আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডুয়ালিজম, ল্যাগিন্স, সিনেমাহল ও প্রেমে বাম্পার ফলন (১৮+)

স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি । তবে স্বপ্ন দেখা নিয়ে কিছুদিন যাবত একটা সমস্যা হয়ে গেছে । নতুন দেখা স্বপ্নগুলো কেন যেন পূরণ হচ্ছে না খুব শীঘ্রই এই সমস্যা কেটে যাবে এই আশাতেই আছি । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে কিছুদিন আগে এক ছেলেকে দেখেছিলাম এক মেয়েকে সবার সামনেই একেবারে মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে । আহা, কি গভীর প্রেম! দেখে গভীর আবেগে আমার চোখে পানি চলে আসার অবস্থা ।

আজ সেই একই ছেলেকে দেখলাম ঐ একই জায়গায় অন্য এক মেয়ের প্রায় গায়ের উপর উঠে পড়ে তাকেও খাইয়ে দিচ্ছে । এই জন আগের জনের চেয়ে বহুগুনে বেশী সুন্দরী, ডিজুস ভাষায় বললে " হট " ( পড়ুন হঅঅঅঅঅটঠ, একনিঃশ্বাসে ) ক্যাটাগরির । আমি ঠিক জানিনা ঐ ছেলের একেকদিন একেক মেয়েকে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়াটা শখের কোন কাজ কিনা । আর এমন শখ থাকলেও সেটা বাস্তবে পালন করা ঢাঃবিঃ -র মতো জায়গায় কষ্টসাধ্য ব্যাপারই হওয়ার কথা । কারণ গুটিকয় পড়া না পড়া সমান সেইটাইপ ল্যাগিন্স, গেঞ্জি পড়ুয়া অথবা কেবল ডানপন্থী বা বামপন্থী বদ ছাড়া ঢাঃবিঃ-র অধিকাংশ মেয়েই ভদ্র এবং তাদের মাধ্যমে ঐ শখের নিয়মিত চর্চাটা মনে হয় ঠিক সম্ভব না ।

কাজেই যৌক্তিক অনুমানটাই করে নিচ্ছি; ঐ দু'জনই ছেলেটার প্রেমিকা । আগেরজন নতুনজনের হটনেসের উত্তাপে পুড়ে কয়লা হয়ে ডিসকোয়ালিফাইড হয়ে গেছেন বা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী সাহেবের দেখানো মহান দার্শনিক চলচ্চিত্র থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারের আদর্শ অনুযায়ী দু'জনই এখন একসাথে বহাল তবিয়তে আছেন । দুই ফুল এক মালী টাইপ আর কি । সে যাই হোক, আমরা বাঙ্গালীরা তো সব ব্যাপারেই কিছু না কিছু শিক্ষনীয় ব্যাপার খুঁজি । তা এই ছোট্র ঘটনাটা থেকে আমরা কি শিক্ষা নিতে পারি? আমরা শিক্ষা নিতে পারি এই যে - ১. ছেলেরা কখনো বদলায় না, বদলায় কিন্তু মেয়েরাই ২. মানুষ বরাবরই সৌন্দর্যের পূজারী সিনেমা দেখতে গেছি সিনেপ্লেক্সে স্নোহোয়াইট এন্ড দ্যা হান্টসম্যান ।

সিটে বসলাম, লাইট নিভলো, সিনেমা শুরু হলো । সামনেও, পেছনেও । পার্থক্যটা হলো এই আমি সামনেরটার ছবি , শব্দ দুটোই শুনতে পাচ্ছি আর ঠিক পেছনেরটার কেবল শব্দ । " আস্তে, উফ! আবার, জ্বলতেছে কিন্তু, তুমি থামবা, হাত সড়াও, আবার দুষ্টামি, ব্যথা পাচ্ছি কিন্তু ... ইত্যাদি ইত্যাদি । পুলকিত হতে থাকলাম ।

কোন সিনেমা দেখবো মনঃস্থির করতে পারছিলাম না । চোখ রেখে বসে আছি সামনেরটাতে আর কান, মন দুটোই পেছনেরটাতে । নানা রকম শব্দ বিরামহীন ভাবে আসতেই থাকলো । যখন মনে হলো মোবাইলের টর্চ লাইট জ্বালিয়ে পেছনের এডাল্ট মুভির নায়ক - নায়িকাদের দর্শন করবো কিনা, তখনই হলের বেরসিক লাইট জ্বলে উঠলো । হাফ টাইম! হাফ টাইমের পর আবার যখন মুভি শুরু হলো তাদের আর দেখা মিললো না ।

খুব সম্ভবত তাদের টিকিটের ২৫০ টাকা প্রথম হাফেই উসুল হয়ে গিয়েছিলো । এই ধরনের ঢঙ্গী কিছু ঘটনা বেশী দেখা যায় পার্কে, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির আশেপাশের রেস্টুরেন্টগুলোতে , আর অভিজাত তকমা পাওয়া এলাকাগুলোতে । সব জায়গায় প্রেম আর প্রেম । ইংরেজিতে বললে Love in the sky ..... স্যোশাল কস্ট বলে একটা টার্ম আছে যার মানে অনেকেই জানেন বোধহয় । ক্রমাগত হিন্দি আর ইংরেজি ঘেষা বিনোদনের সোশ্যাল কস্ট হলে এসব ।

আমাদের চ্যানেল গুলোও এগিয়ে আসছে এ ক্ষেত্রে । তারা সবাইকে বোঝাতে মরিয়া যে ছেলেদর ড্রেস হলো বুকের পশম দেখা যায় এমন গেঞ্জি , পিছলে পড়ে যেতে থাকা ভুশভুশে জিনস, মেয়েদের বেলায় দর্শনীয় ল্যাগিন্স, ফতুয়া । নানা ফসলের মতো দেশে প্রতি বছর যে কুকুর বেড়ালের পাশাপাশি মানুষের প্রেমেরও বাম্পার ফলন হচ্ছে এটা দেশ - বিদেশে ফলাও করে প্রচার হচ্ছে না কেন? এসব প্রচার করা হোক, আমরা দেশ - বিদেশে প্রেমময় জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করি । ( বিশেষ দ্রষ্টব্য: শরীর বা প্রেম কোনটাই ঠিক জনসম্মুখে দেখাইয়া বেড়াইবার বস্তু নহে । ইহার ব্যাপ্তি, প্রসার একান্তে নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাই বাঞ্ছনীয় এবং তাহা বুদ্ধিমান - বুদ্ধিমতীর পরিচয়ও বটে! ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.