বিনিয়োগে উল্টো পথে হাঁটছে দেশের শেয়ারবাজার। ডিমিউচুয়ালাইজ শেয়ারবাজারে সক্রিয় নেই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। ২০০৯ সালে ধসের আগে যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ এখন সেখানে মাত্র ৯ শতাংশ। অথচ এসব প্রতিষ্ঠান মার্জিন ঋণ দিয়ে বিনিয়োগ করেছে ৪৫ শতাংশ। শেয়ারবাজারে এখন ব্যক্তি বিনিয়োগ রয়েছে ৪২ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছাড়া স্থিতিশীল বাজার সৃষ্টি করা যাবে না। কি কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় নেই তাও খতিয়ে দেখা উচিত। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারবাজারে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ রয়েছে মাত্র দুই হাজার কোটি টাকা। ২০০৯ সালের আগে এসব প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ছিল প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করে।
এখন নির্দেশনা অনুযায়ী মোট দায়ের ১০ শতাংশ বিনিয়োগের সুযোগ থাকলেও কোনো ব্যাংকের দুই থেকে তিন শতাংশের বেশি বিনিয়োগ নেই। কোনো কোনো ব্যাংকের শেয়ারবাজারে কোনো বিনিয়োগই নেই। এই তালিকায় রয়েছে ইসলামী ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি। এদিকে ডিএসইর ডিলার হাউসগুলো বিনিয়োগের অন্যতম স্তম্ভ হলেও তারা সক্রিয় নেই। ডিএসইর প্রায় সাড়ে তিনশ হাউসের বিনিয়োগ রয়েছে মাত্র ৩০০ কোটি টাকা।
এসব প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ দিয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। ক্ষুদ্র লগি্নকারীদের বিনিয়োগও রয়েছে প্রায় সমপরিমাণ টাকা। অর্থাৎ বাজারে কোনো ধরনের ঝুঁকিতে নেই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবিও শেয়ার দর বাড়লে বিনিয়োগে সক্রিয় হয়। নইলে কোনো লেনদেন থাকে না।
এদিকে গত মার্চ মাসে ডিএসইতে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। আগের মাসে যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১২১ কোটি টাকা। মার্চের শেষে বিদেশি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে মাত্র ৯৬ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে ডিএসইর সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান বলেন, বাজার চাঙ্গা থাকলে মুনাফা তুলতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারে থাকেন। মন্দা অবস্থায় থাকলে কেউ সক্রিয় থাকেন না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ অমান্য করে ২০০৯ সালে যারা ঝাঁপিয়ে পড়ে বিনিয়োগ করেছিল এখন তারা কেন সক্রিয় নেই তা খতিয়ে দেখা উচিত। স্থিতিশীল বাজার করতে হলে মোট বিনিয়োগে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ থাকতে হবে। সেখানে তাদের আছে মাত্র ৯ শতাংশ।
অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে প্রতিষ্ঠানকেই সক্রিয় থাকতে হবে। কেন ব্যাংকগুলো সক্রিয় নেই তা খোঁজ নেওয়া উচিত।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিবেদন দাখিল বাধ্যতামূলক করায় বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। বিদেশি বিনিয়োগের তথ্য চাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা অনেকটাই নিরুৎসাহিত হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।