আমি নিজের জন্য ওরা কেন শিবির করে
১. ওরা কেন জামায়াত-শিবির করে? পুলিশ কেন এত অসহায়ের মতো শিবিরের হাতে মার খাচ্ছে? দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি কয়েক দিন থেকে। রাজপথে পুলিশের ওপর মারমুখী শিবির কর্মীদের টেলিভিশন পর্দায় দেখা যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষকালে তাদের চেহারা টেলিভিশনের পর্দায় কখনোসখনো ফুটে উঠছে। বয়সে অতি নবীন বা তরুণ এসব শিবির কর্মীর বেশির ভাগই জন্ম নিয়েছে স্বাধীনতা-উত্তরকালেই নয়, এরশাদের সেনা শাসনামলে গণতন্ত্রের সংগ্রামের স্লোগান শুনে বা তারও পরে। তারা কেন স্বাধীনতাবিরোধী সেই শক্তি যারা '৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হয়েছিল, বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছিল; তারা কেন সেই শক্তির হয়ে আজ মাঠে নামবে যারা '৭১-এ বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগি্নসংযোগের সহযোগী ছিল।
এই তরুণেরা স্বাধীন বাংলাদেশে জন্ম নিয়ে মুক্তচিন্তার মানুষ হিসেবে রাজনীতিতে একজন উদার গণতন্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার কথা ছিল। ধর্মের রাজনীতিতে তাদের গা ভাসানোর কথা ছিল না। তবু তাদের কোমল মনে কৈশোর থেকে নানা কায়দায় জামায়াতি ছায়া লালন ও পরিচর্যা করেছে বলে আজ তারা রগ কাটা রাজনীতির নৃশংস কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। এই তরুণদের বিপথগামী হওয়ার দায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলকেই নিতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে সুস্থধারার ছাত্র রাজনীতির বদলে সিট দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্যান্টিনে-হোটেলে ফাও খাওয়ার সংস্কৃতি এই তরুণদের কোমল মনে নেতিবাচক প্রভাবই ফেলেনি, ধর্মের নামে 'বাঁচলে গাজী, মরলে শহীদ' এই আহ্বানে ডাক দেওয়া ছাত্রশিবির টেনে নিয়ে গেছে ধর্মান্ধ জামায়াতি রাজনীতিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দলবাজি, সিন্ডিকেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া, ভিসি ও প্রশাসনের সব ছাত্রের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি না রাখা এদের বিক্ষুব্ধ করেছে। এই ক্ষোভ এক দিনে হয়নি। দিনে দিনে হয়েছে। নব্বই-উত্তর গণতন্ত্রের শুরু থেকে ডাকসুসহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রাখায় প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনায় লালিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বেড়ে ওঠা ছাত্র সংগঠনগুলোতে চরম বন্ধ্যত্বের সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে, জেলায় জেলায় এসব ছাত্র সংগঠন প্রায় নির্বাসিত হয়েছে।
ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের মতো সংগঠনগুলোও প্রাণহীন অছাত্রনির্ভর সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এই পক্ষের ছাত্র রাজনীতিতে দেউলিয়াত্ব, মূল্যবোধের অবক্ষয় ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রেখে নেতৃত্ব বিকাশের পথ রুদ্ধ করে দেওয়ায় ধর্মান্ধ স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির ফায়দা নিয়েছে। মাপজোকে ছাত্রশিবির দিনে দিনে শক্তিশালী হয়েছে। তার উল্টো দিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ছাত্র সংগঠন রুগ্ণ ও দুর্বল হয়েছে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত থাকলে প্রতিটি শিক্ষাঙ্গন ও জেলা শহরে মেধাবী, সৃজনশীল নেতৃত্বের মহিমায় আলোকিত ছাত্রনেতাদের আলোয় ছাত্র রাজনীতি আলোকিত হতো।
তাই নয়, ছাত্র রাজনীতি উর্বর হলে শিক্ষাঙ্গন ও জেলায় জেলায় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, সাহিত্যচর্চা, বিতর্ক, খেলাধুলা সব মিলিয়ে নবজাগরণ সৃষ্টি হতো। কিন্তু, যারা ২১ বছর ধরে দেশ শাসন করছেন, জাতীয় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন তারা এ পথ রুদ্ধ করে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, প্রগতি ও গণতন্ত্রের পক্ষে তারুণ্যের ছুটে আসা মিছিলকে থামিয়ে দিয়েছেন।
১. ওরা কেন জামায়াত-শিবির করে? পুলিশ কেন এত অসহায়ের মতো শিবিরের হাতে মার খাচ্ছে? দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি কয়েক দিন থেকে। রাজপথে পুলিশের ওপর মারমুখী শিবির কর্মীদের টেলিভিশন পর্দায় দেখা যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষকালে তাদের চেহারা টেলিভিশনের পর্দায় কখনোসখনো ফুটে উঠছে।
বয়সে অতি নবীন বা তরুণ এসব শিবির কর্মীর বেশির ভাগই জন্ম নিয়েছে স্বাধীনতা-উত্তরকালেই নয়, এরশাদের সেনা শাসনামলে গণতন্ত্রের সংগ্রামের স্লোগান শুনে বা তারও পরে। তারা কেন স্বাধীনতাবিরোধী সেই শক্তি যারা '৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হয়েছিল, বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছিল; তারা কেন সেই শক্তির হয়ে আজ মাঠে নামবে যারা '৭১-এ বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগি্নসংযোগের সহযোগী ছিল। এই তরুণেরা স্বাধীন বাংলাদেশে জন্ম নিয়ে মুক্তচিন্তার মানুষ হিসেবে রাজনীতিতে একজন উদার গণতন্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার কথা ছিল। ধর্মের রাজনীতিতে তাদের গা ভাসানোর কথা ছিল না। তবু তাদের কোমল মনে কৈশোর থেকে নানা কায়দায় জামায়াতি ছায়া লালন ও পরিচর্যা করেছে বলে আজ তারা রগ কাটা রাজনীতির নৃশংস কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে।
এই তরুণদের বিপথগামী হওয়ার দায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলকেই নিতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে সুস্থধারার ছাত্র রাজনীতির বদলে সিট দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্যান্টিনে-হোটেলে ফাও খাওয়ার সংস্কৃতি এই তরুণদের কোমল মনে নেতিবাচক প্রভাবই ফেলেনি, ধর্মের নামে 'বাঁচলে গাজী, মরলে শহীদ' এই আহ্বানে ডাক দেওয়া ছাত্রশিবির টেনে নিয়ে গেছে ধর্মান্ধ জামায়াতি রাজনীতিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দলবাজি, সিন্ডিকেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া, ভিসি ও প্রশাসনের সব ছাত্রের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি না রাখা এদের বিক্ষুব্ধ করেছে। এই ক্ষোভ এক দিনে হয়নি। দিনে দিনে হয়েছে।
নব্বই-উত্তর গণতন্ত্রের শুরু থেকে ডাকসুসহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রাখায় প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনায় লালিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বেড়ে ওঠা ছাত্র সংগঠনগুলোতে চরম বন্ধ্যত্বের সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে, জেলায় জেলায় এসব ছাত্র সংগঠন প্রায় নির্বাসিত হয়েছে। ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের মতো সংগঠনগুলোও প্রাণহীন অছাত্রনির্ভর সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এই পক্ষের ছাত্র রাজনীতিতে দেউলিয়াত্ব, মূল্যবোধের অবক্ষয় ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রেখে নেতৃত্ব বিকাশের পথ রুদ্ধ করে দেওয়ায় ধর্মান্ধ স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির ফায়দা নিয়েছে। মাপজোকে ছাত্রশিবির দিনে দিনে শক্তিশালী হয়েছে।
তার উল্টো দিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ছাত্র সংগঠন রুগ্ণ ও দুর্বল হয়েছে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত থাকলে প্রতিটি শিক্ষাঙ্গন ও জেলা শহরে মেধাবী, সৃজনশীল নেতৃত্বের মহিমায় আলোকিত ছাত্রনেতাদের আলোয় ছাত্র রাজনীতি আলোকিত হতো। তাই নয়, ছাত্র রাজনীতি উর্বর হলে শিক্ষাঙ্গন ও জেলায় জেলায় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, সাহিত্যচর্চা, বিতর্ক, খেলাধুলা সব মিলিয়ে নবজাগরণ সৃষ্টি হতো। কিন্তু, যারা ২১ বছর ধরে দেশ শাসন করছেন, জাতীয় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন তারা এ পথ রুদ্ধ করে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, প্রগতি ও গণতন্ত্রের পক্ষে তারুণ্যের ছুটে আসা মিছিলকে থামিয়ে দিয়েছেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।