ফেসবুক ব্যাবহারকারিদের ওয়ার্ম ওয়েলকাম জানাচ্ছি। কেমন আছেন? লিখা শুরু করার আগেই বলে নিচ্ছি, কথা গুলো আপনার মাইন্ডে লাগতে পারে দয়া করে মাইন্ড খাইয়েন না। আপনার এবং সবার ভালোর জন্যই বলছি।
উপদেশ দেওয়া আমার অনেক পছন্দের একটা কাজ কিন্তু খুব খারাপ লাগে যখন আমি নিজেই সেই উপদেশ মেনে চলতে পারি না। কিন্তু আমার উপদেশে কেউ একজন যদি ভালো কাজ করে তাহলেই আমি সার্থক।
তবে কেন যেন মনে হয় আরেকজনের ক্ষতি হবে এমন কাজ আমি কমই করি। তাই এই পোস্টের প্রথম উপদেশ হল।
"নিজের কথা সবসময় না ভেবে অন্যের কথাও একটু ভাবা উচিত। "
এই উপদেশটা দেওয়ার কারন হলো, ফেসবুক নিয়ে যেসব কথা আমি এখন বলবো তার বেশির ভাগ কথাই আপনার পছন্দ হবে না যদি আপনি নিজেকে নিয়ে ভাবেন।
ওয়েস্টার্ন দেশ গুলোতে কিছু জিনিষ ফেসবুকে শেয়ার না করার জন্য বলা হয়, যেমনঃ
ঐ দেশগুলোতে চোর, ডাকাতরা অনেক স্মার্ট।
চুরেরাও ফেসবুক ব্যাবহার করে, তাই এই নির্দেশনা। বাংলাদেশি চোর তো ওদের চাইতে আরো বেশি স্মার্ট তাই ভয় নেই! এখন দেখুন আমরা বাঙলিদের কি করা উচিত না।
আমাকে অনেকেই বলছে যে ভাই আমার ফেসবুকে তো ফটো ভেরিফিকেশন চায়। জানতে চেয়েছে কিভাবে বাইপাস করবে এই সমস্যা। ছবিগুলো চিনতে পারলেই আপনি পার পেয়ে যেতেন কিন্তু আপনার বন্ধুরা তা হতে দেয় নি।
ধরুন ফটো ভেরিফিকেশন চাওয়ার পর হয়তো লিস্টে দেওয়া সবগুলো নাম আপনি চেনেন কিন্তু যে ছবিটা দেখাচ্ছে সেটা একটা গাধার ছবি, এখন কি করে বুঝবেন যে আপনার কোন ফ্রেন্ডটা গাধা?
ফটো ট্যাগের আসল উদ্দেশ্য
যারা ট্যাগ করার আসল উদ্দেশ্যটা জানেন তারা আমাকেই গাধা ভাববেন তাই আসুন জেনে নেই ট্যাগ কি। (যারা জানেন তারা আমাকে বলদ বলে বকা দিতে থাকুন ) ধরুন নিচের এই সুন্দর ছবিটি আপনার।
এই ছবিটাতে আপনি আপনার ৪৯ জন ফ্রেন্ডকে ট্যাগ করলেন। আপনার উদ্দেশ্য বেশি লাইক পাওয়া আর সবাইকে জানান দেওয়া যে আপনি দেখতে কতো সুন্দর। আরে ভাই আপনার ছবি সুন্দর হলে এমনিতেই লাইক পাবেন।
আর এতো লাইক দিয়া কি করবেন, খাইবেন না মাথায় দিবেন? আজকাল অটো লাইকের ছড়াছড়ি তাই দরকার হলে অটো লাইক আনবেন, কিন্তু কাউকে না জানিয়ে উল্টা পাল্টা ছবি ট্যাগ করা উচিত না!! এক সময় আমি নিজেও কাজটা করতাম কিন্তু এখন করি না কারন আমি বুঝতে পেরেছি যে ট্যাগ করা মানে হল, একটা ছবিতে যখন একসাথে আপনারা ২ জন বা বেশি ফ্রেন্ড থাকেবন তখন তার চেহারায় ক্লিক করে তার নাম লিখবেন। এভাবে জানিয়ে দেবেন যে এই ছবিতে আমার সাথে আর ২-৩ টা বন্ধু আছে।
গরু, ছাগল, সুন্দর দৃশ্য, ফানি ছবি, এসবে বন্ধুদের ট্যাগ করা ঠিক না :D । দরকার হলে তাদেরকে মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে আমার ছবিটা দেখ আর লাইক দে। পরের বার যদি এই রকম এলোপাতারি ছবি ট্যাগ করেন তাইলে কিন্তু......
কেউ কেউ হয়তো দ্বিমত পূষন করে বলবেন যে ধর্ম প্রচার করে নেকী অর্জন করবেন।
কিন্তু আপনি চিন্তা করে দেখবেন ধর্ম সম্পর্কে যত বেশি আলোচনা করবেন তত ঝামেলা হবে এবং ভুল তথ্য বের হবে। অনেকে না জেনে উল্টা পাল্টা কথা বলে যা নেকী তো দুরের কথা শুধু পাপ দেয়। অনেক রঙের মানুষ আছে পৃথিবীতে এবং তাদের বিশ্বাসও ভিন্ন, তাই নিজের পায়ে কুড়াল মারার আগে একটু চিন্তা করে নেওয়া উচিত।
এখন আসি রাজনীতির কথায়, আমি জানি বাংলাদেশে ভালো রাজনিতিবিদ দরকার। শিক্ষিত সমাজের মানুষরা সবসময় রাজনিতি থেকে দূরে থাকতে চায় কারণ বাংলাদেশের রাজনীতির অবস্তাটা কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।
ফেসবুকে পসিটিভ রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করলে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু পক্ষপাতী হয়ে সত্য কথাটাও না বলার উপদেশ দেবো আমি। কারণ এতে কোনদিন সুফল পাবেন শুধু ঝামেলা ছাড়া।
আমাকে যে কতোগুলো গ্রুপচ্যাটে অ্যাড করা হয়েছিলো তা গোনতে পারি নাই। ফেসবুক লগইন করে দেখি ২৭ টা মেসেজ, (যারা মেয়েদের নামে ফেইক ব্যাবহার করেন তাদের জন্য এটা কিছুই না ) কিন্তু দেখে খুব মন খারাপ হল কারন এর একটা মেসেজ ও আমার জন্য না এবং আমার কাজেও লাগবে না। পরে সবগুলো থেকে নিজেকে রিমুভ করলাম কিন্তু আজব জিনিষ পিছু ছাড়ে না।
আজকেও ৩ টা থেকে বের হইসি
গ্রুপচ্যাট করা উচিত পরিচিত বন্ধুদের সাথে যেখানে সবাই একসাথে মজা করতে পারবেন, তা না করে হুটহাট করে যে কাউকে গ্রুপচ্যাটে ডাকলে কি লাভ?
কমপক্ষে ৫০০ গ্রুপে আমাকে অ্যাড করা হয়েছে যা আমার কোন কাজে আসে না এবং কোন পোস্টও আমার কাছে আসে না। কিছু কিছু গ্রুপের নোটিফিকেশান অন করা আছে সেগুলার জ্বালায় বাচি না। কতো বন্ধ করবো বলুন। কিছু কিছু গ্রুপ আছে শুধু মেম্বার অ্যাড করেই কাজ শেষ, কেউ কোন পোস্ট করে না! আমি জানি আমার মতো অনেকেই এসব সমস্যায় ভুগছেন। তাই গ্রুপ এডমিনদের বলছি এভাবে সবাইকে আপনার গ্রুপে অ্যাড করা উচিত না।
যাদেরকে অ্যাড করলে কাজে লাগবে তাদেরকে অ্যাড করুন। বিশেষ করে Justine Bieber এর ফ্যান গ্রুপে আমাকে অ্যাড করবেন না, এই পর্যন্ত ৭ তার মতো গ্রুপে অ্যাড হইসি (Bieber ফ্যানরা, মাইন্ড খাইয়েন না!)
এই মুহূর্তে আপনার মনেও হয়তো একটা মেয়ের নাম এসেছে যার সাথে অনেক দিন চ্যাট করেছেন কিন্তু পরে জানতে পারলেন যে আইডিটা ফেইক! আর নামটা মনে করার সাথে সাথে কিছু পোড়ানোর গন্ধও পাচ্ছেন, কি পুড়ছে জানেন? কারো কইলজা পোড়তাসে আমিও গন্ধ পাইসি আপনারা কেউ পাইসেন? হাহাহাহা। অনেক Innocent ছেলেরাই ফেইক আইডির ইমোশনাল অত্যাচারের ভিকটিম হয়েছে। যারা ফেইক আইডি খুলেন তাদের বলছি এই কাজটি করা একদমি ঠিক না, আর ভিকটিমদের বলছি ফেসবুকে গার্লফ্রেন্ড খুঁজা উচিত না কারন সবাই ভাগ্যবান হয় না।
অপরিচিত কারো দ্বারা এই মাইর খাইলে সমস্যা একটু কম কিন্তু পরিচিত কেউ যদি এমনটা করে ধরা খায় তাহলে সম্পর্কটার নাম আজীবনের জন্য পরিবর্তন হয়ে যায়।
তাই সাবধান!!! এইসব সেন্সেটিভ জিনিষ নিয়ে বন্ধুদের সাথে মজা করা উচিত না। (কথা গুলো আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বললাম, নাথিং পারসনাল )
দেখেছি অনেকেই নিজের নামে ফ্যান পেজ খুলেছে, চিন্তার বিষয় হলো সেই পেজে ২-৩ হাজার লাইকও আছে। খোঁজ নিয়ে দেখলাম যে বেটা কিছুই না। কি দরকার আছে অযথা একটা ফ্যান পেজ খোলার? আপনি যদি কোন নির্দিষ্ট একটা জনপ্রিয় জিনিষ নিয়ে পেজ খোলেন সেটা অন্য কথা।
অনেকই আমাকে চ্যাটে বলে যে ভাই আমার প্রোফাইল পিকচারটাতে একটা লাইক দেনতো।
এরকম করলে আপনার সব মান সম্মান সব আস্তে আস্তে ধুলায় মিশে যাবে। চৌধুরী সাহেবও আপনার ইজ্জত বাচাতে পারবে না ছবি বা স্ট্যাটাস সুন্দর হলে লাইক চাইতে হয় না। তাছাড়া লাইক কি খাইবেন নাকি শরীরে মাখবেন?
হাই বন্ধুরা আমি এখন বাথরুমে ঢুকছি। ২মিনিট পর আবার লিখলেনঃ আমি এখন বাথরুম থেকে বের হয়েছি।
আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি, ১০ মিনিট পরঃ আমি এখন মহাখালি বাসস্ট্যানে আছি।
আমার ১ মিনিট পরঃ মাত্র বাসে উঠলাম!
ভেবে দেখুন, কে ফেসবুকে বসে আছে জানার জন্য যে আপনি কখন কি করছেন? ফেসবুক আপনাকে জিজ্ঞেশ করে What's in your mind? এর মানে এই না যে প্রতি ২ মিনিট পর পর আপনার পরিবর্তিত মনের কথা সবাইকে জানাতে হবে!
ফেসবুক বলে এটা হল এমন একটা সাইট যেখানে শুধু আপনার পরিচিত বন্ধু, ফামিলি মেম্বার, ক্লাসমেটরা থাকবে। তারপরও অনেকে চায় নতুন বন্ধু বানাতে সেটা দোষের কিছু না কিন্তু অনবরত ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাতেই থাকবেন আর ব্লক খাইলে ফেসবুককে গালি দেবেন এমনটি করা উচিত নয়। অপরিচিত মানুষ ফ্রেন্ড লিস্টে রাখা নিরাপদ না।
আপনি যদি ফেসবুকের খারাপ দিক গুলো থেকে বাচতে চান তাহলে নিজে খারাপ কাজ গুলো করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে নিচের কাজ গুলো করুন।
ফেসবুকের নতুন নতুন নিরাপত্তা ব্যাবস্তা দেখে আমার ফেসবুককে গালাগালি দেই। কিন্তু যদি তারা ঢিলাঢালা নিয়ম রাখতো তাহলে আমাদের মতোই কেউ হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হতো। তাই নিজে যদি ভালো থাকেন তাহলে কখনই কোন সমস্যায় পরবেন না।
যাই হোক, অনেকক্ষণ ধরে বকবক করলাম আর কিছুক্ষন লিখলে কেউ হয়তো আমার গলা চেপে ধরবে। আবারো হাতজোড় করে বলছি দয়া করে কেউ মাইন্ড খাইয়েন না, কথা গুলো প্রয়োজনবোধ থেকেই বলেছি।
আপনার দৃষ্টিতে কিছু কথা ভুল হতে পারে কিন্তু অনেকের জন্যই উপকারি হবে।
পোস্টটা ভালো লাগলে যা খুশি করেন আর খারাপ লাগলে বরাবরের মতো আমার ধইরা ঘারান (আমারে পাইবেন কই মিয়া? )
ফেসবুক সম্পর্কে কোন সমস্যা বা কিছু জানার থাকলে আমার সাথে সেই পরিচিত জায়গায় দেখে করুন।
[বিঃ দ্রঃ পোস্টটি আমার অন্য একটি অ্যাকাউন্টে আগে প্রকাশিত হয়েছিল, এখন সেই আইডিটা না থাকায় নতুন করে আবার লিখলাম, আগের থেকে অনেক কিছু আপডেট করেছি। ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।