আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিষন্য বিকেলে আমি এবং কেয়া।

অন্ধদের রাজ্যতে এক চোখা মানুষটি রাজা এবং আমি সেই রাজা। ভোর পাঁচটা পর্যন্ত দীর্ঘ এবং ভয়ানক অধ্যাবশের পর স্বর্গীয় বিসানার উপর ঝাপিয়ে পরলাম, কাল সকাল ৯টায় ক্লাস টেস্ট আছে, ঘুমিয়ে পরলাম। সকাল ৮.৩০মি কেয়া আমাকে ফোন দিল। কেয়া আমার ক্লাস ম্যাট কম গার্লফ্রেন্ড বেশী, অর্থাৎ আমরা অফিসিয়াললি প্রেমিক প্রেমিকা নই কিন্তু কেয়ার ভাবখানা প্রেমিকা প্রেমিকা টাইপ। - তুমি কই? - হুম ... কি হইছে? (ঘুমের ঘোরে অন্য ভুবনে তখন আমি) - পরীক্ষা দিলা না কেন? প্রশ্ন খুব ইজি করেছিল।

- জীনে ধরলে মানুষ যেমন লাফ দেয় ঠিক তেমন একটা লম্ফ দিয়ে আমি খাটের মাঝখানে বসে পরলাম, ভাবলাম সারা রাতের খাটনি তবে কি বুড়িগঙ্গার জলে গেলো। মন একটু খারাপ করে কেয়াকে বললাম “তাহলে কি আর করার আবার ঘুম দেই” এই বলে ফোনটা কেটে দিলাম। ১মিনিট পর আবার কেয়ার ফোন- মনে মনে বলাম পরীক্ষা দেবার আগে ফোন দেয় না আর এখন পরীক্ষা শেষে ফোন দিয়ে আমার আরাম বেরাম করতেছে। একবার ভাবলাম ফোনটা কেটে দিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু কেন জানি ফোনটা রিসিভ করে ফেললাম।

- তুমি কি এখনো ঘুমাচ্ছো? - না পুকুরে মাছ মারতেছি, জানো বড় একটা কাতলা মাছ ধরেছি ৫ কাজি ওজন হবে। - ৩০মিনিট পর পরীক্ষা শুরু হবে, তারাতারি আসো। আমি আর কোন কথা না শুনে ২মিনিটের মধ্যে রুম থেকে বের হলাম, দৌড় দিয়ে বাস স্ট্যান্ড গিয়ে দেখি লম্বা বিশাল এক লাইন, লম্বা লাইন দেখে মনে হল এই লাইনে দাঁড়াইলে কিয়ামত চলে আসবে কিন্তু বাসের দেখা মেলবে না। তাই সাথে সাথে একটা রিক্সসা ঠিক করলাম, আমার বাড়ি থেকে ভার্সিটির দূরত্ব খুব একটা বেশী না তাই রিক্সার সুবিধা আছে। তারপরও ১০মিনিট লেট, যেই ডিপারটমেন্ট ঢুকতে যাবো ঠিক সেই মুহূর্তে আবিস্কার করলাম আমি আইডি কার্ড আনতে ভুলে গেছি,এখন !- প্লান এ – সিকিউরিটি গার্ডের চোখ ফাকি দিয়ে ডিপার্টমেন্টে ঢুকব।

প্লান বি- সিকিউরিটি গার্ড ধরে ফেললে, সিনিয়ারিটির দাপট দেখাব। মিশন- ক্লাস টেস্ট। ব্যাগ থেকে ক্লাস টেস্টের খাতা বের করে, চোখে চশমা লাগিয়ে সেই রকম পড়ুয়া স্টুডেন্টের পার্ট নিয়ে সিকিউরিটি গার্ডের সামনে দিয়ে ঢুকে গেলাম। মিশন ক্লাস টেস্ট ১৫মিনিট লেট, যাইহোক মিশন সফলতার দাড় প্রান্তে দাড়িয়ে, ক্লাসে ঢুকব ঠিক সেই মুহূর্তে পিছ্ন থেকে এক স্যার আমার হাত খোপ করে ধরে বলল “এই ছেলে তোমার আই ডি কার্ড কই?” - স্যার , ইয়ে-মানে, ক্লাস টেস্ট দিবো। - পরীক্ষার সময় কখন? - স্যার, ৯টায়।

- এখন বাজে কয়টা? - স্যার, ইয়ে-মানে, এখন ... পকেট থেকে মুঠো ফোন বের করে দেখলাম ৯.১৫। - ফোন তো ঠিকই আনছো , প্যান্ট পরতেও ভুলে যাও নাই কিন্তু আই ডি কার্ড ?? তারউপর ১৫মিনিট লেট, যাও বাড়ি যাও পরীক্ষা দিতে হবে না। তারপর সিকিউরিটি গার্ডকে ডেকে কিছুক্ষণ ঝাড়ি মারল আর বলল এই কালপিট্টা যেন ডিপার্টমেন্টে আজকে ঢুকতে না পারে। অসহায়ের মত বাহিরে বসে বসে ভাবতে লাগলাম, কেন যে প্লান সি ছিল না !!! কিছুক্ষণ পর কেয়ে এসে বলল, - তুমি ভার্সিটিতে আসলা কিন্তু পরীক্ষা দিলা না কেন? অনেক ইজি প্রশ্ন করছিল স্যার। তুমি মিস করলা।

- ডিস্কো বান্দর ড্যানচ্ছ দিতেছিলাম। তাই আটেন্ড করি নাই। - তুমি নাচতেও পারো ! একটু নাচোতো দেখি। - - আজ আর ক্লাস হবে না, চলো বই কিনতে যাই। - মানে ? - আজ স্যারদের মিটিং আছে তাই ক্লাস হবে না আর আজকে স্যার নতুন আরেকটা বই কিনতে বলছে।

চলো যাই। - কি আর করার। ওর সাথে হাটা দিলাম, কেয়া একটু পর প্রেমিকা স্টাইলে আমার হাত ধরে হাটতে শুরু করলো, পিছন ফিরে থাকিয়ে দেখি সব কয়টা ফ্রেন্ড আমার দিকে চোখ বড় বড় করে থাকিয়ে আছে ! আমিও একটু পার্ট নিলাম। নীলক্ষেতে গিয়ে বই কিনলাম তারপর দুই জন এক সাথে বাসে উঠলাম, কেয়া যাবে শেওড়াপাড়া আমি যাবো মিরপুর ইব্রাহিম্পুর তাই একই বাসে উঠলাম। বাস কলাবাগান পার হবার আগে কেয়া বাস থেকে নেমে পরল আমিও ঘর জামাইয়ের মত ওর পিছু পিছু বাস থেকে মেনে পরলাম, কিছু বুঝার আগেই।

- কেয়া, তুমি বাস থেকে নামলা কেন? - দ্যাখো, কত সুন্দর অবহাওয়া। বিকেল বেলা স্নিগ্ধ বাতাসে মেঘলা আকাশ আর গুরিগুরি বৃষ্টির আভা, আসো একটু লেকের পাড়ে বসি। - আমি মনে মনে বললাম, সকাল থেকে না খাওয়া, ক্লাস টেস্ট মিস আর দুই ঘণ্টা জ্যাম পার করে বই কিনলাম সুন্দর আবহাওয়া না অন্য কিছু। কেয়া শীতকাল এখন বসাটা ঠিক হবে না। - আসনা একটু বসি।

আমার হাত ধরে নিয়ে গেলো লেকের পাড়ে এক বেঞ্চে। - লক্ষ্মী ছেলের মত বসো এখনানে। আবহাওয়াটা অনেক সুন্দর না! তোমার কেমন লাগচ্ছে? - শীত করছে, শীতের কাপড় পড়ে আসিনি। - আহ, তুমি এমন করো কেন? - মনে মনে বললাম গুরিগুরি বৃষ্টি পরছে, আমার যদি ঠাণ্ডা লাগে তখন বুঝাব তোমাকে আমার এমন করি কেন। চুপ করে রইলাম।

- “ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পড়ে, দেখে আমি আপেসিম... বয়ে যাওয়া জলস্রোতে, আমার পায়ে জলছবি ... ... ... ... ... ... ... বৃষ্টি ভেজা এই বেলায় আমিতো স্বাধীন, রংধনুর রঙের মেলায় এলো নতুন দিন। “ আমি মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে কেয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম,এত সুন্দর কণ্ঠ! মুডটা ভালো হয়ে গেলো। - কেমন লাগল আমার গান? - বেশ সুন্দর। - তোমার কোন গানটা এখন মনে পরছে? - কেন সেই গানটা তুমি কি এখন গাইবা? - না না , গাইবো না, তুমি গাইবা। - মানে? - মানে হল তুমি এখন একটা গান আমাকে শুনাবা।

- (মামা বাড়ির আবদার নাকি ?) আবারো মেজাজ খারাপ হতে লাগল, তাই চুপ করে থাকলাম। - কি তুমি আমাকে গান শুনাবা না!!! - (কেয়ার ভাব দেখে মনে হচ্ছে, ও এখন কেঁদে দিবে, উফ যন্ত্রণা। ) কেন গান শুনাবো না ! কিন্তু আমার ফাটা বাঁশের মত কণ্ঠে গান শুনে মজা পাবা না। - কেয়া একটা মুচকি হাসি দিল, ওর হাসি দেখে মনে হল, ও মনে মনে বলছে আমিতো মজাই নিতে চাই তাইতো তোমার গান শুনতে চাই। চুপ করে রইলাম আর ভাবতে শুরু করলাম কিভাবে কেয়ার হাত থেকে বাঁচা যায়।

ঠিক সেই সময় কই থেকে যেন একটা ছোট্ট মেয়ে এসে বলল “ভাইয়া ফুলের মালাটা নেন মাত্র ৫টাকা, ভাবীর খোপাতে ভাল মানাবে। ” - এই মেয়ে ভাবীটা আবার কে? - আপনার পাশে বসে আছে। - কেয়ার দিকে তাকালাম, ও মুচকি হাসি হাসতেছে, কেয়া যে চুলে খোপা করেছে সেটা আমি সারাদিন খেয়াল করিনি। - ভাইয়া ৫ টাকা দেন। - বাসি ফুল নিব না, যা ভাগ।

কেয়া মেয়েটিকে ডাকল- - তোমার নাম কি? - কদম। - কোথায় থাকো? - আজিমপুর কবরস্থানের পিছনে। - স্কুল যাও না? - না। - বাড়িতে তোমার কে কে আছে? কেয়ার ভাবখানা দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, - কেয়া, ওর ইন্টারভিউ নেওয়া বন্ধ কর, ও কি কি জবাব দিবে সেটা আমার খুব ভাল ভাবে জানা আছে। যেভাবে এই মেয়ের খোজ খবর নিতেছ দেখে মনে হচ্ছে কদমের সাথে তোমার ভাইয়ের সাথে বিয়া দিবা।

- কেয়া রেগে-মেগে বলল তুমি কি বলতে চাইতেছ? হুম? - তোমার মত অজস্র কেয়া হাজারো কদমের ইন্টারভিউ নিছে কিন্তু এই কদমদের জীবন আজও পরিবর্তন হয়নি আর হবেও না সো লিভ ইট রাইট নাও। - কেয়ারা তো কদমদের জীবন পরিবর্তন করতে পারে নি তাহলে তুমি এদের জীবন পরিবর্তন করে দাও দেখি। - তুমি চাইতেছ আমি এদের জীবন পরিবর্তন করে দেই? - হুম। - ওকে, হেয়ার আই কাম। - এই মেয়ে এখানে এসো।

- আমার নাম কদম। - নাম জিজ্ঞাস করি নাই। - আপনি আমাকে এই মেয়ে বলে ডাকলেন তাই আমার নাম আপনাকে জানায় দিলাম। - (বাপরে, কেয়ার সাপোর্টে এই মেয়ে সেই রকম পার্ট নিল!) মেজাজটা খুব খারাপ হয়ে গেল। কদম আমাদের সাথে আমাদের বাড়ি চল, তোকে নতুন জামা দিব, স্কুলে ভর্তি করে দিব, ভাল ভাল খাইতে দিব আর সারাদিন তুই তোর কেয়া আপুর সাথে গল্প করবি।

চল বাড়ি চল। এই বলে যখনি কদমের হাত ধরতে গেছি তখনি কদম দৌড় দিল আর পিছন ফিরে তাকাইল না। - দেখলা, আমি ওর জীবনটা পালটায় দিতাম কিন্তু কদম ... - তুমি যে চাপারু সেটা কদম বুঝতে পারছিল তাই ও দৌড় মারছে। - আমি কোনটা চাপা মারলাম? - “আমাদের বাড়ি” এইটা মানে কি? - আমাদের বাড়ি মানে আমাদের বাড়ি। - তুমি আমি কি বিয়া করছি যে আমরা এক সাথে থাকি আর সেখানে তুমি কদমকে নিয়ে যাবা।

- কদমই বলল ভাইয়া ভাবীর জন্য ফুলের মালা নেন তারমানে কদম ভাবছিল তুমি আমি বিবাহিত এই জন্যই বলছি আমাদের বাড়ি চল। বুঝছ। - আচ্ছা ধরো কদম তোমার সাথে বাড়ি যেতে চাইল তাহলে তুমি কি করতা? - শুনো কেয়া, কদমের মত পথশিশুরা কখন কারো বাড়ি যেতে রাজি হয় না। আমি খুব ভাল ভাবে জানি। - বুঝলাম।

তারপরও ধরো কদম একটু ব্যতিক্রম মেয়ে আর ও তোমার সাথে যেতে রাজি হল তাহলে তুমি কি করতা? তুমিতো মেসে থাকো। - (মনে মনে বললাম তাহলে তোমার ভাইয়ের সাথে বিয়া দিতাম) - কি হল চুপ করে আছ কেন, উত্তর দাও। - তাহলে আমার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিতাম, আমাদের বাড়িতে একটা কাজের মেয়ে লাগত, কদম রাজি হলে ভালই হত। কেয়া গানের টপিকে ফিরে আসার আগেই বললাম – - কেয়া, আজ উঠি, খুব খুদা লাগছে আর শীত করছে ভীষণ। - আচ্ছা, চলো উঠি তবে একটা সর্ত আছে।

- মনে আতঙ্ক নিয়ে বললাম, কি সর্ত শুনি একটু। - আমরা এখন বাসে যাবো না, রিক্সায় যাবো। - (যাক বাঁচা গেলো, গান গাওয়ার সর্ত দেয় নাই) আচ্ছা ঠিক আছে, রিক্সায় যাবো। রিক্সায় উঠেই কেয়া আমাকে বলল- - আচ্ছা, কদম আসার আগে আমরা কোন টপিকে যেন ছিলাম? - মনে পরছে না, বাদ দাও। - মনে পরছে, তোমার বৃষ্টি নিয়ে একটা গান গাওয়ার কথা ছিল।

- অহ সীট! - সীট করে লাভ নাই। এখন গান গাইতে হবে বৃষ্টি নিয়ে গান গাও। - চুপ করে আছি। এর পর কেয়া যা শুরু করল সেটা অভাবনীয়, আমাকে ইমোশনাললী ব্ল্যাক মেইল করতে লাগল- - আচ্ছা আমি কি তোমার কেউ হই না, আপন কেউ কিংবা বন্ধু, আমি কি কিছুই না তোমার জীবনে? - হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন? - আগে বলো, আমি কি তোমার কিছু হই? - হুম, হও কিছু একটা। - কিছু একটা মানে কি? - কিছু একটা মানে অনেক কিছু।

(যন্ত্রণা) - তাহলে তুমি আমার আবদার রাখো না কেন? - কোন আবদার রাখলাম না?! - এইতো এখনি রাখলা না, আমি তোমাকে কখন থেকে গান গাইতে বলতেছে আর তুমি ... !!! - (কেঁদেই ফেলল মনে হয়) আচ্ছা আচ্ছা এখনি গাইছি। - কেয়া একটা হাসি দিয়ে বলল, তাহলে গাও এখন। ফান্দে পইরা গেছি আজকে, বাঁচার উপায় নাই তাই গান গাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম, মাথার মধ্যে অনেকক্ষন ধরে একটা গান ঘুরতেছিল, তাই দিয়ে শুরু করলাম- - Here comes the rain again, Here comes the rain again Falling on my head like a memory Falling on my head like a new emotion I want to walk in the open wind I want to talk like lovers do I want to dive into your ocean Is it raining with you So baby talk to me Like lovers do Walk with me Like lovers do Talk to me Like lovers do AAAAAAAAAA.............. - আহ, চিল্লাইতেছ কেন? - আরে !!! গানের এই খানে একটা চিল্লানী আছে তাই দিছি। - এইবার বুঝলাম, তোমার গানের গলা খারাপ না কিন্তু তুমি তাল ধরতে পার না, পারবা কিভাবে মেটাল-ফেটাল মিউজিক কি আর রিদম মানে ? বেতাল গান। - বেতাল গান শুনি জানোই তাহলে গান গাইতে বলছিলা কেন? - বলছিতো কি হইছে? - কি হইছে মানে? গান গাইতে বলবা আবার অপমানও করবা? - আমার মেজাজ খারাপ দেখে কেয়া বলল ছরি।

- আমি চুপ করে রইলাম। - আচ্ছা তুমি বৃষ্টি নিয়ে কোন কবিতা লেখনি? - না তবে বর্ষা নিয়ে কলেজে একটা কবিতা লেখছিলাম। - তাহলে এখন কবিতা শুনাও। - মনে নাই। - আহ, শুনাও না।

- সত্যি মনে নাই। - কবিতাটা কেন লেখছিলা? - কলেজে একটা মেয়ে ছিল নাম বর্ষা, ওকে পটানোর জন্য লেখছিলাম। - তুমি আবার মেয়ে পটাও নাকি? - না, সে রকম না, কলেজে সেই মেয়েকে খুব ভাল লাগত তাই চেষ্টা করছিলাম। - তারপর। - তারপর আর নাই।

- মানে? - মানে হইল বর্ষার ক্লোজ ফ্রেন্ডকে দিয়ে আমি আমার প্রেমের প্রস্তাব দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম বর্ষার সেই ক্লোজ ফ্রেন্ড আবার আমাকে ভালবাসে সুতরাং মিশন ইম্পস। - মিশন ইম্পস মানে কি? - মানে মিশন ইমপসিবল। - তারপর... - তারপর আর কিছু হয় নাই। - বর্ষা কত লাকি, ওর জন্য কেউ কবিতা লেখছিল, আমার জন্য কেউ কোন দিন কবিতা লেখেনাই। - মনে মনে ভাবলাম এখন আবার কবিতা লেখার জন্য ইমোশোনাললী ব্ল্যাক মেইল না করে বসে তাই একটা ভাবুক ভাবুক পার্ট নিলাম।

- কি ভাবতেছ তুমি? - কিছু না? - বলো না। - তেমন কিছু না। - কি বর্ষার কথা মনে পরে গেছে? - আরে নাহ। - তাহলে কি ভাবছ? - সামু নিয়ে ভাবছি। - তোমার এই সামু সামু আর ভাল লাগে না।

- আমি হিট ব্লগার হইতে পারতেছি না, এই নিয়ে খুব চিন্তায় আছি, সে দিন একটা লেখা পোস্ট করলাম “ঘৃণা লাগে মানুষ হয়ে জন্মেছি তাই, ঘৃণা লাগে বাংলাদেশি হয়ে জন্মেছি তাই যে দেশে ১৯৫২ এবং ১৯৭১ এর মত ইতিহাস আছে। ” এই লেখাটাও নির্বাচিত পোস্টে স্থান পেলো না, সামুর সব কয়টা মডু কি জামাত-শিবির হয়ে গেলো নাকি? কেয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ও বেশ বিরক্ত বোধ করছে, দেখে মজা লাগল। তারপর সারা রাস্তা সামুর গল্প করলাম আর কেয়া কে বিরক্ত করলাম। রাতে কেয়া ফোন করলো- - তুমি কেমন আছো? - যেমন আগে ছিলাম তেমনি আছি। - সুস্থ আছো? - হুম, কেন তোমার কি জ্বর? - হুম, - ঔষধ খাইছো? - না।

- কেনো? - ঔষধ খেয়ে জ্বর ভাল হবে না। - তাহলে কি করলে জ্বর ভাল হবে? - তুমি যদি আমাকে নিয়ে কবিতা লেখো তাহলে আমি এখনি ভাল হয়ে যাবো। - এই কথা শুনে আমি না শুনার ভান করে বললাম, হ্যালো কেয়া... হ্যালো ... হ্যালো... - হ্যাঁ, আমি শুনতে পারছি, - হ্যালো... হ্যালো... উফ নেটওয়ার্ক... - আমি শুনতে পারছি তো ... - হ্যালো হ্যালো... বলে কল কেটে দিলাম তারপর মুঠোফোন বন্ধ করে দিয়ে ফিফা১৩ খেলতে বসলাম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.