অসাড় বিকলাঙ্গ হাতে অপার সুখের ছোঁয়ায় মগ্ন থাকি (কিছুক্ষণের মধ্যে এই পোস্ট প্রথম পাতা থেকে হাওয়া হবে)
১৯৮৭ সাল। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য “ঢাকা অবরোধ” আন্দোলন। চারিদিকে স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে উত্তাল আন্দোলন। আকাশে বাতাসে বিপ্লবীদের মুহুর্মুহু গর্জন। ২৫-২৬ বছরের এক টগবগে যুবক নুর হোসেন, পেশায় মোটর শ্রমিক,শিক্ষার দৌড় যার মাধ্যমিক পার হয়নি।
ফেসবুকের কোন ইভেন্ট বা মোবাইলের কোন মেসেজ নয়, দেশের টানে, দশের টানে নেমে গিয়েছিলেন রাস্তায়। শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে খোলা পিঠে লিখলেন “গণতন্ত্র মুক্তি পাক”। আর বুকে " সৈরাচারি নিপাত যাক"।
কি বুঝতেন তিনি গনতন্ত্রের? না, তিনি আমার আপনার মত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশাল সংজ্ঞা আর মনীষীদের বিশাল বই পড়েননি। স্বপ্ন দেখেন নি বিশাল কোন নেতা হবার।
গণতন্ত্র মানে স্বাধীন ভাবে কথা বলা,গনতন্ত্র মানে সাধারণ মানুষ, গনতন্ত্র মানে সরকারেরও জবাবদিহিতা এইটুকুই। তিনি বুঝেছিলেন গনতন্ত্র মানে স্বাধীনতার আরেক নাম। শহীদের মর্যাদা আমাদের দেশে বছরে ঐ একবার ফুল পাওয়া আর বইয়ের পাতায় কিংবা গণমাধ্যমের শিরোনামে।
হাহ! সেই গণমাধ্যম যার বাকস্বাধীনতাও আসে শহীদের রক্তে, যারা নিজের স্বার্থে রঙ্গিন সংবাদ দিয়ে দেশ ও জাতির সাথে নিয়মিত প্রতারণা করে চলেছে। হায়রে তিনি যদি দেখতেন গনতন্ত্র মানে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি? আমাদের দেশের মন্ত্রি আমলারা যে সুযোগ সুবিধা পান তারা কি বোঝেন তা ঐ শহিদদের রক্তের বিনিময়ে? আমাদের দেশের লেখকেরা কি বোঝেন তাদের ঐ কলমের কালি ঐ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ? বুঝলে পা চাটা স্বভাব বাদ দিয়ে কলমের ধারে ক্ষত বিক্ষত করতেন দুর্নীতিবাজদের।
আমাদের দেশের শিক্ষিত শ্রেণিতে দুর্নীতি বেশি। একজন চাষি বড়জোর এক মণ ধানে ২ কেজি (‼) দুর্নীতি করেন, আর ভদ্র বেশে কলমের খোঁচায় কয়েক থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করা শুধু একটি সই আর কয়েক ফালি কাগজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাদের গৌরবজ্জল ইতিহাস ভুলেছে। স্বাধীনতা বা জাতি গঠনে ছাত্র সমাজের ভুমিকা ২০ নাম্বারের রচনা ছাড়া আর কিছুই না। কে চায় আজ বিপ্লব করে নিজের জীবনকে ঐ খাতা কলমের বানাতে।
অবাক হলেও সত্যি আমরা আজ গাড়ি, বাড়ি, চাকরি, স্ত্রী বাদে ভবিষ্যৎ আর কিছুই চিন্তা করি না। কম্যুনিস্ট বিপ্লবি মানে আজ চে গুয়েভারার গেঞ্জি, ঝাঁকড়া চুল, মুখে বেন্সন, আর মোবাইলে “ ডার্লিং, এইত আমি মিটিং করি”। পাশে ভিখারি ভিক্ষা চাইলে দুই চারটা সুবচন। ওরে আর কত মিটিং সিটিং করবি বলতে পারিস? বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর বদলে বীর (!)বাঙ্গালি কিবোর্ড ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন কর নীতিতে বিশ্বাসী হয়েছি অনেক আগেই। গণতন্ত্র মানে ইউটিউব দিনের পর দিন বন্ধ করে রাখা? শহিদ নুর হোসেনও পারতেন আপনার আমার মত ঘরে বসে থাকতে, রঙ্গিন স্বপ্নে বিভোর হয়ে অনলাইনে চেঁচামিচি করতে কিংবা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটা দেশের জন্য বরাদ্দ করতে।
সম্ভব নয়, তবুও স্বপ্ন দেখি আবার এক নুর হোসেন রাস্তায় নামবে বুকে লিখে “ গনতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচারী নিপাত যাক। ”
(এটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক পোস্ট। কারো আতে ঘা লাগলে তা সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্ব। কারো জোশ আসলে দুই চারটা স্ট্যাটাস আর পোস্ট দিয়া লজ্জা নিবারণের চেষ্টা করিতে পারেন)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।