স্বাগতম আমার নষ্ট করা কাগজের ভীড়ে । লেখালেখি করার হাত আল্লাহ সবাইকে দেননা । কিন্তু যে হারে দেশে ব্লগার আর পেইজের সংখ্যা বাড়ছে তাতে মনে হয় যে দেশটা এখন লেখক সাহিত্যিকে ভরে যাচ্ছে । যাক ,আশার দিক । এটা নিয়ে মন খারাপ করার কিছুই নেই ।
বরং আমাদেরই সুযোগ বাড়ছে নিত্য নতুন ও চমত্কার সব লেখা পরখ করার ।
হূমায়ুন আহমেদের এক বইতে পড়েছিলাম যে যুবক বয়সেই নাকি মানুষের কিছু একটা আলাদা করার ভূত চাপে । যেমন কেউ কেউ গিটার কিনে গান করার জন্য তা সে ভাল গান করুক আর নাই করুক ,কেউ বাগান করে ,কেউ ফটোগ্রাফি ইত্যাদি । তবে সবচেয়ে যেটা সহজ আর তা হলো কলম ধরা । তাই মনের কোনে ভাব জমা হতেই তাকে ভাষা দিতে সবাই কলম চালাতে থাকে ।
এই কলম ধরার কারনটাও বহুবিধ ও ব্যাতিক্রম । কেউ নতুন প্রমে পড়ল । তার কাংখিত মেয়েটাকে প্রথম অফারটা স্বরচিত কবিতা দিয়েই দিতে মন চায় । আর তারপর থেকেই সময়ে অসময়ে মনে যে ছন্দের নক বাজে তাকে লিখে ফেলা । সেটা বিরহের
মুহূর্তেও হতে পারে কিংবা সুখেরও
হতে পারে ।
কখনো কারনটা দাড়ায় বন্ধু মহলে নিজেকে ব্যাতিক্রম করা কিংবা কেউ কেউ আবার আবেশ প্রক্রিয়ায় রিতীমত কলমবাজ হয়ে উঠেন ।
কেউ কেউ আবার স্নিগ্ধ পদ্য নয় কঠিন গদ্যে বিশ্বাসী । নতুন লেখকদের জন্য ভালবাসাকে টপিক করাটাই সহজ । আর তাই লেখালেখির এবিসিটা সাধারনতই
প্রেমগদ্য দিয়েই হয় । আমার নিজেরও কিন্তু তাই ।
আমার খুব পরিচিত এক বন্ধু এখন যে তার লেখার জন্য খুব প্রসিদ্ধ ,হাতেখড়ি হয় প্রেমগদ্য দিয়ে । অতঃপর এখন সে নিয়মিত ভৌতিক কাহিনি লিখে ভয়ও দেখায় ,কবিতার ছন্দে বিমোহিতও করে আবার গানের লিরিক্স লিখে তাতে সুরও দেয় । খারাপ না ।
আজকাল যে বিষয় দিয়ে পেইজ চালাতে সবচেয়ে সহজ তা হলো ভালবাসা । এক এক নোট লিখে ট্যাগ দেয়া হচ্ছে ,তাতে লাইকের
বন্যা বইছে ,কমেন্টে প্রশংসার ফুলঝুড়ি নিয়ে হাজির হচ্ছে ললনারা ।
আর লেখকের মুখের তৃপ্তির হাসি ,বাহ বেশতো ! আবার ঐসব লেখকের বন্ধুরাও
আবেশ প্রক্রিয়ায় লেখক হয়ে উঠে ।
আমার কিন্তু তাতে কোন আপত্তি নেই । বরং আমিও ভালবাসা ,বন্ধুত্ব এসব নিয়ে লেখার ফ্যান ,সবার মত লাইকটা আমিও দেই । কিন্তু আমার কষ্ট বা আপত্তি যাই বলুন তা শুধু এক জায়গায় । এইসব লেখকরা যারা তাদের
কলম দ্বারা ইমোশনাল স্টোরি লিখে সবাইকে কাদাতে পারে ,দেশের অতি বিপদক্ষনে তাদের কলম কাদতে দেখিনা ।
তাদের কলম ফেলানীর লাশ দেখে সামনে এগোয় না । ইলিয়াস গুম হলেও ,হাবিব নগ্ন হলেও ,সাগর রুনি খুন হলেও তাদের কলমের ডগা নগ্ন হয় না ,তাদের লেখা গুম হয়ে যায় ,তাদের সেইসব ইমোশন যেন খুন হয়ে যায় ।
এদেশে সচেতন পাঠকের বড় অভাব তেমনি লেখকেরও । অভাব নেই মার্কামারা লাইকারের । ভালবাসার গল্প পড়ে আমাদের যে আবেগ জেগে উঠে তাই আবার ঘুমিয়ে যায় যখন জাতীয় আবেগের কথা উঠে ।
আর তাইতো এখনও একটা সমাজ সচেতন পেইজের চেয়ে ইমোশনাল পেইজের অগ্রগতি হয় বেশী ।
লেখক ও সাহিত্যিক সমাজ সবসময়ই আমাদের অন্যতম গর্ব ও উত্সাহদাতা । তাই নব্য লেখকদের যারা নিয়মিত লেখালেখি চর্চা করেন তাদের উদ্দ্যেশ্যে একটা কথা । ক্ষেত্র বিশেষে লেখার টপিক চেইন্জ করো । তোমার প্রতিভা যেন একটু হলেও দেশ ও দশের কাজে লাগে ।
আর মনে রেখো ,খোদার দেয়া এই প্রতিভার জন্যও জবাবদিহিতা আছে । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।