আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি
//====হাসিনা ভাবীর প্রবাসী স্বামীটা মরে গেল, আর কোন দিন উচ্চস্বরে স্বামীর সাথে কথা বলতে পারবে না====//
কাল রাতে হঠাৎ করে আমার মোবাইলে বউয়ের ফোন, "জারিফার আব্বু, পাশের বাসার হাসিনা ভাবীর হাজবেন্ড দুদিন আগে সৌদী আরবে মারা গেছে। " এই সংবাদ শুনে কাল থেকে মনটা খারাপ হয়ে আছে। শুক্রবার ছুটির দিনে নেটের বাইরে ছিলাম বলে এই দুঃসংবাদটি শেয়ার করতে পারিনি।
হাসিনা ভাবী আমাদের পাশের বাসার মালিকের বউ। দুই কন্যা সন্তানের মা।
ভাবীর হাজবেন্ড সৌদী আরবে থাকে। ভাবী প্রতিদিন সকালে বেলখনিতে দাড়িয়ে হাজবেন্ড এর সাথে উচ্চস্বরে কথা বলতেন। ভাবীর কথা শুনে আমরা হাসাহাসি করতাম। এখন আর উচ্চস্বরে ভাবী তার হাজবেন্ড এর সাথে কথা বলতে পারবে না। ভাবীর হাজবেন্ড না ফেরার দেশে চলে গেছে।
দুদিন আগে নাকি ভাইটি অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। ডাক্তার ওনার কথা ভাল করে না শুনে একটি ইনজেকশন দিয়েছিলেন। ইনজেকশন দেবার পর ওনার শরীর ফুলে যায়। তারপর হঠাৎ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
ভাইটি বহু বছর প্রবাসে থেকে অর্থ উপার্জন করে তিন তলার ছোট একটি বিল্ডিং তৈরী করেন।
কয়েক বছর পর পর দেশে যেতেন। মাঝে মধ্যে আমার সাথেও দেখা হতো। কথা হতো। ওনার অকাল মৃত্যুতে হাসিনা ভাবীর পরিবারে এখন শোকের মাতম চলছে।
লাশটি দেশে পৌছতে আরো অনেক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
লাশ দেশে না আসা পর্যন্ত, একটু না দেখা পর্যন্ত, কবর না দেয়া পর্যন্ত কারো কান্না থামবে না। কেউ তাদেরকে শান্তনা দিতে পারবেনা। অবুঝ কন্যা দুটির কান্নায় হয়ত সবাই কাঁদবে।
ওনার মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমার ও খারাপ লাগছে। কারণ আমি যে প্রবাসী।
আমার মত লক্ষ লক্ষ প্রবাসী আজ ঘর ছাড়া। বছরের পর বছর আমরা দেশের বাইরে থাকি। প্রায় এক কোটিরও বেশী প্রবাসীর কেউ না কেউ প্রতিদিন লাশ হয়ে দেশে ফিরছে।
হে আল্লাহ! এই দুর প্রবাসে আমাদেরকে সুস্থ রাখিও। আমিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।