ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে তা থৈ তা থৈ থৈ দিমি দিমি দ্রম দ্রম । । ভূত পিশাচ নাচে যোগিনী সঙ্গে । । ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে।
। দানব দলনী হয়ে উন্মাদিনী আর কি দানব থাকিবে বঙ্গে । । মা সকাল থেকে জায়নামাজে বসে কাঁদছেন। কিছু মুখেও দিচ্ছেন না।
আর বাবা বারান্দায় তার হেলান-চেয়ারটাতে বসে পত্রিকায় মুখ ঢেকে রেখেছেন। সামনে রাখা চায়ের কাপে চুমুক দেয়া হয়নি। বাবার কাছে আজকের দিনটা নতুন কিছু নয়। এর মধ্য দিয়ে তাকেও যেতে হয়েছে। গিন্নী রান্নাঘরে ব্যস্ততার ভান করছে।
মাঝে মাঝে নাক টানার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। বিল্টু কিছু না বুঝেই আমার পিছে পিছে ঘুরছে আর ট্যাঁ ট্যাঁ করছে। এরকম সময় আসবে জানতাম বলেই মাসের বেতন থেকে প্রতি মাসে সিংহভাগ আলাদা করে রাখা। তারপরও বড়ভাইজানের কাছ থেকে একটা চেক নিয়ে রেখেছি। বলা তো যায়না।
ভাইজান সঙ্গে আসতে চেয়েছিলেন। মানা করে দিয়েছি। হাজার হোক উনি তো একাই গিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে। গিন্নীকে বুঝিয়ে দিয়েছি কিভাবে আমার অফিসের গ্রাচুইটির টাকা তুলতে হবে। বিল্টুর নামে একটা এফডিআর করা আছে।
তার কাগজপত্রও গুছিয়ে দিলাম।
গত ক'দিন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবার সাথে দেখা করেছি। অনেকে বাসায় ও এসেছিলো। অফিস থেকে দু'দিন ছুটি নিয়েছি। যদিও জানিনা এরপর আর ফিরে যাওয়া হবে কিনা।
গিন্নী এ ক'দিন আমার পছন্দের সব পদ রান্না করে খাইয়েছে। গলা দিয়ে কিছু নামাতে পারছিনা যদিও। এই সাতসকালেই টেবিল ভর্তি নাস্তা। বসেই উঠে পড়লাম। কেমন যেন পাকস্হলি বিদ্রোহ করছে মনে হল।
সময় আর বেশি নেই। গিন্নীকে আরেকবার হাসপাতালের ঠিকানা আর এ্যাম্বুলেন্সের নাম্বারগুলো দেখিয়ে দিলাম। এখন মনে হচ্ছে এ জীবনে কত কিছু করার বাকি রয়ে গেল। বিল্টু আর গিন্নীকে নিয়ে ফ্যান্টাসি কিংডমে যাওয়ার কথা ছিল। বাবা-মাকে নিয়ে আজমীর শরীফ জেয়ারতে যাব ভেবেছিলাম।
মাকে কদমবুসি করতেই ঢুকরে কেঁদে উঠলেন। বাবা তেমনই নীরব। বিল্টুকে কোলে নিয়ে আদর করলাম। গিন্নীর চোখে চোখ পড়ামাত্রই আঁচলে চোখ ঢাকলো। আমার এ দশার জন্য হয়ত নিজেকে দায়ী ভাবছে।
আজ হোক, কাল হোক এ সময় তো আসতই।
শেষবারের মত সবার দিকে তাকিয়ে বাজারের থলিটা হাতে গলিয়ে বের হলাম। আজই অভিষেক হল আমার সংসারের মাসিক বাজারের। এতদিন বাবাই একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন এ সেক্টরে। আমি ছিলাম সহ-সেনাপতি।
বাজার টেনে আনাটাই ছিল গুরুদায়িত্ব। গিন্নীর বুঝি সহ্য হলনা এ স্বর্গসুখ। বাবাকে করালো রিটায়ার আর আমাকে করলো কুলহীন। মার ক্ষীণ প্রতিবাদ সত্ত্বেও পৌ্রুষের আঘাত আমার হাতে তুলে দিল বাজারের থলি। পত্রিকার আড়ালে বাবার মুচকি হাসি যা এতক্ষণে অট্টহাসিতে রুপ নিয়েছে, আমি বাজারের মূল ফটক থেকে যেন শুনতে পাচ্ছি।
যাইহোক সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেই এসেছি। পণ্যের অগ্নিমূল্য আর বিক্রেতার ভ্রূকুটি হৃদয়পিঞ্জরে আঘাত হানলেও
" লড়বো আমি ছাড়বো না
মরার আগে মরবো না। । "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।