মহাবিশ্বের বালুকণা কারও হৃদয় কখনও যদি প্রেম শূন্য হয় তখন সে বেঁচে থাকে কিভাবে?
এ প্রশ্নটি করেছিল অনিল, হেমাকে।
বেঁচে থাকে, থাকে মৃত শহরের মতন..........হেমার হালকা জবাব ছিল।
সত্যি......... বলেছ বেশ, মৃত শহরের মত, যা কিনা অন্তসারশূন্য। অনিল কথাটি এমনিই বলেছিল আর হেসেছিল হেমা।
হৃদয় কখনও প্রেমশূন্য হয় তা ছিল অচিন্তনীয়।
হেমা হাটত, অনিলও পাশাপাশি। বহুদূর বহুক্ষন ধরে তারা হেটে যেত। বৈশাখের উদাস হাওয়া থেকে বসন্তের কচি ঘাস মাড়িয়ে তারা হাটত। । অনিল কখনও হঠাৎ চমকে উঠত হেমার হাত হারিয়ে।
হেমার হাতে তখন হয়তো বকুল বা শিউলী।
সে ফুল একটু পরে অবহেলায় মাটিতে, সে হাত অনিলের হাতে।
এভাবে কত সোনারঙা দিন যে তাদের আবেশে কেটে গেছে। কত কিছু তখন তুচ্ছ মনে হত এই ভাবে দিনযাপনের পাশে। ক্লাশের পড়া, বন্ধুত্বের উষ্ণ আবাহন, জ্বরা ব্যাধি সব, সব কিছুই তুচ্ছ মনে হত তখন।
শুধু যেন হেটে চলা, দুজনে পাশাপাশি।
অনিল ভাবত হেমা তার, শুধুই তার। হেমার কপালের ছোট্ট টিপ হবার জন্যে রাতদিন সাধনা অনিলের।
ওদের প্রেম ছিল ধ্যানের মত।
তবে শান্ত পুকুরেও ঢেউ ওঠে কখনও।
হেমা বলতে পারবেনা কবে, ঠিক কবে অনিলের ধ্যান ভেঙ্গে যেতে শুরু করে। কেন হয়েছিল আজ অনেক ভেবেও হেমা বুঝতে পারেনা।
ধীরে ধীরে ওদের পথচলা ক্ষীণ হয়ে আসে, ক্রমশ থেমে যাওয়া নদীর মত। কত বৈশাখ, শরৎ, বসন্ত পেরিয়ে যায়। হেমার হাতে এখন শুধুই বকুল শুকায়।
তারপর একদিন, আরো একদিন, কোন এক বসন্তের বিকেলে অনিলের হৃদয় ভাঙাতরীর মত আছড়ে পরে হেমার কূলে। অনিলের আকুতি, চোখের তলায় কালশিটে দাগ হেমাকে স্বস্তি দেয়না। আঁতকে ওঠে হেমা। যে হাতে একসময় হাত রেখে নির্ভার হয়ে যেত সেই হাতে কি এক বিষের নীল ছোবল। যে চোখ ছিল সমুদ্রের মত সেই চোখ আজ মরুভূমির মত নির্জন।
যে হৃদয়ে প্রেম আছে সে হৃদয় নষ্ট হয়ে যায় কিভাবে? হেমার হাহাকার।
অনিলের নষ্ট হয়ে যাওয়া হৃদয় থেকে আর কোন উত্তর পায়না হেমা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।