৪৩ জেলার ৯১ উপজেলায় ভোটের আগের দিন শনিবার নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেছেন, সহিংসতায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ব্যালট বক্স ছিনতাই করলে গুলি করা হবে।
চতুর্থ পর্বে ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিইসির ই-মেইল পেয়ে নির্বাচন কমিশনাররা বৈঠক করার পর সশস্ত্র বাহিনীকে চিঠি পাঠিয়ে সহিংসতা ঠেকাতে সক্রিয় থাকতেও বলেছে ইসি।
রোববার ৯৩ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও আদালতের নির্দেশে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর ও শেরপুর সদর উপজেলার নির্বাচন স্থগিত হয়েছে।
ফলে এদিন ৯১ উপজেলার ৫ হাজার ৮৮৪টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
এসব উপজেলায় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৯ হাজার ২৭৮ জন ভোটার ১ হাজার ১৮৬ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে তাদের জনপ্রতিনিধি বেছে নেব্নে।
৪৮৭টি উপজেলার মধ্যে তিন পর্বে প্রায় ৩০০টিতে বিজয়ীর হিসেবে এগিয়ে থাকা বিএনপি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করে আসছে। ইসির বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে তাদের।
ইসি সচিবালয়ে কমিশনার আবদুল মোবারক সাংবাদিকদের বলেন, সহিংসতা রোধে সব বাহিনীকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দলীয়ভাবে বা কোনোভাবে প্রভাব না খাটানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “বিনীত অনুরোধের পাশাপাশি দৃঢ় অবস্থান আমাদের।
“কেউ প্রভাব খাটাবেন না। যে কালো হাত বাড়াবে, সে হাত গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। কোনো শৈথিল্য প্রদর্শন করা হবে না। ”
সহিংসতা করলে ভোটের পরও কাউকে ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “বিচার চলবে, মামলা হবে। ”
তৃতীয় পর্বের ভোটে ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের প্রেক্ষাপটে মোবারক বলেন, “ভোটের বাক্স ছিনতাই হলে গুলি ব্যবহার করা হবে।
”
আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীসহ সবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান কমিশনার মোবারক।
তিনি বলেন, সিআরপিসির, ১৩১ ধারা মোতাবেক সেনাবাহিনীকে এ নির্বাচনে দৃষ্টির মধ্যে কোনো সহিংসতা ঘটলে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
“এ আইনটি ১৮৯৮ সাল থেকেই ছিল। আমার এবার তা সেনাবাহিনাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি দৃশ্যমান হতে গণমাধ্যম বারবার বলে আসছে, তাই এবার আমরা তাদের দৃশ্যমান হতে বলেছি।
”
নির্দলীয় স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রভাব প্রকাশ হওয়ায় সহিংসতা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সিইসির অনুপস্থিতিতে নির্বাচন তদারককারী আবদুল মোবারক।
“দলগুলোর কেন্দ্র থেকে জয় পেতে মরিয়া হতে উৎসাহ দিচ্ছে। এ মরিয়া হয়ে উঠতে গিয়ে সহিংসতা হচ্ছে। ”
তাই সহিংসতা প্রতিরোধে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোহিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন করতে আইন সংশোধন হলে তা হতে পারে, বলেন আবদুল মোবারক।
“তারা যদি দলভিত্তিক উপজেলা নির্বাচন চায় সেভাবেই আইনে তা লিখলেই হয়। তারা আইনে লিখবেন না, অথচ সে মেনে চলবেন না, তা হয় না। ”
রোববার চতুর্থ পবে ভোটগ্রহণের পর আগামী ৩১ মার্চ পঞ্চম পর্বে ৭৪ উপজেলায় ভোট হবে। বাকিগুলোতে ভোট হবে আগামী মে মাসে।
চতুর্থ ধাপের ভোট তথ্য
চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান- ৯১ উপজেলায় তিন পদে লড়াই করছেন এক হাজার ১৮৬ জন প্রার্থী।
চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৪৭ জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫১৯ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১১ জন।
এসব উপজেলায় মোট ভোটার ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৯ হাজার ২৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৯ লাখ ৭ হাজার ৯৫৬ জন, নারী ৬৯ লাখ ৫১ হাজার ৩২২ জন।
ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৮৮৪টি, ভোটকক্ষ ৩৯ হাজার ৫১৬টি।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ৫ হাজার ৮৮৪ জন।
সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রতি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে মোট ৩৯ হাজার ৫১৬ জন। পোলিং কর্মকর্তার সংখ্যা ৭৯ হাজার ৩২ জন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।