আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

88vuth : একটি ন্যাচারাল জটলা....

আনন্দের মাঝে থাকতে ভালবাসি, ভালবাসা খুজে বেরাই........ সময়টা ছিল রমজানের ঈদ এর ঠিক পর পর তাই প্রায় সকল বন্ধুদেরই ছুটি। এমন সময় সবার সাথেই কিছু ভাল সময় কাটছিল। তো একদিন সন্ধায় আমি বসে বসে ফেইসবুক চালাচ্ছি, এমন সময় আমার মোবাইলে ক্রিং ক্রিং, হ্যালো বলতেই একটা উৎকন্ঠার আওয়াজ পাওয়া গেল। আনিক,চিন্তিত গলায় বলতেছিল দোস্ত তুই কই? বললাম বাসায়। আবার প্রশ্ন-তোর মোবাইলে কি কোনো বিদেশি নাম্বার থেকে ম্যাসেজ আসছে? বললাম নাতো।

তারাতারি ইস্তির বাসায় আয় , বিশাল কাহিনি,আসলে বলব। আমি তো চিন্তায় পইরা গেলাম, কি করা যায়। যাই হোক, বেশি চিন্তা করার সময় পাইলাম না, দিলাম দৌড় সোজা ইস্তির বাসায়। যাইয়া তো আবহাওয়া দেইখা পুরাই থ। দেখি অনিক মিয়া বইসা কলম দিয়া খাতায় বিদেশি মোবাইল নাম্বার লিখতাছে, আর সজিব, ইস্তি আর অপু অরে ঘেরাও দিয়া বইসা রইছে।

টেনশন টা মাথায় আরেকবার বাড়ি মারলো। যাইহোক নিজেরে সামাল দিয়া ঢুকলাম ইস্তির রুমে। অনিক বলল, দোস্ত আমাগো সবার মোবাইলে এসএমএস পাঠাইলো, কিন্তু তরে পাঠাইলো না, বিষয় টা বুজলাম না। আমি গেলাম একটু বেভাচেকা খাইয়া। বললাম কিসের এসএমএস ? কাহিনি কি? তারপর একে একে ন্যাচারাল জটলা শুনতে লাগলাম।

সজিবের মোবাইলে এসএমএস আসছে এরকম-“খালি নতুন বাড়িতে আয় একবার” । অন্য কোন সময় এই এসএমএস আসলে কোন ব্যপারই ছিল না। কিন্তু আসল ঝামেলা হয়েছে অন্য জায়গায়। ওরা সম্প্রতি ওদের নতুন বাড়ি করছে, এবং কিছু দিন এর মধ্যে সেখানে উঠবার কথা। আর এ কথা আমরা সবাই জানি।

কিন্তু ব্যাপার হলো ওদের বাড়ির পাশের আরেকজনের সাথে ওদের একটু ঝামেলা হইছে এই বাড়ি নির্মান কে কেন্দ্র করে। তারা নাকি ওদের আবার থ্রেট দিছে, আর এই সময়ই এই ধরনের এসএমএস । বাড়ির সবাই তো পড়ছে গভির চিন্তায়। তারাই এই এসএমএস দিতে পারে বলে ওদের সন্দেহ। তাই সজিবের বাবা মানুষ জন কে বলা শুরু কইরা দিছে ব্যাপার টা নিয়া।

তারাও বিষয় টা দেখবে বলছে। কারন এসএমএস এর সেন্ডার এর কোন ঠিকানা নাই, শুধু লেখা-88vuth .শুইনা তো আমি একবার ঢুক গিল্লাম, আর বললাম- বলছ কি ! বিশাল ব্যাপার তো ! এইবার হইলো অনিকের এসএমএস। ওর মোবাইলে এসএমএস আসছে –“ কিরে মানিক,তোর খবর আছে”। অনিকের বেলায় অন্য সময় হইলে ওর ও কোন সমস্যা ছিল না। ভাবতো পরিচিত কেউ ফাইজলামি করছে।

কিন্তু সমস্যা হইলো, ওদের সাথে ও ওদের চাচাতো ভাইদের সাথে সম্প্রতি ঝগড়া হইছে। তাই ওর ধারনা, তারা আবার এরকম করল নাকি। ও আবার মা বাবার এক মাত্র পোলা, তাই ওরে নিয়া ওর বাসায় একটু বেশি চিন্তা করে, এইটা আমরা সবাই জানতাম। তাই বিষয়টা আমাদের ও সিরিয়াসলি নিতে হইল। তার উপর আবার এসএমএস এর নাম্বার নাই,সেন্ডার এর কোন ঠিকানা নাই, শুধু লেখা-88vuth . শুইনা তো আমি একবার ঢুক গিল্লাম, আর বললাম- বলছ কি ! বিশাল ব্যাপার তো ! এইবার হইলো ইস্তির পালা।

ওর মোবাইলে এসএমএস আসছে-“তুই করিমের ছোট পোলো না?” । ও বিষয়টা তেমন ভাবে নেয় নাই প্রথমে। কিন্তু সম্প্রতি ওর নামে বাসায় বেশি বিচার আসে,ও আবার অন্যের ঝামেলায় একটু বেশি জরায়, এইটা আমরা জানি। তাই কেউ আবার টারগেট করলো কিনা ? তার উপর আবার এসএমএস এর নাম্বার নাই,সেন্ডার এর কোন ঠিকানা নাই, শুধু লেখা-88vuth . শুইনা তো আমি একবার ঢুক গিল্লাম, আর বললাম- বলছ কি ! বিশাল ব্যাপার তো ! লাস্ট এসএমএস গেছে একটু মগা টাইপের অপুর কাছে। ও বাসে কইরা কুমিল্লা যাইতেছিল।

কম ভারার চিন্তা কইরা উঠছিল লোকাল বাসে। আর সিট ও পায় নাই। তাই দারাইয়া যাইতেছিল। এমন সময় নাকি, মোবাইলে এসএমএস –“কি রে ধোপা !” গরমে মাথা ঠিক নাই, এর মধ্যে এই এসএমএস । তার উপর আবার এসএমএস এর নাম্বার নাই,সেন্ডার এর কোন ঠিকানা নাই, শুধু লেখা-88vuth . ও মনে করছে মোবাইল কোম্পানি থেকে মনে হয় পাঠাইছে,তাই ওগোরে একচোট গালাগাল দিয়া বসলো বাসের মধ্যে।

লোকাল বাসতো, তাই কোন সমস্যা হয় নাই। আর বললাম না, ও একটু মগা টাইপের। তাই একবার চিন্তাও করে নাই, “ধোপা” নামটা শুধু আমরা বন্ধুরাই জানি। কোম্পানি জানলো কেমনে? ও শুধু দেখছে এসএমএস এর নাম্বার নাই,সেন্ডার এর কোন ঠিকানা নাই, শুধু লেখা-88vuth । শুইনা তো আমি একবার ঢুক গিল্লাম, আর বললাম- বলছ কি ! বিশাল ব্যাপার তো ! এই বর্ননা শুনতে শুনতে অনিক মিয়া কাস্টমার কেয়ারে ইতিমধ্যে কল দিসে এবং জানাইসে, তারা বলছে যে, তা্রা বলতে পারবে না কে? এইটা তো ইন্টারনেট থেকে পাঠানো হইছে, “আমরা জানি না।

আপনি আইন এর আশ্রয় নিতে পারেন। “ শুইনা তো আমি একবার ঢুক গিল্লাম, আর বললাম- বলছ কি ! এর মধ্যে ওরা সেই রকম ই কিছু করার চিন্তা করে ফেলছে। তবে এর আগে ওরা আমাদের আরেকজন বন্ধু যার সাথে সম্পর্ক টা খারাপ যাচ্ছে সবারই, তাকে সন্দেহ করা হইছে। তাকে একবার জিজ্ঞাসা করবে। দেখলাম বিষয় টা পুরাই একটা ন্যাচারাল জটলা পাকাইয়া ফেলছে।

তাই আর চুপ থাকতে পারলাম না। অবশেষে সমাধান দিতে হইলো। বিষয়টার শুরু এই ব্লগ থেকেই। একটা ফ্রী এসএমএস এর পোস্ট পইরা ভাবলাম একটু এপ্লাই কইরা দেখি। ওরা কেউ কেউ ফ্রী এসএমএস এর ব্যাপারে জানতো।

তবে এরকম হতে পারে, বা আমি পাঠাতে পারি, সেটা ওরা আসলে ভাবে নাই। যাই হোক, আমি যখন এসএমএস গুলি পাঠাই, তখন আমি ঐ ঝগড়া ঝাটির ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। পুরা ব্যাপার টাই একটা ন্যাচারাল জটলা হইছে, এবং এসএমএস গুলি একেবারে খাপে খাপ মিল্লা গেছে। আমি আর যাই কই? মেঘ না চাইতে বৃষ্টি। ওরাও অবাক ! আমি একবার ঢুক গিল্লাম, আর বললাম- বলছ কি ! বিশাল ব্যাপার তো ! আর ততক্ষনে আমার এসিয়ান সাদামাটা শরীরটা বৃটিশ বর্নের লাল হইয়া গেছে (হামলা হইছিল আমার উপর)।

আমি শুধু বললাম পিঠার কথা মনে নাই। পিঠার গল্প আরেকদিন বলবো। আসলেই ন্যাচারাল এরকম জটলা কিন্তু সবসময় হয় না। তাই অনেক মজা পাইছিলাম সবাই।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.