যত্র তত্র অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা হয় না। এই র্যাব নির্ভরতা বন্ধ না করলে সন্ত্রাস কতটা কমবে জানি না তবে মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়বে আর মানবিকতা ভূলুন্ঠিত হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।