আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডায়েটের ঘোরে

বাঁচার জন্য খাওয়া, নাকি খাওয়ার জন্য বাঁচা? এ নিয়ে অনেক তর্ক হতে পারে। যা-ই হোক, ন্যূনতম পরিমাণ খাবার খেতে হয় বাঁচার জন্য। এর বাইরে খাবারের পরিমাণ বা ক্যালরি নির্ভর করে কর্ম, অবস্থা, পরিবেশ প্রভৃতির ওপর। আর এই বাঁচার জন্য খেতে গিয়ে বেশি খেয়ে বা পর্যাপ্ত ক্যালরি ব্যয় করতে না পারার কারণে যে সমস্যার মুখোমুখি হয় তা হলো অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি যা কারোরই কাম্য নয়। এই ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যালান্স ডায়েটের কোনো বিকল্প নেই।

কিন্তু অনেকেই মনে করেন ডায়েট মানে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেওয়া বা কোনো নির্দিষ্ট খাবার এড়িয়ে চলা। এটা ঠিক নয়।
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার জানান, ওজন বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত থাকে সাধারণত মেয়েরা। অনেকে ডায়েটের প্রতি এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েন যে, না খেয়ে থাকেন। খেয়েই ক্যালরি মাপতে শুরু করে।

এতে শরীরে নানা রকমের সমস্যা ও রোগ দেখা দিতে পারে।
ডায়েটের ঘোরে থাকলে কী সমস্যা হতে পারে?

ব্যালান্স ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা ভালো। কিন্তু কমাতে গিয়ে কেউ এই ঘোরে পড়লে তা শরীরের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা সুস্থ শরীরের জন্য কাম্য নয়। কেউ ওজন কমাতে গিয়ে খাবার বন্ধ করে দেন তাঁদের শরীরে বিভিন্ন জৈব উপাদানের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। নির্দিষ্ট কোনো খাবার এড়িয়ে গেলে ওই খাবারের উপাদান থেকে বঞ্চিত হয় শরীর।

খুব অল্প খেতে খেতে এমন হতে পারে যে একটু বেশি খাওয়া হলে পেটব্যথা, বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি হতে পারে।
আবার অনেকেই আছেন যাঁরা কোনো অনুষ্ঠানে একটু বেশি খেয়ে ফেললেই বাসায় এসে নিজে নিজে বমি করে খাবার বের করে ফেলেন যা একেবারেই ঠিক নয়। এতে শরীরে নানা ধরনের জৈব উপাদানের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এই ঘাটতি থেকে অনেক জটিল সমস্যাও হতে পারে। অনেক দিন এভাবে পর্যাপ্ত খাবার না খেলে শরীরের চর্বির পরিমাণ কমে গিয়ে মাংসের প্রোটিন ভেঙে শারীরিক কাঠামো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

দীর্ঘদিন এভাবে খাবার বন্ধ বা খাবার এড়িয়ে গেলে অস্টিওপোরেসিসের মতো জটিল রোগ অল্প বয়স থেকেই শুরু হতে পারে। এ ছাড়া শারীরিক দুর্বলতা, ত্বক রুক্ষ হয়ে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়া, ঘুম ঘুম ভাব লাগা ইত্যাদি হতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন আপনি এই ডায়েটের ঘোরে আছেন?
 যা খান তাতেই আপনার ওজন বেড়ে যাবে বলে মনে হলে।
 সারা দিন এই চিন্তা করতে গিয়ে আপনার দৈনন্দিন কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটলে।
 সারা দিনে ওজন একবারের বেশি মাপলে।


 একবেলা একটু বেশি খাবার খেলে সেটা মেনে নিতে না পারলে বা এ জন্য নিজের ওপর রাগ হলে।
 অন্য কারও ওজন কমানোর গল্প শুনে মন খারাপ করে খাবার বন্ধ করে দিলে।
 খাবার খাওয়ার সময় ক্যালরি হিসাব করার অভ্যাস গড়ে উঠলে।
 রাতে ঘুম ভাঙার পর ঘুম বাদ দিয়ে দিনের বেলা একটু বেশি খাওয়া হয়েছিল সেটা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লে।
 একটু বেশি খাওয়া হলে তা নিজে নিজে বমি করে বের করে দিলে।


 ভালো খাবার ও খারাপ খাবারের আলাদা লিস্ট করে ফেললে।
ডায়েট করা ভালো কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে যাতে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা যাতে দেখা না দেয় সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।
গ্রন্থনা: মো. শরিফুল ইসলাম

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.