বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষককে মারধর করা শিক্ষার্থী ছাত্রলীগকর্মী মো. ইসরাফিল হোসেন ওরফে মীমের (১৭) ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিজের মেসে কক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও ইসরাফিলের সহপাঠীরা বলেছেন, ইসরাফিল তাঁর শিক্ষককে মারধর করার পর সৃষ্ট পরিস্থিতির চাপ নিতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন।
ইসরাফিলের বাড়ি ভোলার সদর উপজেলার কালীবাড়ি সড়কে।
গত রোববার সকালে ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের ইন্সট্রাক্টর মো. শফিউল ইসলামের ক্লাসে মো. ইসরাফিল হোসেন অনুমতি ছাড়া ঢুকে এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করেন।
এসময় ওই শিক্ষক তাতে বাঁধা দেন। ক্লাস শেষে ইসরাফিলসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী শফিউল ইসলামকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুসি মারেন। এ সময় অন্য শিক্ষকেরা শফিউল ইসলামকে উদ্ধার করেন। এরপর ইসরাফিলকে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যান শিক্ষকেরা। তাঁকে বহিষ্কার এবং পুলিশে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যে ছাত্রলীগের কর্মীদের আন্দোলনের মুখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। এরই প্রতিবাদে শিক্ষকেরা আজ সকালে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশ জানায়, আজ বিকেল পাঁচটার দিকে ইসরাফিল হোসেন নগরের পলিটেকনিক সড়কে তাঁর ভাড়া মেসের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে চাদর পেঁচিয়ে ফাঁস দেন। সহপাঠীরা টের পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিত্সক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, ছাত্রলীগের কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনায় বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা আজ সন্ধ্যায় হাসপাতাল এলাকায় জড়ো হন। শিক্ষক এবং যারা ইসরাফিল হোসেনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন তাঁদের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তাঁরা হাসপাতালের সামনের সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে যানবাহন ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষককে মারধর করা শিক্ষার্থী ইসরাফিল তার কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। তবে হাসপাতাল এবং কলেজ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ’
এ ব্যাপারে শিক্ষকদের মানববন্ধনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কলেজ ছাত্রলীগ কর্মী মো. সাকিব খান সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব স্যারদের জন্য আমাদের ভাই মারা গেছে তাদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত পলিটেকনিকের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।
স্যাররা তো শুধু ক্লাস বর্জন করেছে আমরা পুরো একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেব। ’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।