আমি যা বিশ্বাস করি না... তা বলতেও পারি না! আগামীকাল পবিত্র ঈদ-উল-আযহা!
ঈদের নামাজের সময় খুৎবা পাঠ করা হয়। খুৎবা পাঠ করা হয় জুম্মার নামাজের আগেও। খুৎবা শোনা ওয়াজিব...
আমি বিজ্ঞজনদের কাছে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে জানতে চাই- যে খুৎবার ১টা লাইনও আমি বুঝলাম না,
সেটা শুনে আমার ওয়াজিব আদায় হয়তো হল; কিন্তু সেটার ওপর আমি কী আমল করব? আর আমলবিহীন জ্ঞানের মূল্যই বা কী?
আমি এই কথাটা বললাম কারণ আমার জানা মতে- প্রবিত্র কোরআন শরীফে সুরা- আন-নিসা এর ৪৩ নং আয়াতের প্রথমাংশে বলা হয়েছে-
"হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্থ থাক, তখন নামাযের ধারে-কাছেও যেও না, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ..."
আমার যুক্তি হল যেখানে আল্লাহ বলেছেন- "...নামাযের ধারে-কাছেও যেও না, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ..." সেখানে আমরা
জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নামাজ পরছি পুরোপুরিই 'যা বলছি' তার কিছু 'না বুঝে'!!!
আমি শুনেছি- আরব দেশগুলোতে নামাজের পর ওরা 'দোয়া পাঠ' খুব একটা করে না! কারণ, পুরো নামাজটাই নাকি দোয়া!!! কথাটা শোনার পর আমি
নামাজের কথাগুলোর বাংলা অর্থ জানার চেষ্টা করেছি... দেখে অবাক হলাম- আসলেই তাই! শুধু সুরা- ফাতিহা-এর অর্থটাই দেখুন- প্রথম চার আয়াত
আল্লাহর গুণ-গান আর শেষের তিন লাইন পুরোটাই প্রার্থনা!
সুরা- আল ফাতিহাঃ
“পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। ”
১. সকল প্রশংসা আল্লাহ্ তা’আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।
২. যিনি দয়াময় ও পরম দয়ালু।
৩. যিনি বিচার দিবেসর মালিক।
৪. আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি এবং শুধু তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
৫. আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,
৬. তাদের পথ যাদেরকে তুমি আনুগ্রহ দান করেছ।
৭. তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হেয়েছ এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
...এজন্যই আরবীয়রা নামাজ পড়ে এতো বেশী আবেগ-আপ্লুত হয়! আর আমরা ইমামের পেছনে নামাজে দাঁড়িয়ে দুনিয়ার হাবিজাবি চিন্তা করি!
এতো কেঁদে-কুটে দোয়া করি- কিন্তা মনে শান্তি আসে না! ইসলাম শান্তির ধর্ম- অথচ মধ্যপ্রাচ্যের আরবী ভাষা-ভাষী কয়েকটা দেশ বাদে
অন্য সব মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে শান্তি নাই!!!
এখন এর সমাধান কী? সব মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মাতৃ ভাষা বাধ্যতামূলক আরবী করা? সবাইকে বাধ্যতামূলক কোরআনের হাফেজ বানানো?
না! বরং আল্লাহ অন্য একটা আয়াতে বলেছেন- "আমি আল-কোরাআনকে আপনার ভাষায় প্রেরণ করেছি, যেনো আপনি তা বুঝতে পারেন..."
তাই সকল ধর্মীয় নেতা/ইমাম/মুফতিদের অনুরোধ করছি- কোরয়ানের হাফেজ নয় বরং কোরআনকেই আমজনতার কাছে সহজবোধ্য করে তুলুন...
অর্থ না বুঝে ৩০পারা আরবী বুলি মুকস্ত করে কোন ফায়দা সমাজের হচ্ছে তা দেখতে পাচ্ছি না! "কোরআনের হাফেজ" নয়, "কোরআন শিক্ষা"কে
ফরজ করা হয়েছে! তাই অন্তত ১টি লাইন বুঝে সেটাই আমল করি।
শান্তির ধর্মে শান্তি আসবে- এই আমাদের হাত ধরেই...
...সবাইকে শুভ কামনা ও ঈদ মোবারক!!!
[ইহদিনাস সিরাতুল মুস্তাকিম... (হে আল্লাহ!) আমাদেরকে সরল পথ দেখাও...]
- সফিক এহসান
(২৬/১০/১২ ইং) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।