আমি ভাল নেই আমি জামায়াত ইসলামের মালিকানায় ও পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা "ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজে" ৭ম শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছি। সেই সুযোগে আমি জেনেছি কি করে নতুন প্রজন্মকে জামাত-শিবির চক্র ধীরে ধীরে নব্য রাজাকারে পরিণত করে।
আমি যখন ৭ম শ্রেনীতে পড়ি, তখন আমাদের পাঠ্য ছিল গোলাম আজমের লেখা বই, "কিশোর মনে ভাবনা জাগে" এবং আজ অবধি এই বই সেই ক্লা
সে পাঠ্য বই হিসেবে পড়ানো হচ্ছে।
তখনকার সময় বিএনপি-জামাত রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন। দেলোয়ার হোসেন সাঈদী প্রতিবছর একবার এই প্রতিষ্ঠানে আসতেন ওয়াজ-মাহফিল করার জন্য।
ওয়াজের নামে তিনি বুঝিয়ে দিতেন, কিভাবে এর আগের সরকার দেশ থেকে ইসলাম নির্মূল করার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। তন্ময় হয়ে সকল ছাত্ররা তার এই পলিটিকাল ওয়াজ শুনত, আর ইসলাম নির্মূল করার জন্য শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি একদলা ঘৃনার থুতু ছিটাত আর জোরেশোরে "নাউজুবিল্লাহ" বলে উঠত।
যখনই মাহফিলের এক পর্যায়ে তিনি বলতেন, আর চিন্তার কারণ নেই-দেশে এখন ইসলামী শক্তি ক্ষমতায় এসেছে; সকলে জোশের সাথে বলে উঠত "আল্লাহু আকবার"।
এসব দেখা ছিল আমার নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। এই সব প্রতিষ্ঠানে যেহেতু বাংলা-ইংরেজীর পাশাপাশি আরবী পড়ানো হয়, তাই বেশীর ভাগ প্রবাসী আর অসচেতন মধ্যবিত্তরা তাদের সন্তানদেরকে এখানে পড়তে দেয়।
আমাদের সাথে অনেকেই ছিল যারা ছাত্রশিবির করত, তাদেরকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলত, আমরা "ফুলকুড়ির আসরে" ছিলাম আগে, সেখান থেকে বের হওয়ার পর ছাত্র-শিবিরে যোগ দিয়েছি।
"ফুলকুড়ির আসর" জামাত-শিবিরের পরিচালনায় এই সেই আসর,যেখানে ফুলকে কুড়িতেই নষ্ট করে ফেলা হয়। এই সংগঠনটি সম্পূর্ণরুপে ছাত্রশিবিরের কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হয়। এখানেই শিশু-কিশোরদের শিখানো হয়, গোলাম আজম ছিলেন ভাষা সংগ্রামী। এই সংগঠনে, পড়ার বয়স থেকে শিশুরা অংশগ্রহন করে আর ষষ্ঠ শ্রেনীতে এসে শেষ করে।
ফুলকুড়ি থেকে উঠে আসা প্রত্যেকেই ষষ্ঠ শ্রেনীতে এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ছাত্রশিবিরে যোগদান করে।
ছাত্রশিবিরে যোগদান করা এইসব কিশোর রা প্রথম অবস্থায় থাকে শিবিরের সমর্থক। তাদের কাজ থাকে তখন জামাত-শিবিরের সম্পাদিত কিশোর পত্রিকা "কিশোরকন্ঠ" বিক্রি করা আর সংগঠনের রশিদ হাতে নিয়ে নিয়ে সংগঠনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করা। এই সব ছাত্ররা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মর্যাদা ও সুবিধা পেত যা অন্যদের জন্য ছিল লোভনীয় এবং আরাধ্য। এই আকঙ্খা থেকেই তখন অবুঝ বয়সে প্রায় প্রত্যেকেই ছাত্রশিবিরের খাতায় নাম লিখাত।
খুব অল্পই ফিরে আসতে পারে, বাকিরা যেতে থাকে অন্ধকার থেকে ঘোর অমানিশার অন্ধকারের দিকে.....
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।