আমি অনেক কিছু সাহস করে বলতে চেয় ও বলতে পারি না যখন দেখি আমার পাশের মানুষ গুলো পিছু হটে যায়... যখন দেখি সবাই নিজেকে নিয়ে অনেক বেশি ভাবে,তাই আমি ও কিছু বলতে চাই আমার প্রিয় ব্লগে... সজোরে আওয়াজ তুলতে চাই আমার ভালো লাগা লেখনি দিয়ে চীন নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার আগ্রহ আদি ও অন্তহীন। চীনের চিকিৎসাব্যবস্থা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, বিজ্ঞান থেকে শুরু করে যৌনতা—সবকিছু নিয়ে পশ্চিমাদের মাতামাতি ক্রমে বেড়ে চলেছে।
অতি উৎসাহের জের ধরে চীনাদের সবকিছুকে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে উপস্থাপন করতেও কসুর করেনি পশ্চিমারা। উলটো দৌড়ে পিছিয়ে নেই চীনারাও। কয়েক দশক ধরে নিজেদের পশ্চিমা কায়দায় সাজাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীনারা।
তবে সেটি নিজেদের স্বাতন্ত্র্যকে ধরে রেখে। এরই অন্যতম নিদর্শন হলো গত সপ্তাহে চীনের গুয়াংজোউ প্রদেশে হয়ে যাওয়া ‘যৌনতার মেলা’।
‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর খবরে গতকাল সোমবার বলা হয়, দশম জাতীয় যৌন সংস্কৃতি উৎসবে দর্শক ছিল প্রায় ৩০ হাজার। এ বিপুলসংখ্যক দর্শক মেলায় উপভোগ করেছে নৃত্যশিল্পীদের নাচ, কিনেছে ০০৭ ব্র্যান্ডের জন্মনিরোধ আর ঘেঁটে দেখেছে হাজার হাজার যৌনতা-সম্পর্কিত পুস্তক, পত্রিকা ও চলচ্চিত্র।
মেলায় আসা দম্পতিরা বিভিন্ন পুতুল ও মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে খুশিমনে ছবি তুলেছেন।
যৌনপুতুলও কিনেছেন অনেকে।
একজন বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, মেলায় এক লাখ ইউয়ান বা প্রায় ১৩ লাখ টাকায় স্বর্ণের তৈরি ‘মজার বস্তু’ও বিক্রি হয়েছে। এ ধরনের জিনিস সাধারণত লুই ভিটন বা ডলসে অ্যান্ড গাব্বানার মতো বাহারি পোশাকের দোকানে বিক্রি হয়।
মেলায় পশ্চিমা কেতায় হাজির করা হয় অর্ধনগ্ন নারী মডেলদের। এদের ছবি তুলতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল পুরুষ দর্শকদের মধ্যে।
কিন্তু, কাউকে দেখে মনে হয়নি, এরা এসব মডেলদের বাঁকা চোখে বা ভ্রু কুঁচকে দেখতে চায়। এ থেকে প্রমাণ হয়, যৌনতা নিয়ে পুরোনো দিনের রক্ষণশীলতা এবং আধুনিককালের যৌনতা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চীনে সমানতালে চলছে।
উৎসবের অন্যতম অংশগ্রহণকারী ৭৮ বছর বয়সী মা জিয়ান বলেন, ‘চীনের আছে প্রায় দুই হাজার বছরের যৌনতার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও দক্ষতা। এর এমন যৌনতার অভিজ্ঞতা আছে, যা পশ্চিমা দেশগুলোর নেই। এখানে উপস্থিত দর্শক ও ভিনদেশি মানুষদের মধ্যে আমি এসব অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতে চাই, যাতে সবাই মানুষ হিসেবে সুখী হতে পারে।
’
যৌনতা-সম্পর্কিত পুস্তকের লেখক মা জিয়ান আরও বলেন, ‘আমি চাই সব নারী এ থেকে উপকৃত হোক। যারা তিন মিনিটেই সব শেষ করে ফেলেন, তাদের আমি শেখাতে চাই কীভাবে এসব ৩০ মিনিট পর্যন্ত চালাতে হয়। এটাই যথেষ্ট। ’ তিনি জানান, ১০ বছর ধরে তিনি গোপনে এসব নিয়ে কাজ করছেন।
জিয়ান বলেন, তিনি বড় হয়েছেন এমন এক সমাজে যেখানে যৌনতাকে অবদমন করা হয়।
মাও সে তুং নিজেই হয়তো অনেক নারীর সংসর্গে মেতেছেন, কিন্তু তাঁর সময়েও নারী-পুরুষের সম্পর্ককে স্বাভাবিক চোখে দেখা হতো না। জনসম্মুখে দুজন নারী-পুরুষ হাতধরাধরি করে দাঁড়িয়ে আছে, এমনটা ভাবা যেত না। আশির দশকেও দেখা গেছে, যৌনবস্তু রাখার দায়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।
মা জিয়ান সম্প্রতি চীনের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সভায় উপস্থিত লোকদের পরামর্শ দিয়েছেন, সাঁতার কাটা যৌনতাড়না বাড়ায় ইত্যাদি।
উৎসবের আয়োজক কমিটির উপপরিচালক জু জিয়ানমিং বলেন, ‘এখানে অনেক অভিবাসী শ্রমিক আছেন।
এরা হয়তো বছরে দু-একবার বাড়িতে যেতে পারেন। তাদের জন্য এসব খেলনা ব্যবহার নিরাপদ। ’
তবে চীনের সমাজে এখনো অনেক দ্বিধা আছে। চীনে যৌনকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ হলেও দেশটির চলচ্চিত্রে নগ্নতা নিষিদ্ধ। বছর দুয়েক আগে নিজ বাড়িতে যৌনভোজের আয়োজন করায় এক ব্যক্তির কারাদণ্ড হয়েছে।
কয়েকজন নারীর সঙ্গে অবৈধ যৌন সম্পর্ক রাখার দায়ে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বো ঝিলাইকে কয়েক সপ্তাহ আগে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
চীনের যৌনতার ইতিহাস নিয়ে ‘বিহাইন্ড দ্য রেড ডোর’ শিরোনামের একটি বই লিখেছেন রিচার্ড বার্গার। তিনি বলেন, ‘সেখানে এখনো মানুষ কয়েকজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রাখাকে বাঁকা চোখে দেখে। অথচ দেশটিতে প্রায় দুই লাখ যৌন খেলনার দোকান আছে। খোলামেলা যৌনতার বহিঃপ্রকাশও আছে।
তাহলে যা হচ্ছে সেটিকে কী বলা যায়—যৌনতার ব্যাপারে বিনয়ী, নাকি খুব বেশি স্বাধীনতা। ’
বার্গার বলেন, হাজার হাজার বছর ধরে চীনের রাজা ও নেতারা যৌনতা নিয়ে দ্বিধার মধ্যে ছিলেন। তাং রাজত্বের সময় গণিকা নিবন্ধন হয়েছিল, মিং রাজত্বের সময় যৌনতার কাহিনি লিপিবদ্ধ হয়েছে। কখনো কখনো সমকামিতা উদযাপিত হয়েছে, আবার কখনো যৌনতা সম্পর্কিত বইপত্র জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোতে যেমন করে যৌনতা নিয়ে একরকম বিপ্লব হয়ে গেছে, তেমনটি হয়নি চীনে।
সেখানে বিটলসের মতো কোনো ব্যান্ড বা লেডি চ্যাটারলিস লাভারসের মতো কোনো উপন্যাস লেখা হয়নি, বরং সমাজ সংস্কারে এগিয়ে এসেছে দেশটির কমিউনিস্ট পার্টি।
যৌনতা বিষয়ে অন্যতম বিশেষজ্ঞ এবং চীনের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্যান সুইমিং বলেন, ‘সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পর সরকারের নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে যায়। এ সময় এক সন্তাননীতির মধ্য দিয়ে যে বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলো মানুষের যৌনতার লক্ষ্য কেবল সন্তান উৎপাদন নয়, বরং উপভোগ করাও। ’
আরেক গবেষক লি ইনেহ বলেন, ‘নারীরা যৌনতা ভালোবাসতে পারে, তা আগে মেনে নেওয়া হতো না। যৌনতার লক্ষ্য ছিল হয় সন্তান উৎপাদন অথবা পুরুষের সেবা করা।
অথচ এখন তারা যৌনতা উপভোগ করতে পারছে। ’
তবে এ বিপ্লবের প্রভাব কী হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। উৎসবের আয়োজক কমিটির উপপরিচালক জু জিয়ানমিং বলেন, এ নিয়ে অযথা উৎকণ্ঠিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে তিনি নিজে এতটুকু শঙ্কিত যে উৎসবের প্রভাবে কেউ কেউ পশ্চিমা কেতায় যৌনতায় ডুবে যেতে পারে বা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, যৌনতার পসরা সাজানো তাঁদের উৎসবের লক্ষ্য, বরং সমাজে যৌনতা নিয়ে নৈতিকতা এবং ইতিবাচক সম্পর্ক উৎসাহিত করাই এর উদ্দেশ্য।
আরো বিস্তারিত জানতে আমরা তাদের ওয়েবে বিভিন্ন তথ্য ও ছবি দেখতে ক্লিক করুন ঃ View this link
সম্পূর্ণ লেখাটি ইন্টারনেট থেকে কপি পেস্ট করা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।