গাড়ি থেকে নেমে মূল ভবনের দিকে হাটতে লাগলাম আমি, গাজ্জালী ও ডঃ বাদায়ুনী। বাগানের বা দিক থেকে একটা ডাক আসল (গাজ্জালীকে ডাকা হল)। তাকিয়ে দেখি পাইপ দিয়ে গাছে পানি দিচ্ছেন আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব, বিনয়ী সেই মহামানব। হ্যাঁ, ডঃ মাহাথির মোহাম্মদ ... কোয়েল পালন লাভজনক বিধায় অনেক যুবক আগ্রহী হয়ে বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল পালন করছেন। দেশের বিভিন্ন জিলায় ছোট-বড় অনেক কোয়েল খামার গড়ে উঠেছে।
এর রোগ বালাই তেমন নেই, আর এ কারণেই কোয়েল পালনের উপর খামারীরা দূর্বল। তাছাড়া এর ডিম যে কোন ডিমের তুলনায় অধিক পুস্টিকর। কোয়েল পালন করার জন্য অতিরিক্ত বা বাহুল্য কোন খরচ হয় না। বাড়ির যেকোন কোণ বা আঙিনা অথবা বাড়ির ছাদ ইত্যাদি জায়গাতেও সহজেই পালন করা যায়। এই কারণে শহরে কী গ্রামে অনেক স্থানেই কোয়েল পালন ব্যাপক ও সহজতর হয়েছে।
আমাদের দেশে হাঁস-মুরগী-ছাগল-গরু ইত্যাদির উপর প্রশিক্ষণ সুবিধা থাকলেও কোয়েল পাখির উপর আলাদা কোন প্রশিক্ষণ সুবিধা নেই। যেটুকু আছে তাও পর্যাপ্ত বলা যাবে না কোনভাবেই। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোয়েল খামারীরা পর্যাপ্ত লাভ করতে পারেন না। গত কয়েকদিনে আমাকে মেইল করে অনেকেই কোয়েল পরিচর্যা, কোয়েলের খাঁচাতে ইদূর/চিকা রোধ করা, ডিম উৎপাদন বাড়ানো, কোয়েল পালনে লক্ষ্যণীয় বিষয়সমূহ ইত্যাদি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
কোয়েল পালনে লক্ষ্যণীয় বিষয়সমূহ -
লিটার পদ্ধতিতে খামার প্রস্তুত করা -
জি আই তার, বাশের বেড়া, জালি তার ইত্যাদি দিয়ে সাধারনত লিটার খাঁচা প্রস্তুত করা হয়।
লক্ষ্য রাখতে হবে যেন লিটার খাঁচার ফাঁক আবশ্যই এক বর্গ ইন্ঞ্চির কম হয়।
লক্ষ্যণীয় আরো একটি বিষয় হল, লিটার খাঁচার নীচের দিকের এক ফুট পর্যন্ত কোন প্রকার ফাঁক না রাখা। এতে ইদূর/চিকা/সাপ ইত্যাদির উপদ্রব থেকে পাখি রক্ষা পাবে।
পাখির ঘনত্ব
একটি পাখির জন্য গড়ে .৭৫ বর্গফুট জায়গা আদর্শ। তবে গড়ে .৬ বর্গ ফুট হিসেবে লিটার খাঁচা প্রস্তুত করা যায়।
তবে .৬ এর চেয়ে কম হলে পাখির ডিম উৎপাদণ কমে যেতে পারে।
কোয়েলের স্টার্টার ব্রয়লার ও স্টার্টার লেয়ার খাদ্য নিশ্চিত করা -
বাচ্চা ক্রয় করার আগে কাছাকাছি ফীড ক্রয় করার দোকানদারদের সাথে কথা বলে ডিটেইলস জেনে নিতে হবে। মানসম্পন্ন কোম্পানীর স্থানীয় ডিলার/সাব ডিলারের সাথে পরামর্শ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের কোন কোন জায়গায় শুধুমাত্র ব্রয়লার ফীড বিক্রয় করে, লেয়ার ফীড বিক্রি করে না। কিন্তু অধিক ডিম উৎপাদনের জন্য ব্রয়লার ও লেয়ার ফীড অর্ধেক অর্ধেক মিশিয়ে কোয়েলকে দিতে হবে।
বাচ্চা ক্রয়
কোয়েলের বাচ্চা ক্রয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা ভাল বাচ্চা ছাড়া কোনভাবেই অধিক ডিম উৎপাদন আশা করা যায় না। অনেক খামারী আছেন যারা বাচ্চাদের হাই এন্টিবায়োটিক খাইয়ে বড় করে। এ সকল বাচ্চাগুলো সাধারনত বছরে গড়ে ২২০-২২৫ টির বেশি ডিম দেয় না। তাই বাচ্চা কেনার সময় এ দিকটি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রয়োজনে অভিজ্ঞ লোকের পরামর্শ নিতে হবে।
অধিক ডিম উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত আলো/বাতাস ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, শীত ও গরমে আলাদা পরিচর্যা সহ আরো বেশ কিছু বিষয় খামারীকে লক্ষ্য রাখতে হবে যা পরবর্তী আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে ইনশাল্লাহ।
কোয়েল পালন বিস্তারিত ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।