মেয়েটার কিছুতেই ঘুম আসছে না। বিছানায় শুয়ে শুয়ে আকাশ- পাতাল ভাবছে। কামরাঙ্গা গাছ থেকে বাদুড়ের পাখা ঝাপটানোর শব্দ আসছে। বিছানা থেকে উঠে মেয়েটা আলগোছে জানালা খুলে দেয়। তার ভয় হয়;- মা জেগে যাবে।
জানালা খুলার শব্দে বাদুড়গুলোও যেন ভয় না পায়- এটাও সতর্কতার কারন।
এটা কোন মাস;- মেয়েটা মনে করতে পারেনা। দুত্তোরী! ভাদ্র- আশ্বিনে কী আসে যায়! মেয়েটা বিরক্তি ঝাড়ে। কামরাঙ্গা গাছের এক ডাল থেকে আরেক ডালে বাদুড়গুলো উড়াউড়ি করছে। বাদুড়গুলো কেমন অদ্ভুত! মেয়েটা ভাবে- সে যদি বাদুড় হতো।
পেটটা মুচড় দিয়ে উঠে। মেয়েটা কষ্টে-সৃষ্টে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে জানালার সামনে বসে পড়ে। সে যদি বাদুড় হতো- অন্ততপক্ষে এই কষ্ট ভোগ করতে হতো না। মেয়েটার কাঁদতে ইচ্ছা করে;- কিন্তু কান্না আসে না। সে তার পেট স্পর্শ করে।
পেটের উপর দিয়েই লিভার খুঁজার চেষ্টা করে। তার লিভার কি আসলেই ড্যামেজ হয়ে গেছে! সে কি সত্যিই মরে যাবে? মেয়েটার বিশ্বাস হয় না।
ঈদের পরই তো তার বিয়ে হওয়ার কথা। এই এক মাসে কত স্বপ্ন দেখেছে। ঠিক করে রেখেছে, কোন এক জোছনা রাতে বর-কে নিয়ে চুপিচুপি খোলামাঠে বসে সারারাত জোছনা দেখবে।
এমন কি একটা বাবু-র ও স্বপ্ন দেখেছে। মেয়েটা আর ভাবতে পারেনা।
-না তার বিয়ে হবে। মেয়েটা নিজেকে আশ্বস্ত করে। পেটের ভিতর আবার মুচড় দিয়ে উঠে।
হাজারটা বাদুড় যেন পেটের ভিতর কিচির মিচির শুরু করছে- যেন এখনই পেট ফুঁড়ে বের হয়ে উড়তে শুরু করবে। মেয়েটা চেয়ার থেকে উঠার চেষ্টা করে। কিন্তু পারে না। রাতের নৈ:শব্দকে খানখান করে প্রচন্ড শব্দে মেঝেয় পড়ে যায়।
বাদুড়গুলো ডানা ঝাপটিয়ে শুন্যে উড়া দেয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।