দুই বছর আগের ১৬ মার্চ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দর্শকরা দেখছিলেন একটি ক্রিকেটীয় চমৎকার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দুই নয়ন ভরে সংগ্রহ করছিলেন ইতিহাসের তাজা রসদ। একজন সম্রাটের রাজ্যাভিষেক দেখছিলেন তারা। যে সিংহাসন চিরস্থায়ী! শচীন টেন্ডুলকার।
কিংবদন্তি শব্দও তার শ্রেষ্ঠত্বকে মাঝেমধ্যে ধারণ করতে পারে না। এই কিংবদন্তি ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শততম সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই। বাংলাদেশি বোলারদের সামনে পাহাড়সম দৃঢ়তা নিয়েই ক্যারিয়ারের শততম সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। শচীনের ১১৪ রানের ইনিংসের পর কেবল ভারতীয় দর্শকরাই নন, অভিনন্দন জানিয়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিক। পুরো মিরপুর স্টেডিয়াম মুশফিকদের অভিনন্দন জানানোর সময় একাত্দতা প্রকাশ করেছিল সেদিন।
আজ থেকে শুরু হওয়া এশিয়া কাপ এবং এর দর্শকরা শচীন টেন্ডুলকারকে খুব মিস করবেন।
২০১২ সালের ১৬ মার্চ ভিন্ন একটি কারণেও সুখস্মৃতি হয়ে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের মনে। সেদিন ছিল বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ২১ রানে হেরে যাওয়ার পর ফাইনাল খেলতে বাংলাদেশের সামনে শর্ত ছিল ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি ম্যাচ জয় করা। ১৬ মার্চ এশিয়া কাপে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ।
তার ওপর শচীন টেন্ডুলকারের ম্যাজিক্যাল সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে ম্যাচটা জয় করা ছিল কঠিন। তবে দৃঢ়তা যদি সঙ্গে থাকে, আত্দবিশ্বাস যদি আকাশচুম্বী হয় তবে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। মুশফিকরা তাই করেছিলেন সেদিন। শচীন টেন্ডুলকারের শততম সেঞ্চুরির দিনেও ভারতকে কাঁদতে হয়েছিল বাংলাদেশের কাছে পরাজয়ের বেদনায়! ভারতের ছুড়ে দেওয়া ২৯০ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ পাড়ি দিয়েছিল ইনিংসের চার বল হাতে রেখেই!
এশিয়া কাপে শচীনের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
১৯৯০-৯১ এশিয়া কাপ থেকে শুরু। মোট ৮ বার তিনি এই টুর্নামেন্টে ভক্তদের সামনে হাজির হয়েছেন। এর মধ্যে শিরোপা জয় করেছেন তিনবার। জয়সুরিয়ার পর শচীনই এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহী। সনাথ জয়সুরিয়া ২৫ ম্যাচে ১২২০ রান করেছেন।
শচীন টেন্ডুলকার এশিয়া কাপে ২৩ ম্যাচে করেছেন ৯৭১ রান। দুটি সেঞ্চুরি ছাড়াও অর্ধশতক রয়েছে ৭টি। সেঞ্চুরির দিক থেকে অবশ্য জয়সুরিয়া অনেক এগিয়ে। লঙ্কান এই তারকা ৬টি সেঞ্চুরি করেছেন। কেবল ব্যাটিংই নয়, বোলিংয়েও সফল ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার।
এশিয়া কাপে ১৭টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এমনকি পাকিস্তানি গ্রেট ওয়াসিম আকরাম এবং আবদুল রাজ্জাকের মতো বোলাররাও তার পেছনে এশিয়া কাপের মঞ্চে (১৬টি করে উইকেট শিকার)! এমন অলরাউন্ডার শচীনকে তো ভক্তরা খুব মিস করবেনই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।