কেমন হতো, যদিও মুখোমুখি হতেন লিওনেল মেসি আর রাফায়েল নাদাল? কে জিতত, যদি দ্বৈরথটা হতো মহেন্দ্র সিং ধোনি আর উসাইন বোল্টের! ক্রীড়াঙ্গনের তারকা হলেও তাঁদের জগত্ আলাদা। একে অন্যের মুখোমুখি তাই হতে হয় না। তবে একরকম ‘প্রতিযোগিতা’ তাঁদের মধ্যে হয় বটে। আয়ের দিক দিয়ে কে সেরা—সেই অলিখিত প্রতিযোগিতা।
সেই ‘প্রতিযোগিতা’র ফলাফল প্রকাশ করে ‘ফোর্বস’।
আবারও বিখ্যাত সাময়িকীটি সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড়দের তালিকা প্রকাশ করেছে। এ বছর বেশ শোরগোল ফেলে শীর্ষ ২০ ধনী ক্রীড়াবিদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। গত বছরের ৩১ নম্বর থেকে একেবারে ১৬-তে উঠে এসেছেন ভারতের অন্যতম সফল এই অধিনায়ক। ক্রিকেটারদের চেয়ে টেনিস তারকা বা গলফাররা অনেক বেশি টাকা পান প্রাইজমানি থেকে। বিস্ময়কর হলো, তার পরও ধোনি আয়ের দিক দিয়ে পেছনে ফেলেছেন রাফায়েল নাদাল, নোভাক জকোভিচদের মতো শীর্ষ টেনিস তারকাদের।
এমনকি আইরিশ গলফার ররি ম্যাকইলরয় আর রেসিংয়ের ফার্নান্দো আলোনসোও পেছনে পড়ে আছেন ধোনির!
সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড়টির নাম অবশ্য টাইগার উডস। ২০০১ থেকে টানা ১১ বছর ‘ফোর্বস’-এর এই তালিকার শীর্ষস্থানটি উডসের দখলেই ছিল। কিন্তু গতবার তিন নম্বরে নেমে আসেন, যেটি তাঁর রাজত্বের টালমাটাল সময়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল। ধীরে ধীরে স্বরূপে ফিরতে থাকা উডস আবারও ফিরে পেলেন সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড়ের মুকুট।
সবচেয়ে বেশি আয় করা ফুটবলারদের তালিকাটাও কৌতূহলোদ্দীপক।
গত মে মাসে পেশাদারি ক্যারিয়ারকে বিদায় বললেও এখনো ফুটবল জগতের শীর্ষ ধনী খেলোয়াড়ের আসনটা নিজের দখলে রেখেছেন ডেভিড বেকহাম। সব মিলিয়ে তাঁর অবস্থান ৮ নম্বরে। তাঁর পরই ৯ ও ১০ নম্বরে আছেন এ সময়ের দুই মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি। বছরে মেসির চেয়ে ২১ কোটি ২ লাখ টাকা বেশি আয় করেন রোনালদো। এদিক দিয়ে ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’কে হারিয়ে দিয়েছেন রিয়াল তারকা।
কিন্তু রোনালদোর চেয়ে আবার ২৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা বেশি আয় করেন বেকহাম।
খেলার বিনিময়ে পাওয়া বেতন বা প্রাইজমানির পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের দূতিয়ালি করে পাওয়া আয় যোগ করে খেলোয়াড়দের এই বার্ষিক আয়ের হিসাবটা বের করা হয়েছে। পণ্যের দূত হিসেবে বেকহামের চাহিদা এখনো মেসি-রোনালদোর চেয়ে বেশি বলেই মনে হচ্ছে। বিজ্ঞাপনের কারণেই ক্রিকেট খেলেও গলফার-টেনিস তারকা-রেসারদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পেরেছেন ধোনি। ফোর্বসের ১০০ জনের তালিকায় ক্রিকেটার আছেনই আর একজন—শচীন টেন্ডুলকার (৫১ নম্বরে)।
১৭১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা আয় করে গত বছর ‘ফোর্বস’-এর ৩১ নম্বর স্থানে ছিলেন ধোনি। এ বছর ভারতীয় অধিনায়কের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ধোনি এই টাকার প্রায় পুরোটাই আয় করেছেন বিজ্ঞাপনের চুক্তির মাধ্যমে। ম্যাচ জয়ের পুরস্কার ও বেতন মিলিয়ে ধোনির বার্ষিক আয় ২৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আর বাকি ২১৮ কোটি ৬ লাখ টাকাই ধোনি পকেটে পুরেছেন বিজ্ঞাপনি চুক্তি ও স্পনসরের মাধ্যমে! টেন্ডুলকারের বার্ষিক আয় ১৭১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
এ বছর দ্বিতীয় স্থানে আছেন রজার ফেদেরার। টেনিস-জগতের অন্য শীর্ষ দুই খেলোয়াড় জোকোভিচ ও নাদাল—কেউই স্থান পাননি শীর্ষ ২০ ধনী খেলোয়াড়ের মধ্যে। তাঁদের অবস্থান যথাক্রমে ২৮ ও ৩০। রাশিয়ান টেনিস তারকা মারিয়া শারাপোভা আছেন ২২ নম্বরে। নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড় তিনিই।
সর্বোচ্চ আয় করা সেরা দশ
খেলোয়াড় মোট আয়
১. টাইগার উডস ৬০৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা
২. রজার ফেদেরার ৫৫৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা
৩. কোবি ব্রায়ান্ট ৪৮২ কোটি ০৭ লাখ টাকা
৪. লেব্রন জেমস ৪৬৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা
৫. ড্রিউ ব্রিস ৩৯৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা
৬. অ্যারন রজার্স ৩৮১ কোটি ৬১ লাখ টাকা
৭. ফিল মিকেলসন ৩৭৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা
৮. ডেভিড বেকহাম ৩৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা
৯. ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ৩৪২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা
১০. লিওনেল মেসি ৩২১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।