সেই কবে ঈদ ব্লগ দিয়েছিলাম সে আজ দুবছরেরও বেশী হতে চললো। এরপর নীলুমনি যাও বা একটা দুটো ঈদ খানাপিনা সাজুগুজু পোস্ট দিলো আর কেউ তো দিলোই না। কি আর করা। ঈদ সে রোজার ঈদই হোক আর কোরবানীরই হোক। ঈদ তো ঈদই আর ঈদ মানেই আনন্দ।
তবে অনেকেই বলে সেই ছোটবেলার মত আর ঈদের নাকি মজা নেই। আমার কিন্তু তেমনটা মনে হয়না। ঈদ সে আবার ছোটবেলা বড়বেলা কি আর তাই আমি আজও এই বড়োবেলা বা বুড়িবেলাতে এসেও মোহোৎসাহে লেগে যাই ঈদ কে ঈদ ঈদ বানিয়েই ছাড়তে।
ঠিক সে কারনেই ঈদের আগের দিন রাতে বসে গেলাম ঈদ স্পেশাল চকলেট কেক বানাতে।
এক কাপ ময়দা
এক কাপ চিনি ও ৪ টা ডিম
এক চা চামচ বেকিং পাউডার
এক চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স
দুই টেবিল চামচ গুড়া দুধ
আধা কাপ কোকো পাউডার
একটা বড় মাখন
একটা এগ বিটার আর একটা ওভেন।
ব্যাস হয়ে গেলো কেক। তবে তার আগে ময়দা, দুধ আর বেকিং পাউডার শুকনা অবস্থায় মিলিয়ে রাখতে হবে। আর ডিমের সাদা অংশ বিট করে ফেনা তুলে হলুদ অংশ আর চিনি দিয়ে বিট করতে হবে। এর পর ময়দা দুধ আর বেকিং পাউডারের মিশ্রনটা মেশাতে হবে । এখন ভ্যানিলা এসেন্স মিশাতে হবে।
এর পর কোকোপাউডার মিশিয়ে দিতে হবে। সবশেষে গলানো মাখন মিলিয়ে নিয়ে মাইক্রো ওভেনে হাই পাওয়ারে ৬ মিনিট। ওহ সব মিশামিশির কাজ করতে হবে এগ বিটার দিয়ে নইলে হাতে করলে ইনশাল্লাহ বাজে হবেই।
যাই হোক ৬ মিনিট পর হয়ে গেলো ব্রাউন, ফ্লাপি চকলেট ব্রাউন কেক। এরপর ডিশ থেকে নামিয়ে আমি তাতে আমার প্রিয় কোয়ালিটি স্ট্রিট চকলেট কুচি কুচি করে কেটে কেটে ছড়িয়ে দিয়েছি! বাহ একদম অপ্সরীয়া স্পেশাল কেকের মতই লাগছে তো!!!!!!!!!!
কোকোপাউডারটুকু বাদ দিয়ে প্রায় একই পদ্ধতিতে বানিয়েছি মার্বেল কেক।
ছড়িয়ে দিয়েছি চারপাশে কাটা টুকরো ফল, মানে অকারণেই আর কি কেকটাকে সাজুগুজু করানোর জন্য আর একটু স্পেশাল ভাব আনার জন্য।
এরপর ঈদের সকাল আর সকাল সকাল মোগলাই পরোটা বানাবার প্রস্তূতি। (নীলুমনি দেখে নাও কিভাবে বানায় মজাদার মোগলাই)এইভাবে রাতে তেলে চুবিয়ে রাখা খামিরাটাকে টেনে টুনে পাতলা করে রুটির মতো করে নিয়ে তাতে কিমা, ডিম, পেয়াজ,মরিচকুচি, ধনেপাতা দিয়ে বানিয়ে ফেললাম মজাদার ইয়াম্মী মোগলাই।
সকালের খাবারের মেন্যুটা ছিলো এমনই! মোগলাই পরোটা, দু রকম কেক আর স্পেশাল জর্দা।
আর দুপুরে স্পেশাল কাচ্চি বিরয়ানী বানাতে গিয়ে বানিয়ে ফেললাম স্পেশাল কাচ্চি বিরিয়ানী ঘাটি।
কি আর করা সবসময় কি সবখানে পাসমার্ক পাওয়া যায়। ! তাতে কি ঘাটি হলেও খেতে খারাপ হয়নি কিন্তু তেমন। সবাই বানায় স্পেশাল কাচ্চি বিরিয়ানী আর আমারটা হলো মাছের মুড়োঘন্টের মত কাচ্চি ঘন্ট!
এরপর রাতে ভুনা খিঁচুড়ি আর কোরবানির মাংসের হাড়িয়া কাবাব আর গরুর মাংস রান্না। এটা ছিলো ডাবল স্টারমার্কস পাওয়া।
ভুনা খিঁচুড়ি
হাড়িয়া কাবাব
গরুর ঝাল মাংস
এই স্পেশাল ভুনা খিচুড়ি আর হাড়ি কাবাবের রেসিপি কেউ চাইলে দিয়ে দেবো!
ঈদের পরদিন সকালবেলা
নানরুটি,গরুরমাংস, খাসীর রেজালা, সালাদ আর মিষ্টি ( সকালের নাস্তার গেস্ট ছিলো অবশ্য)
নানরুটি
গরুর মাংস
খাসীর মাংসের রেজালা
সালাদ
কলকাতা থেকে গেস্টের আনা হলদিরামস মতিচুর লাড্ডু আর শোনপাপড়ি!:
মতিচুর লাড্ডু
শোনপাপড়ি
আমাদের ঢাকার রসের মিষ্টি
মাংস আর মাংস আইটেম খেয়ে খেয়ে টায়ার্ড! তাই দুপুরের মেন্যু ইলিশমাছ ভাজা, সাদাভাত আর ডাল!
ইলিশ মাছ
ভাত, ডাল আর ইলিশমাছহ ভাজা, কাঁচা পেয়াজ মরিচ
রাতে নানুবাসায় ঈদ উৎসব পার্টি ছিলো তাই নো খানাপিনা এ্যট হোম!
পরদিন সকালে
চালে ডালে খিঁচুড়ি আর ইয়াম্মী ইয়াম্মী মাংসের ঝুরি ভাজা! সাথে জলপাই আচার!
পরদিনের সকালের নাস্তা- পায়া আর নানরুটি।
ইয়াম্মী ইয়াম্মী!
আর এমনি এমনিই বানিয়েছি ডোনাটস!
এই ছিলো পোস্ট লেখা শুরু করার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত খানাপিনা রান্নাবান্নার এবছরের ঈদ স্পেশাল কিছুমিছু! অবশ্য আরও কিছু আইটেম এক্সিপেরিমেন্ট বাকী আছে এখনও! শামীকাবাব,নেহারী,হান্টার বিফ,পাক্কী বিরিয়ানী ইত্যাদি,ইত্যাদি ও ইত্যাদি! যদিও পাক্কী বিরিয়ানী রন্ধনের জন্য পাক্কী বাবুর্চিকেই ভরষা করা হয়েছে! নতুবা বাসার মানুষজনের ধারণা কাচ্চি ঘন্টের মত আমি নাকি যেকোনো মুহুর্তেই পাক্কী ঘন্টও বানিয়ে ফেলার মত কৃতিত্বও অর্জন করতে পারি!
যাইহোক এই পাক্কী বিরিয়ানী খাবার গেস্টগুলোও স্পেশাল! আমাদের প্রতিবেশী এতিমখানার অতি আদরের ছোট্ট ছোট্ট বাবুগুলো! কাজেই নো মোর এক্সপেরিমেন্ট দিস টাইম! আমি বরং ওদের জন্য আরও কিছু চকলেটকেকই বানিয়ে দেবো! এইকাজে আমিই স্পেশালিস্ট!
যাইহোক রিমঝিমনি, সালমামনি এরা নিশ্চয় মনে মনে ভাবছে পোস্টের শিরোনামের খানাপিনা, রান্নাবান্না কাটুমকুটুম(গেস্ট) সবার কথাই তো হলো তাইলে সাজুগুজু কোথায় গেলো?
এটা রান্নাবান্না করে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে সাজুগুজু করে কাটুমকুটুমদের জন্য ওয়েট করা( অবশ্য একটু মডেলিং স্টাইল দেবার চেষ্টা করেছি)।
ঐদিকে অতিথিরা বসে আছেন আর এই দিকে ......কল্লাকাটা পেত্নী
সবাইকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা........)
আর আমার এই স্পেশাল পোস্টখানি উৎসর্গ করছি কিছু স্পেশাল পিচ্চিপাচ্চা আর ভাইয়ামনি আপুনিদেরকে ..........
অপু তানভির আমার আদরের গল্পকারভাইয়া,
ফাহিম আহসান ( আমি সাজিদভাইয়া)
সালমা হ্যাপীমনি,
নীল দর্পনমনি,
রিমঝিমনি,
ফায়সাল ফারুখ তুর্য ভাইয়া,
গাধাভাইয়া,
সুমন ভাইয়া,
রাতুলশাহভাইয়া
তামিমভাইয়া,
বিরোধীদলভাইয়া,
জেমসবন্ডভাইয়া
শাহাদাৎ তন্ময়ভাইয়া,
শহিদুল কবিভাইয়া,
আরমান ভাইয়া,
স্বর্ণামনি,
আলাউল সৌরভ ভাইয়া,
সাইফুল ইসলাম সজীবভাইয়া
কাল্পনিক ভালোবাসা ভাইয়া,
আমার একটা পেটুকভাইয়া অনন্ত দিগন্ত,
রাশেদ হাসান নোবেলভাইয়া,
পলি আগোরা আপুভাইয়া
হিমু নায়েল ভাইয়া,
দলছুট শুভভাইয়া,
আমার কলিজার টুকরা ফয়সাল আলমভাইয়া,
ছুটি আপুনি,
তন্ময় ফেরদৌসভাইয়া,
লিনকিন পার্কভাইয়া,
সায়েম মুন ভাইয়া,
চেয়ারম্যানভাইয়া,
যাযাবরভাইয়া,
অরুনাভ ভাইয়া,
গাব্রিয়েল সুমন অসাধারণ এক কবিভাইয়া
সবাই ভালো থাকুক, আনন্দে থাকুক অনেক অনেক!!! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।