আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বায়োচিপ/ দুই (সাইন্স ফিকশন)

ভাল লাগে ফুল, কিছু কিছু ভুল দুই. বাংলাদেশ রোবট গবেষণা প্রকল্পে আমার বিষয় রোবটে বায়োচিপ। বায়োচিপ পুরনো বিষয়। প্রাণী দেহাবশেষ থেকে চিপ তৈরি করে রোবটের সিস্টেমে ইন্সটল করলে রোবটের ইন্টেলিজেন্স অনেক বেড়ে যায়। এটাই বায়োচিপ। এই মুহূর্তে মূলত কিছু বাগ নিয়ে গবেষণা চলছে, সেটা অনেকখানিই এগিয়েছে।

ফোর্থ জেনারেশনের বায়োচিপযুক্ত রোবটগুলোর অনেক আচরণই বিজ্ঞান বিশ্বে একটা বিস্ময়। এই চিপগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে অনেকেই সন্দেহে ভোগে। পরীক্ষামূলক ভাবে যে কটা রোবটে ইন্সটল করা হয়েছে তারা সবাই- ধারনার বাইরে কিছু অস্বাভাবিক আচরণ করে গেছে। বেশ কয়েকটা দুর্ঘটনার পর বায়োচিপ গবেষণা ঝিমিয়ে পড়ে। রবোটিক্সের ছাত্র হওয়ায় সব খবরই আমার জানা ছিল।

তবু রিসার্চের সাবজেক্ট হিসেবে বায়োচিপ বেছে নেয়ায় অনেক শিক্ষকই বাধা দিয়েছিলেন। আমার যুক্তি ছিল- আমি অ্যাডাপ্টেড বেবি। এক ধনী নিঃসন্তান দম্পতি মধ্যবয়সে অনাথাশ্রম থেকে আমাকে সংগ্রহ করেছিলেন। তারা আমাকে খুবই ভালবাসতেন। কোন ইচ্ছেতেই কখনো বাধ সাধেননি।

মেধাবী হওয়ায়- সেরা ইন্সটিটিউশন গুলোতে পড়িয়েছেন। একটা দুঃখজনক দুর্ঘটনায় দু'জন একসঙ্গে পৃথিবী ছাড়লেও ব্যাংকে আমার জন্য প্রচুর টাকা রেখে গেছেন। তারপরও তাদের মৃত্যু মানসিকভাবে আমার জন্য ছিল বিরাট আঘাত। সারাজীবন পড়াশোনায় মনোযোগী থাকায় তেমন কাছের কোন বন্ধু কখনোই ছিলনা। তারাই ছিলেন আমার একমাত্র আপনজন।

বিশাল পৃথিবীতে সম্পূর্ণ একা হয়ে গিয়েছিলাম। বেঁচে থাকাটা কিছুদিন খুব ভারী একটা বিষয় বলে মনে হওয়ায় একাডেমিক ইন্টারেস্টেই সম্পূর্ণ মনোযোগ ঢেলে দেই। এরকম ঝুঁকিপূর্ণ গবেষণা আমাকেই মানায়। শিক্ষকরা বরাবরই আমার মেধাকে উৎসাহিত করতেন। ভালও বাসতেন।

কোনভাবে নিরস্ত করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত মেনে নেন। হ্যারি আমার হাত থেকে মোবাইল সেটটি নিয়ে দ্রুত হাতে- সেটাকে খুলে ফেলল। রোবটের হাতের কাজ দৃষ্টি দিয়ে অনুসরণ করা খুব শক্ত। কিছুক্ষণের মধ্যে সূক্ষ্ম একটা চিপ হাতে নিয়ে বলল, 'মেইন ট্রান্সলেটর চিপটা ঝামেলা করছে। কোম্পানিকে বলে নতুন চিপ আনাতে হবে।

' এটা একটু অস্বাভাবিক ব্যাপার। আজকের যুগে ট্রাকিওন কোম্পানির যে কোন চিপ নষ্ট হওয়া প্রায় অসম্ভব। সম্ভাব্য সব রকমের নিখুঁত জিনিস তৈরি করে ওরা। তবু মেনে নিতে হল। বললাম, 'এক্ষুণি ব্যবস্থা কর।

ফোন ছাড়া আমি অচল। ' হ্যারি ওর কমিউনিকেশন ডিভাইস ব্যবহার করে রবোটিক ভাষায় দ্রুত কিছু তথ্য বিনিময় করে আমার দিকে তাকাল। ওরা বলল, 'নতুন প্রযুক্তি আইনের কারণে অন্তত একদিন সময় লাগবে। ' 'তাহলে নতুন একটা সেট কিনে ফেল'। 'কেনা সমস্যা না।

কিন্তু আপনি জানেন- নতুন সেটের লাইসেন্স পেতেও সেই একদিন সময়। ' আজকাল সব কিছুতেই লাইসেন্স লাগে। এই কমিউনিকেশন ডিভাইসগুলোতে এত কিছু ইন্সটল করা থাকে যে সরকার কিছুতেই ভেরিফিকেশন ছাড়া ব্যবহার করতে দেয় না। পরিচিত কোম্পানির পরিচিত ডিভাইস হলেও না। আমি হতাশায় নখ চিবুতে শুরু করলাম।

'তাহলে কি করা যায়?' হ্যারি আমাকে আস্বস্ত করে বলল, 'অসুবিধা নাই এই সময়টা আপনার কমিউনিকেশন মিডিয়া করে নিচ্ছি আমাকে। যে কোন যোগাযোগ আমার মাধ্যমে হলে টেনশন ফ্রি থাকতে পারবেন। ' অসহায়ভাবে কাঁধ ঝাঁকিয়ে অস্বস্তির সংগে মেনে নিলাম ব্যাপারটা। এমনিতে সমস্যা হবার কথা না। কিন্তু রোবট যন্ত্র হলেও- তার আচার আচরণ মানুষের কাছাকাছি।

প্রাইভেসী ভেঙে যাওয়ার মত একটা অনুভূতি কাজ করে ভেতরে। তাও ভাল যে বাসায় কিছু বায়োচিপ এনে রেখেছিলাম- হ্যারির সিস্টেমে ইন্সটল করার জন্য। ভাগ্যিস করা হয়নি। এ ধরণের বিপদজনক কাজ কেন যেন আমাকে খুব টানে। সত্যি যদি করে ফেলতাম তাহলে আমার প্রাইভেসী ভেঙে কি যে করে ফেলত আল্লাহ মালুম।

বায়োচিপ সেট করা রোবটের আচরণ কখনো আগাম অনুমান করা যায় না। ন্যাচারালি তুমুল ভদ্র। কিন্তু যে কোন মুহূর্তে ভায়োলেন্ট হয়ে উঠতে পারে। তবে ঠিক কোন কোন কারণে হয় সেটাই একটা রহস্য। আমার আপাত গবেষণা- এই নিয়েই।

বেশ কিছুদূর এগিয়ে গিয়ে কিছু প্রিভেন্টিভ নিয়ে কাজ করছিলাম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.