মিসরের খসড়া সংবিধানের বিষয়ে গতকাল শনিবার গণভোট দিয়েছে। আলেকজান্দ্রিয়া, কায়রোসহ আটটি প্রদেশে এই গণভোট হয়। আশঙ্কা করা হলেও বড় ধরনের কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
মুরসিবিরোধীরা অভিযোগ করেছে, নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে।
তবে সরকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আগামী শনিবার দ্বিতীয় দফা ভোট হবে। ওই ভোটের আগে গতকালের ফল প্রকাশ করা হবে না।
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকেরা খসড়া সংবিধানের পক্ষে। তবে খসড়া সংবিধান অনেক বেশি ইসলামি ভাবধারার বলে অভিযোগ এনে বিরোধীরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
মুরসিবিরোধীদের জোট ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্ট (এনএসএফ) শুরুতে গণভোট প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিলেও পরে সমর্থকদের ‘না’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানায়।
গতকাল স্থানীয় সময় সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত। মুরসি কায়রোতে প্রেসিডেন্ট প্যালেসের কাছের একটি কেন্দ্রে ভোট দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। গণভোটে সহিংসতার আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় আড়াই লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়।
বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের বাইরে সেনাসদস্যদেরও দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্থানে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন ছিল। স্বল্পসংখ্যক বিচারকও গণভোটে দায়িত্ব পালন করেন।
কায়রোর একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে মুরসির সমর্থক আদেল ইমাম (৫৩) বলেন, ‘আমি সংবিধানের খসড়া পড়ে দেখেছি। এই সংবিধানের মাধ্যমে মুরসি একনায়কত্ব কায়েম করতে পারবেন না।
’ আলেকজান্দ্রিয়ার একটি স্কুলের শিক্ষক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মাইকেল নুর (৪৫) বলেন, ‘আমি “না” ভোট দিয়েছি। কারণ, এই সংবিধান মিসরে প্রতিটি নাগরিকের প্রতিনিধিত্ব করে না। ’
বিরোধীদের অভিযোগ, খসড়া সংবিধান এমনভাবে করা হয়েছে, যা মিসরের জনগণের মধ্যে বিভক্তি আনবে। তবে প্রেসিডেন্টের সমর্থকেরা বিরোধীদের এই অভিযোগকে মিথ্যাচার বলে উড়িয়ে দিচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে গণভোট প্রভাবিত করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
তাদের আশঙ্কা, প্রথম দফার ভোটের ফল পর্যবেক্ষণ করে দ্বিতীয় দফার ভোটের সময় সরকার সেই চেষ্টা করতে পারে।
কায়রো থেকে বিবিসির সাংবাদিক জন লেন জানান, মিসরের এই গণভোট শুধু একটি খসড়া সংবিধান প্রশ্নে গণভোট নয়। এর মাধ্যমে আগামীর মিসর ইসলামপন্থী নাকি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হবে—তার রায় পাওয়া যাবে।
মুরসি সম্প্রতি আদেশ (ডিক্রি) জারি করে নিজের ক্ষমতা বাড়ান। বিরোধীরা একে তাঁর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতায় থাকার কৌশল বলে অভিযোগ তুলে আদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
তবে বিরোধীদের অভিযোগ নাকচ করে মুরসি বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতেই এ আদেশ জারি করা হয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।