আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রামুকাণ্ডের ছবিকথা: মৌলবাদী তান্ডবে সন্ত্রস্ত এই দেশ আমার না!

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে শনিবার রাতে রামুতে বৌদ্ধবসতিতে রাতভর তা-ব চালায় র্ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা। রামু উপজেলার সাতটি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয় আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে। (আরো ছবি পোস্টের ভিতরে) “এটা কোনো সাম্প্রদায়িক বা হানাহানির ঘটনা নয়।

এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক ও সুপরিকল্পিত একটি ঘটনা। ” “বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গুজব ছড়িয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই গোষ্ঠীর স্থানীয় কয়েকজন শীর্ষ নেতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে এটা ঘটান। । ” কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ বসতিতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ইন্ধন এবং রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ ছিল বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তারা বলছেন, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক জাতিগত সংঘর্ষের ঘটনায় রোহিঙ্গাদের ক্ষোভকে কাজে লগিয়েছে একটি মহল। যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের কণ্ঠে শোনা গেছে ‘নারায়ে তকবির’ শ্লোগান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট ফেইসবুকে কোরআন অবমাননা করে ছবি সংযুক্ত করার অভিযোগে শনিবার রাত ১০টার দিকে একটি ইসলামী দলের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে একটি সমাবেশ হয়। তাতে বক্তারা দাবি করেন, রামু উপজেলার বৌদ্ধ পাড়ার উত্তম বড়ুয়া নামের এক যুবকের ফেইসবুক একাউন্টে কোরআন অবমাননাকর ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। এর আগে বৌদ্ধদের ওপর এমন ভয়াবহ নির্যাতন দেখেননি উল্লেখ এই ধর্মগুরু বলেন, “প্রশাসনের নির্লিপ্ততার কারণেই ঘটনা এতো বড় হয়েছে।

পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা আগে থেকেই উদ্যোগ নিলে এমন ঘটনা হয়তো ঘটতো না। মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণ বড়–য়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হামলাকারীদের মধ্যে রামু এলাকার স্থানীয় কিছু লোক থাকলেও একটি বড় অংশ বাইরে থেকে আসা। এমন ঘটনায় বিষ্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, “মুসলমানদের সঙ্গে আমরা এতোদিন ধরে পাশাপাশি বসবাস করে আসছি। তারা আমাদের ওপর হামলা করতে পারেন তা আমাদের কল্পনারও বাইরে ছিল। এতো ছোট ঘটনার জন্য এতো বড় হামলা বিশ্বাস করা যায় না।

” একই ধরনের কথা শোনা গেল উত্তর মিঠাছড়ি, শ্রীকূলসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের মুখেও। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা ও রাখাইন সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের পর কক্সবাজারে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থারত রেহিঙ্গাদের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তাকে উস্কে দিয়ে ‘একটি মহল’ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করেন তরুণ বড়ুয়া। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে এ ঘটনার পেছেনে জামায়াতে ইসলামীর ইন্ধন থাকতে পারে। ” কক্সবাজারের ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলে কক্সবাজার জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন জিকু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঝিলংজার বিভিন্ন সংখ্যালঘু পল্লী ঘিরে রাতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের জড়ো হওয়া খবর পেয়ে তিনি গিয়ে তাদের সরিয়ে দেন। পুলিশকেও তিনি বিষয়টি অবহিত করেন।

কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর তিনি হামলার খবর পান। রামু উপেজলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সারওয়ার কাজলের ধারণা, ‘রামুর বাইরে থেকে লোক এনে’ পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। প্রশাসনের গাফিলতির কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ পেয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা ঘটনাস্থলে গেছে অনেক পরে। শুরুতে গেলে হয়তো অনেক বিপর্যয় এড়ানো যেত। ” এ ঘটনায় হতবাক রামুর মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনও।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর এ ধরনের হামলার কোনো যুক্তিই তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। রামু সদরের রিকশাচালক ছলিম উল্লাহ বলেন, “কি জন্য এমন হলো বুঝতে পারছি না। আমরা সবাই তো একত্রে থাকি। ” ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফেরার পর সংসদ সদস্যের নাম না উল্লেখ করে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সেই এলাকায় বিএনপির একজন সাংসদ আছেন; অভিযোগ আছে, যারা এই অপতৎপরতা চালানোর জন্য সেখানে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন তাদেরকে দিয়ে তিনি ওই এলাকায় তাণ্ডবলীলা এমনকি খুন করার জন্য আহবান জানিয়েছিলেন। ” হামলার ঘটনার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে যাননি, খোঁজখবরও নেননি এমনকি সরকারের যে প্রতিনিধিদল সেখানে গিয়েছিলেন তাদের সঙ্গে দেখাও করেননি বলে অভিযোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

কক্সবাজার সদর ও রামু (কক্সবাজার-৩) আসনের সংসদ সদস্য বিএনপির লুৎফর রহমান কাজল। আমিও হতবাক! ঘটনা শুনে আর ছবি গুলো দেখে..।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।