অনেকদিন ব্লগে বসিনি। ফেসবুকেও ঠিকমতো বসা হয় না। আজ হঠাৎ একটা লেখা চোখে সামনে পড়লে না পড়ে থাকতে পারলাম না। তাই অন্যদের সাথে শেয়ারের জন্যই হুবুহু কপি-পেস্ট করলাম। শেষে লিঙকটাও দিলাম.।
একটি ধর্ষন কিছু কথা
ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধ করুন।
২ রা জুন রবিবার দৈনিক কালের কন্ঠে একটা সংবাদ ছাপা হয় যার শিরোনাম ছিল- ধর্মান্তর ও ধর্ষনের শিকার মেধাবী স্কুল ছাত্রী। তাদের চকরিয়া ( কক্সবাজার ) প্রতিনিধির পাঠানো রির্পোটটি সরাসরি তুলে ধরছি প্রথমে-
গত প্রাথমিক শিা সমাপনী পরীায় এ প্লাস পেয়েছিল গাজীপুরের টঙ্গীর এক মেধাবী ছাত্রী। এর স্বীকৃতি হিসাবে এম.পি জাহিদ হাসান রাসেল তাকে পুরস্কৃতও করেছিলেন। কিন্তু ৬ এপ্রিল থেকে ধর্মের নামে এক দুঃসহ বর্বরতার স্বীকার হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী হতভাগ্য এই মেধাবী শিশুটি।
ওই দিন বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে অপহৃত হয় সে। পরে তাকে জোর পূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করে কথিত বিয়ে নামে চক্রটির এক সদস্য তাকে আটকে রেখে ৫৫ দিন ধর্ষন করে। অবশেষে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী গ্রাম থেকে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী থানা পুলিশ। উদ্ধারের পর থানায় সাংবাদিকদের কাছে এই বর্বর কাহীনি শোনায় ছাত্রীটি।
এ সময় টঙ্গী থানা পুলিশের সঙ্গে আসা ছাত্রীটির বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন। তবে অপহরনকারীদের কাউকেই গ্রেপতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের ভাষ্যমতে এই অপহরন ঘটনায় জড়িত ছিল চকরিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ছয় মাদক ব্যাবসায়ীর একটি চক্র।
ছাত্রীটি শুক্রবার রাতে চকরিয়া থানায় কালের কন্ঠকে জানায়, তার কাছে হিন্দু ধর্মই এখনো শ্রেষ্ঠ ধর্ম। অপহরনকারীররা কোনো কাগজে স্বার না নিয়েই পাঞ্জাবি পরা এক মোল্লা ডেকে এনে কলেমা পড়িয়ে আয়েশা বেগম নাম দিয়ে দেয়।
যদিও কলেমা কি জিনিস এর কিছুই বুঝতে পারেনি শিশুটি। তৎনাত তাকে অপহরনকারী দলের এক সদস্য মানিকের সঙ্গে পাতানো বিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্রীটির অভিযোগ , ৬ এপ্রিল অপহরনের পর ৭ এপ্রিল থেকে তাকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষন করেছে মানিক। এছাড়া অপহরনকারীদের আরো কয়েকজন তাকে ধর্ষন করার চেষ্টা করে। অপহৃত শিশুটির মা জানান , তার ১১ বছর বয়সী শিশুকন্যাটি টঙ্গীর একটি প্রথমিক বিদ্যালয় থেকে এ প্লাস পেয়ে পাস করার পর ষষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি হয় একই এলাকায়।
প্রাথমিক শিা সমাপনী পরীায় ভালো ফল করায় সম্প্রতি তার মেয়েকে পুরস্কৃত করেন ওই এলাকার সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল। চকরিয়া থানার ওসি রনজিৎ কুমার বড়–য়া বলেন, শিশুটির সঙ্গে কথা বলে যতোটুকু জানতে পেরেছি, আইনিভাবে ধর্মান্তর বা বিয়ে কোনটাই হয়নি।
এই হলো সংবাদ। সংবাদ প্রকাশিত হবার পরই বিষয়টি নিয়ে সুশীল সমাজ হৈ চৈ শুরু করেছে। বড় বড় লেখা, মন্তব্যের পর মন্তব্য আমরা দেখতে পাচ্ছি।
মুল আলোচনায় আসার আগে কালেরকন্ঠের রির্পোটের ব্যাপারে কিছু কথা বলা দরকার- শিরোনাম ধর্মান্তর ও ধর্ষনের শিকার মেধাবী স্কুল ছাত্রী। আমার প্রশ্ন হলো ধর্মান্তর কথাটা সবার আগে আসার কারন কি! ?
যেখানে সংবাদের শেষে - ওসি রনজিৎ কুমার বড়–য়ার উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা হলো- আইনি ভাবে ধর্মান্তর কিংবা বিয়ে কোনটাই হয়নি তারপরও কেন সংবাদের শিরোনাম হলো ধার্মান্তর! একটু নিচে এসে আমরা দেখি সংবাদে লেখা হয়েছে- ৬ এপ্রিল থেকে ধর্মের নামে এক দুঃসহ বর্বরতার স্বীকার হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী হতভাগ্য এই মেধাবী শিশুটি। কি চমৎকার সংবাদ। তার নিচে লেখা হয়েছে- পুলিশের ভাষ্যমতে এই অপহরন ঘটনায় জড়িত ছিল চকরিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ছয় মাদক ব্যাবসায়ীর একটি চক্র। এখানে তো সংবাদটা এরকম হতে পারতো - পুলিশের ভাষ্যমতে এই অপহরন ঘটনায় জড়িত ছিল চকরিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ছয় ইসলামী মাদক ব্যাবসায়ীর একটি চক্র! এবার আমরা ধর্মান্তর বিষয়ে আমাদের ধর্মের দিকে যাই- ইসলামের কোথায় আছে কাউকে জোর পূর্বক ইসলাম ধর্ম গ্রহন করাবার কথা ? জোর পূর্বক তো নয়ই যদি কেউ কলেমা পড়ে , মুখ দিয়ে কলেমা পড়ে অথচ তার হৃদয়ের সাথে, কাজের সাথে তার উচ্চারিত কথা গুলোর মিল খুজে পাওয়া না যায় তাহলে সে মুসলমান হবেনা।
ধার্মান্তরিত হবেনা। ধর্মন্তরিত হওয়া স্বপ্রনোদিত বিষয়- একন্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। জোর নয়। সংবাদটি পড়ে আমরা সবাই বুঝতে পারি- একটি কুচক্রী মহল যারা মাদক ব্যাবসার মতো জঘন্য ব্যবসার সাতে জড়িত যা মোটেও ইসলাম সর্মথিত নয় তারা লালসার দৃষ্টিতে একটি মেয়েকে দেখলো যে দেখাটা ইসলাম সর্মথিত নয়, মেয়েটিকে অপহরন করলো যা ইসলাম সর্মথিত নয়, অবুঝ একটি শিশুকে তার অভিবাবক ছাড়া অমতে বিয়ের প্রহসন , নাটক করলো যা ইসলামী বিয়েও নয়, দেশীয় বিয়েও নয় এর পর তাকে ধর্ষন করা হলো - যা ইসলাম সর্মথিত তো নয়ই বরং যার শাস্তি ইসলামী আইনে মৃত্যূদন্ড। এতগুলো, অর্থাৎ ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইসলাম বিরোধী কাজ সংগঠিত হলো আর সংবাদ লেখা হলো - ধর্মের নামে এক দুঃসহ বর্বরতার স্বীকার হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী হতভাগ্য এক মেধাবী শিশু।
প্রশ্ন হলো এতগুলো ধর্মবিরোধী কাজ করার পর ধর্ম কোথায় থাকলো! সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে ইচ্ছা করে- মাদক ব্যাবসায়ী চক্র কি মুসলামদের ধর্মের কান্ডারী?? ইসলামের ঠিকাদার হয়েছে নাকি তারা?
কালের কন্ঠের রির্পোটের অল-লাইন সংস্করনে রুবেল হাসান একটি মন্তব্য করেছেন সংবাদটি পড়ে মন্তব্যটি তুলে দিলাম- ‘‘ ২১ শে ফেব্র“য়ারী-২০১২ তে বাংলাদেশ প্রতিদিন-৫ নং পৃষ্ঠায় একটা খবর ছাপা হয়েছিল পুজার অনুষ্ঠান শেষে ৭-৮ জন হিন্দু যুবক একটি বাড়িতে ঢুকে ২ টি মেয়েকে গনধর্ষন করেছে। ’’ একই পত্রিকার অন-লাইন সংস্করনে পিয়াল কমেন্ট করেছেন- ‘‘ ভাইজান বাংলাদেশ তো ইসলামি রাষ্ট্রনা, যার কারনে পরিমল জয়ধর রা পার পেয়ে যায়। ’’ পরিমল শুধু নয় বাংলাদেশে বহু হিন্দু ধর্ষক আছে যারা মুসলমান মেয়েদের ধর্ষন করছে। বিষয়টার সাথে ধর্মকে জড়িয়ে কেন রির্পোট হলো তার নিন্দা জানানো ছাড়া আর কি করার আছে আমাদের। কথা চালাচালি, বির্তক আর শোরগোলের ফাঁকে প্রকৃত অপরাধী আড়াল করা হবে, শাস্তি হবেনা এটাই তো হচ্ছে।
ধর্ষক যিনি তিনি, অপহরনকারী যিনি, মাদকব্যবসায়ী যিনি তার বা তাদের ধর্মীয় পরিচয় যাই হোক তারা জঘন্য, মানুষরুপী জানোয়ার, ধর্মের রুপধারী ধর্মবিদ্বেষী বড় ধরনের অপরাধী তাতে কারও সন্দেহ থাকার কথা নয়, সম্ভাবত তথাকথিত সুশীলদেরও নয়। এদের শাস্তি হলে নিরীহ মানুষ বাচবে। সাধারন মানুষ, শান্তি প্রিয় মানুষ শান্তিতে থাকবে। ইসলামের চাইতে বড় বেশি শান্তির পথ আর কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে?
বির্তক নয়, হলুদ সাংবাদিকতা নয় আসুন সবাই প্রকৃত অপরাধীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তাদের শাস্তির দাবী জানাই।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।