কিছু লিখতে চাই। তাই এই পেজ।
তার নাম শুনেছিলামর ছোটবেলা থেকেই কিন্তু ৬৫ বছর বয়সী আমেরিকান এই অভিনেতার প্রতি আমার প্রথম ভালবাসা কুংফু পান্ডা মাস্টার শিফুর ভোকাল এর ক্রেডিট পড়ে। পরে তার আরো ছবি দেখা হয়ে যায়। ধীরে ধীরে জানতে পারি এই বড় মাপের অভিনেতা প্রসঙ্গে।
ভালবাসা বেড়ে শ্রদ্ধার স্তরে গিয়ে পৌঁছায়। দু বার একাডেমি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি। সাথে আছে ৫ বার গোল্ডেন গ্লোব, ৪ বার বাফটা, তিনবার ড্রামা ডেস্ক। পেয়েছেন এএফআই লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট। তার উল্লেখযোগ্য ছবি গুলো হচ্ছে – প্যাপিলন, ম্যারাথন ম্যান, মিডনাইট কাউবয়, লিটল বিগ ম্যান, অল দ্য প্রেসিডেন্টস ম্যান, ক্রামার ভার্সেস ক্রামার, টুটসি আর রেইনম্যান।
ডাস্টিন জন্মেছিলেন লস অ্যাঞ্জেলস এ ১৯৩৭ সালের ৮ই আগস্ট। বাবা হ্যারি হফম্যান ছিলেন কলম্বিয়া পিচচার্সের সেট সেট ডেকোরেটর। ডাস্টিন লস অ্যাঞ্জেলস হাই স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করা পরে সান্টা মনিকা কলেজে চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। সেটি শেষ না করেই পেশাদারি থিয়েটারে যোগ দেন তিনি। সেই থেকেই অভিনয় জীবনের শুরু।
১৯৫৬ থেকে ১৯৬৬ সাল নাগাদ পুরোদমে স্টেজ পারফরমেন্স করেছেন ডাস্টিন। মাঝে দুটা তিনটা টেলিভিশন মুভি ও টেলিভিশন শোও করেছেন তিনি। ১৯৬৭ সালে প্রথম ছবি দ্য টাইগার মেকস আউট।
যে সব গুরুত্বপূণ চরিত্রে আমরা ডাস্টিনের অনবদ্য অভিনয় দেখেছি তা হলো-
১৯৬৭ সালে দ্য গ্রাজুয়েট। এই ছবির জন্য ডাস্টিন অ্যাকাডেমি আওয়ার্ড নমিনেশন পেয়েছিলেন।
আমাদের দেশে পুরস্কার প্রাপ্তরা সাধারণত জনপ্রিয়তার মুখ দেখেনা, হলিউড তো আর সেই রকম না। তাই এই ছবির পরই ডাস্টিন হলিউডের অন্যতম প্রধান তারকা হয়ে যান। এর পর পরই মুক্তি পায় ম্যাডিগানস মিলিয়ন। ছবিটা যদিও গ্র্যাজুয়েটের আগে শূট হয়েছিল। ম্যাডিগান মিলিয়ন বক্স অফিসে ব্যর্থ্ও হয়।
১৯৬৯ তে মিডনাইট কাউবয়। ডাস্টিনের আরেকটি মাস্টারপিস। ছবিটির র্যা টসো রিজো চরিত্রে অভিনযের জন্য অস্কার নমিনেশনও পান তিনি। পুরস্কার তিনি না পেলেও ছবিটি সেরা ছবির পুরস্কার জিতে নেয়।
১৯৭০ এ লিটল বিগ ম্যান।
যেখানে ডাস্টিন জ্যাক ক্র্যাব নামক চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করে সমালোচকদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রসংশা অর্জন করে। কিন্ত এই ছবিটি কেন যেন পুরস্কার দেনে ওয়ালাদের নজরে পড়েনি।
১৯৭১ সালে করা ছবিটির নামটি একটু বড় – হু ইজ হেনরি কিলারম্যান অ্যান্ড হোয়াই ইজ হি সেইং দোস টেরেবল থিংস অ্যবাউট মি। ছবিটিতে মেজর রোলে অভিনয়ে করেছিলেন হফম্যান। এর পর একে একে স্ট্র ডগস(১৯৭১), প্যাপিলন (১৯৭৩), ল্যানি(১৯৭৪) ।
এই ল্যানি ছবির জন্য আবার ৭ বছর পরে অস্কারের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল ডাস্টিনকে। তিনি পেয়েছিলেন সেরা অভিনেতার মনোনয়ন।
১৯৭৬ সালে অল দ্য প্রেসিডেন্ট ম্যান ছবিতে রবার্ট রেডফোর্ড এর সাথে মিলে ওয়াটার গেট স্ক্যান্ডাল এর রহস্য খুঁজে বেরিয়েছেন।
এই ৭৬ এই উইলিয়াম গোল্ডম্যান এর উপন্যাস থেকে ম্যারাথন ম্যান ছবিতে অভিনয় করেছেন এই ম্যারাথন অভিনেতা। সাথে কে ছিলেন জানেন, স্যার লরেন্স অলিভিয়ার।
পরের দুটো কাজ তেমন জমেনি। স্ট্রেইট টাইম (১৯৭৮) আর অ্যাগাথা(১৯৭৮)। তার পরেই আবার বাজিমাত করলেন ডাস্টিন হফম্যান। ১৯৭৯ সাথে ক্রামার ভার্সেস ক্রামার ছবির জন্য প্রথম সেরা অভিনেতার অস্কার। সেই সাথে ছবিটি ও সহ অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ জিতে নেন অস্কার।
এর পরে ১৯৮২ সাথে টুটসি ছবির জন্য আবার অস্কার নমিনেশন। এটি ছিল হফম্যানের ৫ম নমিনেশন। ছবিটি মোট ১০টি ক্যাটাগরিতে নমিনেশন পেয়েছিল। ১৯৮৪ সালে আর্থার মিলার এর নাটক ডেথ অফ এ সেলসম্যান এর চলচ্চিত্রায়নে উইলি লোম্যান হিসাবে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এটি টিভি মুভি হিসাবেও নির্মিত হয়েছিল।
এর জন্য অ্যামি আওয়ার্ড লাভ করেন তিনি, পাশাপাশি গোল্ডেন গ্লোবও জেতেন।
ডাস্টিনের জীবনে সবচেয়ে ব্যর্থ ছবি হিসাবে গন্য ইস্থহার ছবিটি এর পরে, ১৯৮৭ সালে। ওয়ারেন বেটির সাথে করার এই ছবিটি তিনটি র্যা জ্জি অ্যাওয়ার্ডেও নমিনেশন পেয়েছিল। উল্লেখ্য র্যা জ্জি আওয়ার্ড জঘন্যতম ছবি গুলোকে পুরষ্কার দেয়ার আসর।
এর পরে ১৯৮৮ সালে এল বিখ্যাত রেইন ম্যান ছবিটি।
যেখানে ডাস্টিন একটি অটিস্টিক চরিত্রে অভিনয় করে জিতে নেন ২য় অস্কার।
এর থেকে ২০১২ সাল পরযন্ত মানে অদ্যাবধি যেসব ছবিতে অভিনয় করেছেন সেগুলোর মধ্যে অনুল্লেখযোগ্য দু একটি বাদ দিলে বাকী গুলো হলো - ফ্যামেলি বিজনেস, ডিক ট্রেসি, হুক, আউটব্রেক, আমেরিকান বাফেলো, স্লিপার, ম্যাড সিটি, ওয়াগ দ্যা ডগ, স্পিহার, মুনলাইট মাইল, ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ডস, মিট দ্যা ফোর্কাস, পারফিউম, দি লস্ট সিটি, স্টেঞ্জার দ্যান ফিকশন, লাস্ট চান্স হারভি, বার্নিস ভার্সন, লিটন ফোর্কাস।
এ ছবিগুলো দর্শকদের ডাস্টিন ক্ষুধা মিটিয়েছি পুরোদমে। সেই সাথে পুরস্কার মহলেও পেয়েছে অনেক অর্জন। যেমন এগুলোর মধ্যে হুক এর জন্য গোল্ডেন গ্লোব নমিনেশন, ওয়াগ দ্যা ডগ এর জন্য অস্কার নমিনেশন, মিট দ্যা ফোর্কাস এর সিকুয়েল এর জন্য এমটিভি অ্যাওয়ার্ড, কুংফু প্যান্ডার জন্য অ্যানি অ্যাওয়ার্ড, লাস্ট চান্স হার্ভির জন্য গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড নমিনেশন, বার্নিস ভার্সন এর জন্য ভ্যানকুভার ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এই মেধাবী অভিনেতা।
বাংলাদেশেও অনেকের কাছে ডাস্টিন হফম্যান প্রিয় অভিনেতা। যারা এখনো দেখেন ডাস্টিনের অভিনয়ের জাদু, তাদের বলি ডাস্টিন হফম্যান দেখা শুরু করে ফেলেন আজি। নোট বই এর মত আমি একটু সাজেশন দিতে পারি, যারা খুব বেশি ছবি দেখার সময় পান না তাদের একান্তই আমার মতামত। প্রথমে এই সাতটি ছবি দিয়ে শুরু করুন-গ্রাজুয়েট, লিটল বিগ ম্যান,মিডনাইট কাউবয়, ম্যারাথন ম্যান, ক্রামার ভার্সেস ক্রামার, টুটসি, রেইনম্যান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।