আলোকিত মানুষ চাই ১
বেহালা বাজানো কোথায় শিখায় খুঁজতে খুঁজতে কাল হাজির হলাম শিশু একাডেমিতে। প্রায় ১৪ বছর পর!
কত্তদিন বাদে!! ভাবলাম ঘুরেফিরে দেখি। মন খারাপ হল... কেমন জংলা হয়ে গেছে। আর কেমন নিস্তব্ধ। আমার ছেলেবেলায় বোধয় "জনসংখ্যা বিস্ফোরণ" ছিল।
হা হা!
সত্যি। অনেক সুন্দর সময় ছিল সেগুলো। আমি যেতে চাইতাম না, আম্মু জোর করে পাঠাত আর আমি পিছনের ঝোপঝাড়ে ঘুরে বেড়াতাম। কখনও ভাবিনি এতদিন পরে এসে আনন্দ হবার জায়গায় উদাস হয়ে যাবো!
যাই হোক, ভিতরে সমস্বরে গান শুনতে পেলাম। উঁকি দিয়ে দেখি কিছু পিচ্চি, তাদের মা, মঞ্জুশ্রী দিদি আর যতন স্যার।
দিদি লাল পাড় ঘিয়া শাড়ি পড়ে বাচ্চাদের গান শুনছেন আর পাশে যতন দা। দুজনের চেহারাতেই বয়সের ছাপ।
দিদিকে এতো সুন্দর লাগছে!! খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছিল।
আশপাশ দিয়ে অনেকক্ষণ আসা-যাওয়া করলাম, কেউই চিনতে পারলেন না। (চিনতে পারার কথাও না।
)
অভিমান করেছি। : (
সেই হলরুমে উঁকি দিলাম। বড় হয়ে চোখও ফুটেছে, আগের মতো বিশাল মনে হল না আর।
"শিশু" পত্রিকার বড় ভক্ত ছিলাম, আগের সংখ্যাগুলো সব রেখে দিয়েছি। ভাবলাম জিজ্ঞাসা করি আছে কিনা।
কিছু জিজ্ঞাসা করিনি। চলে আসলাম। অনেক কিছুই বদলে গেছে। বদলানোই থাকুক।
২
আবার রিকশা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি ছুটলাম।
কাজ হল না, ছুটির দিন। সাথে মিনু (ছোট বোন) ছিল। ওকে জোর করে ধরে চিড়িয়াখানার সংস্কার দেখতে গেলাম।
মেয়র লিটন পুরো মেইন গেট বদলে ফেলেছেন!! শপিং মলের এন্ট্রি'র মতো।
আগে ওখানে বিরাট একটা জিরাফ স্কাল্পচার ছিল, আর দেয়ালে ৪-৫ টা বড় বড় টাইল কোলাজ ছিল।
আমি হা করে তাকিয়ে থাকতাম সবসময় ওই দুই বস্তুর দিকে। আর শুধু বায়না ধরতাম জিরাফের কাছে যাবো, ও অত লম্বা কেন, আমাকে নিয়ে যাও একটু ছুঁয়ে দিবো ইত্যাদি ইত্যাদি। বাসায় ফিরতাম কান্না নিয়ে, জিরাফ না ছোঁয়ার কষ্টে। আম্মু কখনই ওটার কাছে যেতে দেয়নি।
কাল মিনুকে ধরে নিয়ে গেলাম জিরাফ ছোঁয়ার জন্য।
সেটা নেই।
হয়তো এটা পাগলামি, কিন্তু সত্যি সত্যিই বুকের মধ্যে একটা কষ্ট বাজলো।
ওই জড়বস্তু কিন্তু জীবন্ত জিরাফকে একটু ছুঁতে দিলে আম্মুর কি ক্ষতি হতো? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।