আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাব চলে যাক সবাইকে ছাড়িয়ে

সম্পাদনা করি আমিরাত-বাংলা মাসিক মুকুল। ভালবাসি মা, মাটি ও মানুষকে.. লুৎফুর রহমান বিয়ানীবাজার এমন একটি উপজেলা যার পরিচয় বাড়িয়ে দিতে হয়না। অনেকে মনে করে এটা সিলেটের একটা জেলা। এর নাম-ধাম এতোটা ছড়িয়ে আছে বিশ্বব্যাপী তা অন্য জেলারও নাই। আর তা এসেছে আমাদের অতীত ঐতিহ্য আর গৌরবান্বিত পদচারণায়।

শিক্ষা-দীক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ সহ নানা আন্দোলন ও সাংবাদিকতায় রয়েছে আমাদের গরীয়ান ঐতিহ্য। এ মাটিতে জন্মেছেন সাধু পুরুষ, পণ্ডিত ও মনীষীরা। যাঁরা আপন আলোয় আলোকিত করেছের পঞ্চখণ্ড তথা বিয়ানীবাজারের মাটি। প্রাকৃতিক তেল-গ্যাস ও কমলালেবু, আনারস সহ নানা প্রাকৃতিক দানও আমাদের করেছে গৌরবান্বিত। পণ্ডিতের শহর বিয়ানীবাজারে শ্রীনিবাস পণ্ডিত, রঘুণাথ শিরোমনি, মুন্সি ইরফান আলী ও ড. গোবিন্দ চন্দ্র (জিসি) দেব সহ নানাগুণীর জন্ম হয়েছে।

বর্তমানের সফল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল নাহিদ এ মাটির ই সন্তান। এ গর্ব বিয়ানীবাজারের। এ গর্ব আমাদের সবার। বিয়ানীবাজারে জন্ম নেওয়ো অসংখ্য কালজয়ী মানুষ নিজের প্রতিভায় অনায়াসে ডিঙিয়েছেন সময়ের বেড়া। যা অন্য কোন কোন জেলায়ও এমন নাই।

বিত্তের সাথে রয়েছে এখানকার মানুষের চিত্তের মিল। তাই জাতীয় পর্যায়ের অনেক বুদ্ধিজীবিও বিয়ানীবাজারকে সংস্কৃতির শহর বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিয়ানীবাজারের সন্তান আকাদ্দাস সিরাজুল ইসলাম, এ ইচ শাহাদাত খান ও মোহাম্মদ আব্দুল বাসিতা দেশ ও মাটির দুর্যোগকালে অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পত্রিকা প্রকাশ করে মাটির প্রতি ঋণ শোধ করেছেন আমাদের করেছেন গৌরবের অধিকারি। এবার চলে আসি মূল প্রসঙ্গে। গত ০১/০৯/২০১২ তারিখে বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা প্রেসক্লাব যেন প্রাণ ফিরে পেল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সহ বিয়ানীবাজারকে যারা ভালবাসেন বিশ্বের নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সবাই। আশায় বুক বেঁধেছেন সকলে। এবার বুঝি কিছু একটা হবে। হবার ই কথা।

সভাপতি ও সম্পাদক দুজনই খুব কর্মঠ। সেইসাথে কমিটির অন্যান্যরাও আন্তুরিক ও কর্মঠ। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শিক্ষক, কলামিষ্ট ও সুচিন্তক জনাব আতাউর রহমান এবং সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাপ্তাহিক আগামী প্রজন্ম সম্পাদক তারূণ্যদীপ্ত মিলাদ মো. জয়নুল ইসলাম। তাঁদের নেতৃত্বে প্রেসক্লাব আরো বেগবান হবে এই আশা। এটা আমার দাবি।

আমাদের সকলের দাবি। আমাদের বিয়ানীবাজারের নিয়মিত, অনিয়মিত সাপ্তাহিক এর সংখ্যা ৭। তাইলে দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন ই বিয়ানীবাজার থেকে পত্রিকা প্রকাশ হচ্ছে। এর মধ্যে সাপ্তাহিক বিয়ানীবাজার বার্তা, সাপ্তাহিক নবদ্বীপ, সাপ্তাহিক দিবালোক, সাপ্তাহিক আগামি প্রজন্ম ও সাপ্তাহিক সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য। কোন কোন পত্রিকা ব্যয়ভার নিয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

আবার কেউ কেউ লোকসান দিয়েও চালাচ্ছেন প্রকাশনা। তাই এখানে নেই দৈনিকের প্রয়োজন। দেশের মফস্বল শহরে এমন পত্রিকার প্রকাশনা বড়ই অভাব। শুধু পত্রিকা নয় সাংবাদিকরাও রয়েছেন গুণগত মানও পরিমাণগত সংখ্যায় অনেক এগিয়ে। জাতীয় পত্রিকা ও কমিউনিটি ভিত্তিক চ্যানেল খুললেই সচরাচর চোখে পড়ে বিয়ানীবাজারের খবর।

আমাদের বিয়ানীবাজারের সন্তান মুস্তাফিত শফি ও আজিজুল পারভেজ। এ দু অগ্রজ জাতীয় অঙ্গনে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। একনামেই নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছেন আপনগুণে। বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাব থেকে আরো বেরিয়ে আসুক শাকুর মজিদ, মুস্তাফিজ শফি, শাহজাহান কমর, আজিজুল পারভেজ, চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, লোকমান আহম্মদ আপনরা । সংখ্যার দিক দিয়ে আরো যেন গুণগত মান বেড়ে যায় এই কামনা।

শুধু দেশে নয় দেশের সীমানা পেরিয়ে রয়েছে বিয়ানীবাজারী সাংবাদিকদের বিচরণ। লন্ডনে ফারুক যোশী, আলী আহমদ বেবুল, নোমান আহমদ ও আনোয়ারুল ইসলাম অভিরা বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে ওখানকার সাহিত্য-সাংবাদিকতার। সেই সাথে তৃতীয়বাংলাখ্যাত বিলেতে প্রতিবছর যে কবিতা উৎসব হয় তার মূল উদ্যোক্তা আমাদের বিয়ানীবাজারের সন্তানরা। কবি ইকবাল হোসেন বুলবুল, ওয়ালি মাহমুদ সহ যাঁরা আছেন সকলেই উজ্জ্বল করেছেন বিয়ানীবাজারের নাম। মধ্যপ্রাচ্যে বিয়ানীবাজারীদের তেমন একটা ভালো অবস্থান নেই।

তারপরেও যাঁরা আছেন নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন অনায়াসে। দুবাইস্থ প্রবাসী সাংবাদিক সমিতির কর্মঠ এক কর্মী হিসেবে রয়েছি এই অধম। এবার কথা হলো, বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের নেই কোন নিজস্ব অফিস। অচিরেই গোলাবিয়া পারলিক লাইব্রেরীতে হোক আর নতুন ঠিকানায় হোক একটা অফিস করা হোক। সেই সাথে আকাদ্দাস সিরাজুল ইসলাম, আব্দুর রউফ খান মিষ্টুসহ যাঁরা বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাথে জড়িত ছিলেন সকলের মৃত্যু দিবসটা যেন প্রতিবছর পালন করে বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাব।

বিয়ানীবাজারে থাকা সকল সাংবাদিক লেখক ও প্রকাশককে এই কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত করার সাথে সাথে দেশের রাজধানীসহ সিলেট শহর এবং দেশের বাইরে থাকা সকল বিয়ানীবাজারী লেখক, সাংবাদিককে এই কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত করার আহবান জানাতে অনুরোধ করছি। পুরনো সকল ভেদাভেদ ভুলে একই পতাকার তলে এসে যেন সবাই বিয়ানীবাজারকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায় এই অনুরোধ সকলের প্রতি। বাইরে এলে বুঝা যায় নিজের দেশ, মাটি, মানুষ ও এলাকা কি জিনিস। একান্ত মায়ের মতো লাগে। এই অনুভূতি থেকে বলছি, কে কি হলেন এটা না ভেবে একই সংগঠনের হয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজ করুন।

দেখবেন নিজেদের মূল্যায়ন আরো বাড়বে। হিংসা কেবল হিংসারই জন্ম দেয়। তাই হিংসা নয় সৌহার্দ্য আর স্মপ্রীতি নিয়ে দূর থেকে বহুদূর চলে যাক আমাদের প্রেসক্লাব, বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাব হয়ে ওঠুক দেশের মডেল প্রেসক্লাব। লেখক: সম্পাদক, মাসিক মুকুল, দুবাই। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.