কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! রেপ আসলে কি? কোন মেয়েকে কোন পুরুষ কর্তৃক জোরপূর্বক সেক্সে বাধ্য করা। বাংলায় ধর্ষণ।
রেপের মধ্যে সেক্স কতটুকু? মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছিলেন, রেপ কোন সেক্স নয়, রেপ হচ্ছে ভায়োলেন্স। আমিও তাই মনে করি। কারণ আপনার যদি এত সেক্সুয়াল প্লেজার পেতে ইচ্ছা করে তাহলে মাস্টারবেট করলেই ল্যাঠা চুকে যায়।
নেটে পড়েছি মাস্টারবেট করলে আপনি ফ্যান্টাসি করার অনেক সময় পাবেন, ভুল টাইমিং এর দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না, নিজের অযোগ্যতা নিয়ে কারো সামনে ছোট হবেন না। রেপের মধ্যে আদৌ সেক্সুয়াল কোন প্লেজার পাওয়া যায় বলে মনে হয় না, একটা খুনি খুন করে যে ধরণের পারভার্টেড মজা পায়, একজন রেপিস্ট রেপ করে সেই ধরণের বিকৃত মজা পায়। নাথিং এলস।
ধরুন আপনি একজন রেপিস্ট। আপনি রেপ করে মজা পাবেন কেন? কারণ একটা মেয়ে আপনার কাছে শারীরিক শক্তিতে পরাজিত হচ্ছে, একজনের স্বাধীনতা স্বকীয়তা ইজ্জত সম্পূর্ণই আপনার হাতের মুঠোয়, এবং আপনি অতি সহজে এই জিনিসগুলো হরণ করছেন - এই অনুভূতিগুলো আপনাকে রেপের সময় আনন্দ দেয়।
একটা মেয়ে কাতর হয়ে কান্নাকাটি করছে বা আপনার কাছে ইজ্জত ভিক্ষা চাইছে এই জিনিসগুলো আপনাকে খুনের সময় সিরিয়াল কিলারের অনুভূতির মত একটা বিকৃত আনন্দ দান করে।
রেপের ক্ষেত্রে মেয়ের দোষ কতটুকু? আপনি হয়তো বলবেন, মেয়েদের খোলামেলা শরীর দেখে আপনি উত্তেজিত হয়ে শরীরের কামনা মেটাতে না পেরে রেপ করে ফেলেছেন। কিন্তু যেসব মেয়ে রেপড হয় তারা সবাই কি খোলামেলা শরীর নিয়ে ঘুরে বেড়ায়? এগার বছরের মেয়ের খোলামেলা শরীরের সাথে এগার বছরের ছেলের খোলামেলা শরীরের ঠিক কতটা পার্থক্য আছে? এগার বছরের মেয়ের শরীরে এমন কি আছে যেটা আপনাকে রেপ করতে বাধ্য করে?
হ্যাঁ, অবশ্যই মেয়েদের পর্দা করে ঘুরে বেড়ানো উচিৎ। কিন্তু শুধু পর্দা কি গভীর রাতে দুঃসম্পর্কের চাচার হাত থেকে রেপড হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে? বা ধরুন আপনি একজন মেয়ে, আপনি নিয়মিত পর্দা করে কলেজে যান, পাড়ার বখাটে মানিক প্রতিদিন আপনাকে উত্ত্যক্ত করে, বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এখন আপনি কি গ্যারান্টি দিতে পারবেন যে পর্দা করলেই মানিক আপনাকে রেপ করবে না?
ধরুন বাংলাদেশে সব কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী পর্দানশীল হয়ে গেল।
তার মানেই কি এই যে এখন আর মানিকরা সেক্সুয়ালি স্টিমুলেটেড হবে না? মেয়েরা রাস্তাঘাটে কতটুকুই বা খোলামেলা হয় আর তাদের দেখে আমরা কতটুকুই বা উত্তেজিত হই? টিভি খুললেই যেখানে অশ্লীল হিন্দি আর ইংরেজি সিনেমা, মোবাইলে মোবাইলে যেখানে সানি লিওনের উত্তেজক ভিডিও, সেখানে মেয়েদের পর্দা মানিকদের যন্ত্রকে উত্তেজিত হওয়া থেকে বিরত রাখতে কতটা হেল্প করবে?
আর উত্তেজিত হইলেই যে রেপ করতে হবে এমন কোন কথা আছে কি? আমি আপনি কি রাস্তাঘাটে খোলামেলা মেয়ে দেখি না? আমি আপনি কি হিন্দি আর ইংরেজি সিনেমার বিশেষ অংশগুলো চুরি চুরি করে দেখি না? সানি লিওন যে ধরণের ভিডিওর নায়িকা সেই ভিডিও কয়জন জীবনে একবারও দেখেন নাই? সংখ্যা খুব কম না হলেও বেশ কম।
আমি আপনি কি উত্তেজিত হয়েই রেপ করতে লাফিয়ে পড়ি? পড়ি না। উত্তেজনা প্রশমনের জন্য আমাদের নন-রেপিস্টদের রেপ করা লাগে না। আমরা বিবাহিতরা উত্তেজিত হলে বউয়ের কাছে যাই, অবিবাহিতরা ধৈর্য ধরার চেষ্টা করি, নাস্তিক বা মোটামুটি লেভেলের ধার্মিকরা মাস্টারবেট করে ফেলি, বেশি ধার্মিক হলেও হয়তো কালেভদ্রে মাস্টারবেট করে ফেলে স্রষ্টার কাছে ক্ষমা চাই, এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উপযুক্ত বউ চাই।
অনেকে রেফারেন্স দিয়ে বলেন যে ইসলামিক কান্ট্রিতে রেপ কম, কারণ মেয়েরা সেখানে পর্দা করে চলে।
হ্যাঁ, খুব ভাল কথা। কিন্তু আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন, পর্দা করা রেপ ঠেকানোর একমাত্র কারণ বা উপায় নয়। সেখানে নিশ্চয়ই এইসব হিন্দি ইংরেজি অশ্লীল মুভির প্রচার নেই বা কম, সানি লিওন বা এই জাতীয় মেয়েদের ভিডিও সেখানে কেউ দেখে না বা অনেক কম মানুষ দেখে, ধর্মভীরুতা যেটা কি না রেপ থেকে পুরুষকে দূরে সরিয়ে রাখে সেটা মানুষের মধ্যে অনেক বেশি, রেপের শাস্তি নিশ্চয়ই অনেক কঠোর।
তাহলে শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়াল? রেপের আসল কারণ কি "খোলামেলা মেয়ে দর্শনজনিত উত্তেজনা প্রশমন?", মোটেও না। এইটা পুরা ভুয়া একটা যুক্তি।
এই যুক্তি যারা দেখান তারা পারভার্ট, তারা সাইকো।
আমার কাছে রেপিস্ট আর খুনি একই ধরণের অপরাধী। খুনি বাইরের সত্ত্বাকে খুন করে, রেপিস্ট ভিতরের সত্ত্বাকে। দুজনের একই শাস্তি হওয়া উচিৎ। দুইটারই মৃত্যুদণ্ড।
ইটস সো সিম্পল।
রেপিস্টের একমাত্র সাজা মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা, অশ্লীল মুভির প্রচার পসার রোধ, পর্নোগ্রাফিক ভিডিও ও লিটারেচার আইন করে নিষিদ্ধকরণ, মানুষের মধ্যে ধর্মভীরুতা এবং নৈতিকতা আনয়ন, মেয়েদের পর্দা করা ইত্যাদির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আস্তে আস্তে রেপের মত একটা জঘন্য অপরাধকে আমাদের সোনার বাংলাদেশ থেকে তাড়াতে পারব। আর এ ব্যবস্থা যথা শীঘ্র না নিলে রেপিস্ট কুত্তাদের যন্ত্র নাড়াচাড়া করবেই, তারপর হয়তো একটা সুন্দর বিকেলে আপনার নিজের মেয়ে রেপড হয়ে হয়ে যাবে ইতিহাস। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।