আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সব আই ওয়াশ। ঝারি।

দু বন্ধু একসাথে ব্যবসা শুরু করলো। একজন হলো কোম্পানীর এমডি, আর এক জন ডিরেক্টর। সর্বময় ক্ষমতা এমডির হাতে। কিছুদিন যেতে না যেতেই শুরু হলো দু'জনের সম্পর্কের অবনতি। এমডি সাহেব আবার একটু দৈহিকভাবে শক্তিশালি।

কথায় কথায় গায়ে হাত তোলেন অপর বন্ধুর উপর। একদিন ডিরেক্টর বন্ধুটি প্রশ্ন করলেন এমডি বন্ধুটিকে, আচ্ছা বন্ধু তুমি শুধু আমাকে মার কেনো? তুমি কি আমাকে আর ব্যবসার পার্টনার রাখতে চাও না। এমডি বন্ধুটি জবাব দিলেন, শালা, মাইরের ভাব দেইখা বুঝস না? তোফায়েল, আমু ভাইয়েরা বুঝেও যদি না বুঝেন কি আর করা! গ্রামে গন্জে একটা কথা প্রচলিত আছে, 'মারলাম গুলি ফাকে, লাগলো এসে নাকে'। ঝারির রাজনীতি নুতন নয় বাংলাদেশে। সর্বশেষ ঝারি দেখছি স্পীকার নিয়োগ নিয়ে।

রাজনীতিতে একেবারেই আন-এক্সপেরিয়েন্সড, প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমীন চৌধুরীকে নিয়োগ দিয়ে বলা হচ্ছে এ নিয়োগ দিয়ে দেশে নারী-পুরুষ সমতা করে ফেলা হয়েছে। দেশের কালো বিড়াল খ্যাত একজন রাজনীতিক বলেছেন, "নারী স্পীকার নিয়োগ দিয়ে মৌলবাদী গোষ্ঠীর মুখে বড় ধরনের চপেটাঘাত করা হয়েছে। " যে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রি, সংসদ উপনেতা, বেশকজন মন্ত্রী অলরেডি নারী, তার পরেও নারীরাই সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত, অবহেলিত, নির্যাতিত, তারপরও ঐসব ঝারি মারা কথা শুনলে কেমন যেন গা জ্বালাই করে। তবে এতসব গুলপট্টির পরে আসল কথাটা বলে ফেলেছেন আর এক নারী মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেছেন, "ওয়ান ইলেভেনের সময় যখন বাঘা বাঘা আইনজীবি হাইকোর্টে আমাদের সংগে যোগাযোগ করতে চাইতেন না, তখন শিরিন শারমিন আমাদের পাশে দাড়িয়েছেন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হয়রানীমুলক মামলায় যারা আমাদের পাশে দাড়িয়েছেন, তিনি অন্যতম। " দ্যটস রাইট। এটাই হলো আসল কথা। যত যাই ঘটুক, প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্বাচন পুর্ববর্তী ষ্ট্রাটেজীর কোন পরিবর্তন হয় নাই। আর সেটা হলো, সংস্কারবাদী সে যত বড় 'আব্দুল্লাহ'ই হন না কেন তাদেকে সাইড লাইনে রাখা, আর যারা সেদিন সংসদ ভবনের সেই সাব জেলখানার পাশে দিনরাত টিভি ক্যামেরার সামনে ঘুরঘুর করতো, এক বাটি ডাল, এক টুকরা রুটি, এক প্লেট পিঠা, একটা রজনীগন্ধার স্টিক নিয়ে ভবনের সামনে রাস্তার মধ্যে রেখে এসে নেত্রীকে বোঝতে চাইতেন যে এই দুর্দিনে কেউ না থাকলেও আমরা কানারা আছি আপনার লাগি, বেছে বেছে ঠিক তাদেরকেই তিনি মন্ত্রীসভা গঠনের শুরু থেকে যেমন প্রাধান্য দিয়েছেন, এখন শেষ সময়েও তিনি সে নীতি থেকে একচুলও সরে আসেন নাই।

অনুগত খোজার আর একটা সম্ভাব্য কারন হতে পারে, আগামী সংসদের নুতন সংসদ সদস্যদের শপথও পড়াবেন এই স্পীকার। সেক্ষেত্রেও একটা হিসাব নিকাশ থাকতে পারে বৈকি! কিন্তু মোড়কতো একটা দিতে হয়, সেই সর্বশেষ মোড়ক হলো নারীর কথা বলে স্পীকার পদে একান্ত অনুগত কাউকে বসানো। না হলে তাজনীন ফ্যশনে তিন শতাধিক নারী শ্রমিক পুড়িয়ে মেরে ফেলার পর কঠিন আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হতো, আর তাতে হয়তো সাভারের স্মরণকালের ট্রাজেডিতে হাজারো নারী শ্রমিক নিহত হতো না। শাহানারা বেচে যেত। যে সমাজ বছরের পর বছর শাহানাদের মত হাজার হাজার নারী শ্রমিকের কর্মক্ষেত্রে ন্যুনতম নিরাপত্তা দেয় না, সে সমাজে নারী প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার বা প্রেসিডেন্ট হলেই কি আর না হলেই কি।

সব আই ওয়াশ। ঝারি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।