আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোটিপতি হবার সহিহ নূরানি তরীকা! (রম্য রচনা)

কুলক্ষয়ে কলুষিত সনাতন ধর্ম, ধর্মনষ্টে পাদুর্ভাব হইবে অধর্ম অধর্মের পাদুর্ভাবে কুলনারীগণ, পতিতা হইবে সব কর অন্বেষণ। খুবই সিরিয়াস একটা পোস্ট। তাই হাসি আসলেও হাসবেন না, কাশি আসলেও কাশবেন না। মহান বাবা ইউক্লিডের বানী ফলো করলে মাত্র ৩০ দিনের উপাসনায় আপনি হতে পারবেন ৩০০ কোটি টাকার মালিক। বিস্তারিত পড়ুন।

◘ ক্যাপিটালঃ বিজনেস শুরু করতে হলে দরকার কিছু ক্যাশ টাকার। নো প্রবলেম। এই পোস্ট পড়া শেষে ল্যাপটপ/ডেস্কটপ/মোবাইল যা দিয়ে আপনি এই পোস্ট পড়ছেন তা থলিতে ভরে গুলিস্তানের উদ্দেশ্যে প্রস্থান করুন। আল্লাহু আকবর বলে জিনিসগুলা বিক্রি করে দিন। টেনশনের কিছু নাই, ৩০ দিন পর এমনিতেই আপনি কোটিপতি হচ্ছেন।

একআধটু সেক্রিফাইসতো করতেই হবে নাকি! ◘ চেহারা সুরতে বিজনেসম্যান হউনঃ হিসেব মতে, আপনার পকেটে এখন বেশ মালপানি আছে। বিজনেসম্যান হতে হলে, ভালো একটা গেটাপ নেয়া অতি জরুরি। তাই সময়ক্ষেপণ না করে, অবিলম্বে গুলিস্তান থেকে সস্তায় আরমানি ব্র্যান্ডের রেডিমেড স্যুট আর লাল রঙের টাই কিনে নিন। জুতা না থাকলে, এলিফেণ্ট রোডের ফুটপাত থেকে কালা রঙের অক্সফোর্ড শু কিনে নিবেন। কি আয়নায় চোখ ফেরাতে পারছেন না, তাইতো? এইবার মারলবোরো টানতে টানতে বাড়ি ফিরে যান।

আপনি এখন বিজনেসম্যান। ভুলেও আকিজ বিড়ির দিকে হাত দিবেন না। ◘ কোম্পানি খুলবেন যেভাবেঃ এইবার আপনাকে একটি এনজিও টাইপ কোম্পানির মালিক হতে হবে, যা সমাজ ও জাতির সার্বিক কল্যাণে চতুর্মুখী পদক্ষেপ নিবে। সো এখন, সাইবার ক্যাফেতে একটু ঢুঁ মেরে, যেকোনো আমেরিকান মালদার পাবলিকের ফেইক একাঊণ্ট খুলে নিন। এইবার তাঁকে এডমিন/বস বানিয়ে এনজিও এর জন্য একটা ফেসবুক গ্রুপ খুলুন আর আপনার সব আবাল ফ্রেন্ডদেরকে উহাতে জোর পূর্বক চালান দিন।

এনজিও এর জন্য সুন্দর একটা নাম বাছাই করুন। ধরি নামটা "হোয়াইট হেরন" মানে "সাদা বক"। ◘ কোম্পানির বিবরনঃ এনজিওয়ের নামঃ হোয়াইট হেরন" শ্লোগানঃ সত্যের ছায়ায়, মিথ্যার হাওয়ায়। বসঃ ডেভিড গেটস (আপনার ফেইক একাঊণ্ট) বাংলাদেশ ব্রাঞ্চঃ গু আজম প্লাজা, মগবাজার, ঢাকা। বাংলাদেশ এমডিঃ আবরার খান (আপনার ভুয়া নাম) ◘ কোম্পানির লাইসেন্সঃ আমাদের নেক্সট ডেসটিনেশন হচ্ছে নীলক্ষেতের চিপা সুরঙ্গপথ।

স্বল্প আলোতেই, সিস্টেম করে কোম্পানির সব ডকুমেন্ট তৈয়ার করে নিন। পাশাপাশি নিজের নামে কয়েকটা কার্ড ছাপিয়ে নিন। মাশাল্লাহ! আল্লাহর কি কেরামতি! রাতারাতি আপনি একটা ১০০% হালাল একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মালিক হয়ে গেলেন। দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে ভুলবেন না। ◘ বিজনেস স্ট্রেটিজি ও ডিলিংসঃ এইবার সোজা চলে যান পরিবেশ ও বন মন্ত্রালয়ের কার্যালয়ে।

যাবার আগে ভালো গেটাপের পাশাপাশি ভালো পারফিউম ইউজ করুন। আপনার দুইজন বাদাইম্মা ফ্রেন্ডকেও মেনেজার বানিয়ে সঙ্গে নিয়ে যাবেন। সুন্দরদেহের অধিকারী (জাস্তি) নারীফ্রেন্ড থাকলে তাকে অবশ্যই পি.এ. করে নিন। (মেনেজ না হলে কাওরানবাজার/বনানীতে খোঁজ নিন। ৭০০ টাকায় ভিআইপি মাল পাওয়া যায়) হটকেকের দরকার আছে।

আইটেম অবশ্যই স্লিভলেস শিফনের শাড়ি পরিধান করবে। এইবার মন্ত্রনালয়ে গিয়ে হেভি পার্ট নিয়ে সচিবকে বলবেন যে, আপনার কোম্পানি "হোয়াইট হেরন" মানে সাদা বক, বাংলাদেশে তাদের ৯৯তম ব্রাঞ্চ খুলেছে। প্রথমে তারা বাংলার জনগণকে বনায়নে আগ্রহী করে তাদের স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করবে। কোম্পানির একজন গ্রাহক প্রথমে গাছ লাগাবে, গাছের ফল বিক্রি করবে পরবর্তীতে গাছ কেটে ফার্নিচার, ক্রিকেট ব্যাট, নৌকা (নৌকা কথাটি সচিবের বুকে ঘাই করে বিধবে) ইত্যাদি তৈরি করবে। পাশাপাশি কোম্পানি এই ফার্নিচার, ব্যাট, নৌকা বিদেশে (যেখানে অনেক চাহিদা) সেখানে রপ্তানি করবে।

দেশ বৈদেশিক মুদ্রায় ভাসবে। কিন্তু লাগানো গাছ বড় হতে হতে প্রায় একবছর সময় চলে যাবে। একবছর যাতে বৈদেশিক মুদ্রা মিস না হয়ে যায়, তাই কোম্পানি নির্দিষ্ট প্রজাতির কিছু গাছ লিজ নিতে চায়। আর পরিবেশ মন্ত্রনালয় যদি কোম্পানিকে বিনামুল্যে গাছ লিজ দেয় তাহলে মন্ত্রণালয়ও মালে ভাসবে। একদিকে টাকার লোভ অন্যদিকে আপনার পিএর সুউচ্চ (@)(@) দেখে সচিব বেচারা কি রাজি না হয়ে পারেন! তিনি সাথে সাথে আপনাকে ১০ লক্ষ গাছের লিজ ইস্যু করে দিবেন।

এবং শর্ত থাকবে যাবতীয় লেনদেন সব আপনার পিএর মাধ্যমেই হবে। ব্যাপার না, (কত আসবে, আর যাবে) হাসিমুখে রাজি হয়ে যান। ◘ বিজনেস প্রফিটঃ পরের দিন মন্ত্রনালয় থেকে আপনার ভাড়া নেয়া কাঁঠালগাছ বুঝে নিন। গাছের সেরা কাঁঠালগাছ। লক্ষ গাছে কোটি পাতা।

তাই গাছের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। কচি কাঁঠালপাতার লোভে এমনিতেই ছাগুর দল আপনার আশেপাশে ম্যা ম্যা চিৎকারে করুণ আকুতি জানাবে। পাত্তা দিবেন না। গু আজম, মতিচুর ও গুজামীর চেলাদের হাওয়াই দেয়া চলবে না। দুই এক দিনের মধ্যেই চামাত-চিবিরের হেড অফিস ইসরাইল থেকে ফোন আসবে।

তারা ছাগুদের জন্য নিয়মিত কাঁঠালপাতা নিশ্চিত করতে আপনার সাথে ডিল করতে চায়। কিঞ্চিৎ ইতস্তত করে রাজি হয়ে যান। ◘ ২ বছর পরঃ আপনার দুঃখের দিন শেষ। আপনি এখন কোটিপতি। দশ কোটি কাঁঠালগাছের একক মালিকানার অধিকারী।

গুলশান, ধানমণ্ডিতে বিশাল বাগানবাড়ি। সুইস ব্যাঙ্কে রাশি রাশি টাকা। হোয়াইট হেরন কোম্পানি এখনো মাইক্রোসফটকে টেক্কা দেয়। সদ্য পারিসা শাকুর কে বিয়ে করেছেন। ডেইলি রাইতে মিউচুয়াল ফটুগ্রাফি চলে আরকি, লুল।

আমার আরও কিছু পোস্টঃ • ছাগুবন্দনা (ছাগুদের অধিকার আদায়ের গল্প) • পদ্মা সেতুর বিকল্প হতে পারে বাঁশের সাঁকো ! দয়া করে পোষ্টটি আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করুন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।