খুলনা মহানগরীর উন্নয়নে সাবেক মেয়রের সময় বড় বড় যেসব উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল তাতে অনেক জট ছিল। দায়িত্ব পালনের গত ছয় মাসে সেসব জট দূর করে উন্নয়ন কাজে গতি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এখন অবিরাম কাজ চলছে। সড়ক সংস্কার ও পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থার উন্নয়নের এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আমূল পাল্টে যাবে খুলনা মহানগরী। এ ছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ছোট বড় অনেক নতুন প্রকল্পের পেপারস ওয়ার্ক চলছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা সিটি করপোরেশনের নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিটি মেয়র, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি এসব কথা বলেন। মেয়র মনি বলেন, নগরীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা ও বেহাল সড়কগুলো। এ কাজে এর আগে যে প্রকল্পগুলোর কাজ চলছিল তা মাঝপথে থমকে দাঁড়ায়। দায়িত্ব নিয়ে ওইসব কাজ গতিশীল করেছি। ইতোমধ্যে ৭৪ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে।
২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজও শেষের পথে। পয়ঃনিষ্কাশনে ড্রেনেজব্যবস্থার উন্নয়ন ও ২২টি খাল খনন করে প্রবাহ ফিরিয়ে আনা এবং ছোট বড় অসংখ্য সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে মতিয়াখালী ও ক্ষেত্রখালী খালের মাটি কাটার কাজ চলছে। এ কাজ করতে গিয়ে নগরবাসীর দারুণ সহায়তা পেয়েছি। এমনকি অনেকে ব্যক্তিগত মূল্যবান জমি ছেড়ে দিয়ে উন্নয়ন কাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
সরকারি দলের অনেক নেতা স্বেচ্ছায় সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। হাট-বাজার, কবরস্থান, শ্মশানের উন্নয়নে কাজ চলছে। জার্মানি সরকারের অর্থ সহায়তায় শহররক্ষা বাঁধ, নদীর ঘাট, বাসস্ট্যান্ড ও সংযোগ সড়কের কাজও চলছে। মেয়র মনি বলেন, কাজের গুণগতমান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য নিয়মিত তদারকি করছি। নিয়মের বাইরে কোনো কিছুই করা হচ্ছে না।
নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নগরময় ঘুরে ঘুরে নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের সমস্যাগুলো বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গরম পড়লেই মশার যন্ত্রণা বেড়ে যায়। এ কারণে গত ছয় মাসে নগরীর ড্রেনগুলোর পলি-আবর্জনা সরিয়ে ফেলার কাজ শেষের পথে। এতে সুবিধা হলো, ড্রেনে পানির প্রবাহ গতিশীল থাকলে মশার বংশবিস্তার তুলনামূলক অনেক কম হয়।
এ ছাড়া মশক নিধনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বোপরি সিটি করপোরেশনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। করপোরেশনে সব দল-মতের লোকই কর্মরত। তারা সবাই করপোরেশনের লোক। করপোরেশনের নিয়মের মধ্যে কাজ করলেই হলো।
চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে খুলনার পাঁচ উপজেলায় বিএনপির পরাজয়ের বিষয়ে মনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনগুলোয় আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক পরাজয়ে দলটির স্থানীয় নেতারা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। এ কারণে যে কোনো মূল্যে বিজয় ছিনিয়ে নিতে তারা মরিয়া হয়ে ওঠেন। ফলে ২৩ মার্চ খুলনার পাঁচ উপজেলায় নজিরবিহীন পেশিশক্তির জোরে ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই করে বিএনপির নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সাধারণ মানুষের ভোটে আওয়ামী লীগ জয় পায়নি। উপজেলাগুলোর সাধারণ মানুষ জোর গলায় বলছে তারা ভোট কেন্দ্রে যাননি, ভোটও দেননি।
কিন্তু তাদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আগামীতে না হয়। তা না হলে সাধারণ মানুষের ভোটের ওপর যে আস্থা ছিল তা হারিয়ে যাবে, যা গণতন্ত্র ও দেশের জন্য অমঙ্গল ডেকে আনবে। মেয়র মনি বলেন, খুলনা বিএনপি বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক শক্তিশালী। দলের মধ্যে কোনো কোন্দল নেই।
উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের পুলিশ প্রশাসন বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় আসামি করে হয়রানি করছে। বাড়িঘরে তল্লাশির নামে পরিবারকে হেনস্তা করেছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা করে অনেককে আহত করেন। তার পরও বিএনপির দলীয় শক্তি একটুও দমে যায়নি, বরং আরও বেড়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।