অনেক কিছু প্রদর্শনীর কথাই আমরা জানি। কিন্তু প্রেম বা মধুর সম্পর্কও যে একসময় প্রদর্শনীতে পরিণত হবে, তা হয়তো অনেকেরই ভাবনার বাইরে। আর সেই ভাবনার বাইরের বিষয়টিকে তৃতীয়বারের মতো সামনে তুলে ধরল চীন। গত শনিবার দেশটির সাংহাই শহরের একটি শপিং কমপ্লেক্সের হলরুমে প্রেম প্রদর্শনীতে অংশ নিতে ভিড় জমিয়েছিলেন অসংখ্য তরুণ-তরুণী। এই প্রেমের জন্য সময় মাত্র আট মিনিট।
আট মিনিটের জন্য একজন তরুণ একজন অপরিচিত তরুণীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন। তাতে অনেকের প্রেম হলেও হয়ে যেতে পারে।
চীনের সবচেয়ে বড় ও বিখ্যাত ঘটকের ওয়েবসাইট ঝেনাই ইনকরপোরেট দুই বছর ধরেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে। এবারের শিরোনাম ‘তৃতীয় বার্ষিক প্রেম ও বিয়ে প্রদর্শনী’।
সিএনএনের এক খবরে জানা গেছে, এই প্রদর্শনীতে অংশ নিতে শুরুতে ১৮ হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণী নাম নিবন্ধন করেছিলেন।
উপস্থিতও হয়েছিলেন অনেকেই। মাত্র আট মিনিটের এই প্রদর্শনী উপলক্ষে বিলবোর্ড ও পোস্টারে সাজানো হয়েছিল শহরে। প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া অনেকেরই আগে থেকে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না, এমনকি তাঁরা কখনো বিপরীত লিঙ্গের কারও সঙ্গে একান্তে সাক্ষাত্ও করেননি।
একসময় ঘোষণা করা হলো সেই কাঙ্ক্ষিত আট মিনিটের জন্য। এ সময় তরুণেরা তাঁদের পাশের তরুণীদের পাশে গিয়ে বসলেন।
তারপর একে অপরের সঙ্গে নানা কথা বলা শুরু করলেন।
প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া কানাডা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ২০ বছর বয়সী ইজিন বাই বলেন, তাঁর কোনো প্রেমিকা ছিল না। পড়াশোনার অজুহাতে চীনের অনেক তরুণ-তরুণী প্রেমে উত্সাহী হন না। মেয়েরা ছেলেদের কাছে কী চায়, তা জানতেই তিনি এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে আমি অনেক কিছুই জানতে পেরেছি।
মা-বাবার ওপর ছেলেদের নির্ভর করাটা যে মেয়েরা পছন্দ করে না, এখানে এসে এটা জানা হলো। ’
ঝেনাই ইনকরপোরেটের প্রতিষ্ঠাতা সং লি বলেন, ১৯৭৯ সালে চীনে এক সন্তাননীতি চালু করে সরকার। এর ফলে তরুণ-তরুণীদের সামাজিক দক্ষতাটা অনেক কম। তিনি বলেন, ‘১৯৮০ সালের পর যাঁদের জন্ম, তাঁদের কোনো ভাই-বোন নেই। তাই তাঁরা এমন পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন, যেখানে বিপরীত লিঙ্গের কারও সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ মেলেনি।
এতে প্রেম বা ভালোবাসার সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁদের ভেতরে অনেক কুণ্ঠাবোধ কাজ করে। চীনে এখন ভালো সঙ্গী পাওয়া ভালো চাকরি পাওয়ার মতোই কঠিন। এ কারণে প্রেম ও বিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ’
প্রদর্শনীতে আসা তরুণী মে বলেন, ‘আমি মা-বাবার মতামতকে সম্মান করি। যদি মা-বাবা বলেন যে ওই ছেলে ভালো না, তাহলে আমি তাঁর সঙ্গে একান্তে দেখা করব না।
কিন্তু অন্য কাউকে দেখিয়ে মা-বাবা যদি বলেন যে, এই ছেলেটা ভালো, তাহলে আমি তাঁর সঙ্গে মেশার চেষ্টা করে দেখব। ’
অনেকেই আবার প্রেমের সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে যে সব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হন, তার সমাধান জানতে এসেছেন এই প্রদর্শনীতে। বিশেষত, চীনের নারীরা বিয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের একটা চাপ অনুভব করেন। এ থেকে কীভাবে রেহাই পাওয়া যায়, তা জানার আগ্রহ থেকেই প্রদর্শনীতে নারীর উপস্থিতিটাও ছিল অনেক। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।