কান পাকা মজিদকে অনেকেরই মনে পড়ে। মনে পড়বে একটি টিভি সিরিয়ালের কারণে। রোগটি সম্পর্কে সাধারণ ধারণাটি মোটেও ঠুনকো কিছু নয়। কান থেকে পানি-পুঁজ পড়ার অভিযোগ থাকে। আর থাকে কানে কম শোনার অভিযোগ।
রোগটি চলতে থাকে মাস-বছর ধরে। এভাবে গোঁফ দেখে বিড়াল চেনার মতো কান পাকা রোগ চেনা যায়। কান পাকা রোগ হচ্ছে মধ্যকর্ণের প্রদাহ। কানের ডাক্তাররা বলবেন, তারা রোগটিকে চেনেন কানের পর্দার অবস্থা দেখে। কান পাকলে কানের পর্দায় একটা স্থায়ী অসামঞ্জস্য তৈরি হয়, খুব সম্ভবত ইতোপূর্বে সংঘটিত মধ্যকর্ণের আকস্মিক প্রদাহের কারণে।
অথবা মধ্যকর্ণের ঋণাত্দক বায়ুচাপের কারণে। অথবা সেখানে পানি জমে থাকার কারণে। তারা এ রোগকে ডাকেন সিওএম অর্থাৎ ক্রনিক অটাইটিস মিডিয়া। জনসমাজে রোগটির ব্যাপকতা কেমন? সক্রিয় এবং অপেক্ষাকৃত নিরুপদ্রব এ দুই ধরনের মিলিয়ে ৪.১ শতাংশ লোক এ রোগে ভোগে। এর মধ্যে ৩.১ শতাংশ রোগীর দুই কানে এবং অন্যদের এক কানে রোগটি দেখা যায়।
বাংলাদেশে এই হার ৫-৬ শতাংশ। ১৮ থেকে ৪০ বছরের তুলনায় ৪১ থেকে ৮০ বছর বয়সীদের আক্রান্তের ঝুঁকি দ্বিগুণ। নিম্নশ্রেণীর মানুষের সিওএমের ব্যাপকতা বেশি। কায়িক শ্রমজীবীরা তুলনামূলক বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
সিওএম কাদের হয় : মূলত বংশগত ও জাতিগত কারণে সিওএম হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আলাস্কার আদিবাসীরা বেশি আক্রান্ত হয়। আবার একই দেশের আদিবাসীদের বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে তারতম্যও দেখা যায়। উন্নয়নশীল দেশে রোগটির হার বেশি হলেও, একেক দেশে একেক রকম। এ রোগের জন্য পরিবেশ যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। শিশুর মা ধূমপায়ী কি না, সে ডে-কেয়ার সেন্টারে বড় হচ্ছে কি না, তার সাধারণ স্বাস্থ্য কী রকম- এগুলোও সিওএমের নিয়ামক।
ইউস্টাশিয়ান নালির সমস্যা আছে বা তালুকাটা রোগীদেরও সিওএম হওয়ার হার বেশি।
কোন জীবাণু দায়ী : প্রোটিয়াস, স্ট্যাফাইলোকক্কাস, সিউডোমনাস, কোলিফর্ম ব্যাসিলাই, কোরিন ব্যাকটেরিয়াম ডিপথেরি, এসকেরিয়সিয়া কোলাই, স্ট্রেপটোকক্কাস ফিকালিস এ রোগের জন্য দায়ী। ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগার কারণে।
লেখক : নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।