রাজধানীর ফার্মগেটের পূর্ব তেজতুরি বাজারে মাহফুজ সুইং অ্যান্ড সার্ভিস নামে একটি দোকানে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ ১১ জনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন দোকানের ম্যানেজার শফিউল আজম (৪৫), ভ্যানচালক আবদুল লতিফ (৬০) ও দোকান মালিকের বন্ধু ইবরাহিম খলিল (৩৫)। তারা প্রত্যেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর মারা যান। বাকিদের অবস্থাও গুরুতর। রাজধানীর ফার্মগেটের পূর্ব তেজতুরি বাজারের ১২০ নম্বর মাহফুজ সুইং অ্যান্ড সার্ভিস নামে গার্মেন্টের সরঞ্জাম ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী বিক্রির দোকানে আগুন লাগে।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে লাগা আগুনে দোকান মালিকসহ ১১ জন দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ঘটনার সময় দোকানের সামনে দাঁড়ানো নর্দান ইউনিভার্সিটির তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের ছাত্রী রিফাত আরা ইয়াসমিন (২০) ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির বিবিএ-এর ছাত্রী শাম্মি আক্তার ঝিলিক (২২) মারাত্মক দগ্ধ হন। গতকাল বেলা ১টার দিকে শফিউল আজম ও দেড়টার দিকে ইবরাহিম খলিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মারা যান আবদুল লতিফ।
স্বজনদের আহাজারিতে বার্ন ইউনিটের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
এদিকে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অগ্নিদগ্ধদের দেখতে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে যান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি আহতদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন।
হাসপাতালে যারা আরও ভর্তি রয়েছেন তারা হলেন ভ্যানচালক জহিরুল ইসলাম (৫০), মালিক মাহমুদুল হাসান মাহফুজ (৩৮), কর্মচারী আবদুল মোতালেব (১৪), সিকিউরিটি গার্ড জাকির হোসেন (৪৫), প্রাইভেট কার চালক মো. মাসুদ (২৬), হোটেল কর্মচারী উজ্জ্বল (২৪), রিফাত আরা ইয়াসমিন ও শাম্মি আক্তার ঝিলিক।
আবদুল লতিফের ভাগ্নে মুরাদ জানান, মামা ভ্যান চালাতেন।
তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে হোসনি দালান থেকে একটি থিনারের ড্রাম নিয়ে তেজতুরি বাজারে ডেলিভারি দিতে গিয়েছিলেন। মামা কেরানীগঞ্জের বরিসুর এলাকায় থাকতেন। তার বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ডুবি গ্রামে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে দিশাহারা আবদুল লতিফের স্ত্রী নাজমা বেগম।
ইবরাহিম খলিলের স্ত্রী লাভলী আক্তার জানান, তারা বংশালের আগা সাদেক লেনের ৭৫/২ নম্বর বাসায় থাকেন।
তার স্বামী ব্যবসা করতেন। ঘটনার দিন সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে ওই দোকানে গিয়েছিলেন। ইবরাহিমের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পরিহাটি গ্রামে।
শফিউল আজমের বাড়ি ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার বাদুড়গাছা গ্রামে। তিনি পূর্ব তেজতুরি বাজার এলাকায় থাকতেন।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, গার্মেন্টের কেমিক্যাল-জাতীয় দাহ্য পদার্থে আগুন লাগার কারণে তা অল্প সময়ে বেশি মানুষকে দগ্ধ করে।
দগ্ধ মফিজও না ফেরার দেশে : পুরান ঢাকার চকবাজারে পারফিউম তৈরির কারখানায় কন্টেইনার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ মফিজুর রহমান (৪২) অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহতের বাবার নাম ফজল গনি। তার বাড়ি চাঁদপুরের মতলব থানার কাচিয়ারী গ্রামে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মফিজের শরীরের ৪২ শতাংশ দগ্ধ ছিল। প্রসঙ্গত, ২ এপ্রিল বিকালে চকবাজারের হাবিবুল্লাহ রোডের ছোটকাটরায় একটি পারফিউম কারখানায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে ৩ জন শ্রমিক দগ্ধ হন। ৩ এপ্রিল কবির হোসেন (৩০) এবং ৭ এপ্রিল আবদুল আজিজ (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।