আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে এরকম বিড়ম্বনায় আপনিও পড়তে পারেন!

মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও। (Sura Hujurat:7) সাবধান! মন্দ ধারণা হতে দূ ঢাকার একটি সরকারী কলোনীর পাশে আমার বাসা। কাছাকাছি আর কোন বড় মসজিদ না থাকায় কলোনীর মসজিদেই সালাত পড়ার চেষ্টা করি। এই মসজিদে আবার মুসল্লীগন বেশ ফাঁকা ফাঁকা হয়ে একটু বিলাসীভাবে দাড়েতেই বেশী ভালবাসে। যাহোক কোন একদিন রমজানে জোহরের নামাজ জামাতে পড়তে দাড়িয়েছি, হঠাত আমার পাশে দাড়ানো বাবার বয়সী মুসল্লী আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলেন।

আমি কিছু বুঝতে উঠতে না পেরে আবার উনার কাছাকাছি দাড়ানোর চেষ্টা করলাম যাতে খুব বেশী ফাঁক না থাকে। এবার ও একই অবস্হা সাথে হালকা আওয়াজে বললেন ফাঁকা হয়ে দাড়ান। পাশের ব্যাক্তির কাছ থেকে সরে দাড়ানোর request পাওয়াটা যে হজম করা একটু কঠিন তা কিন্তু হাড়ে হাড়ে টের পেলাম ....সাথে ধাক্কাটা ছিল আবার বোনাস। বিষয়টি আমাকে দুই দিক দিয়ে বেশ অস্ততিতে ভোগাচ্ছিল। এক তো হজমে সমস্যা আর দ্বিতীয়ত এত ফাঁকা হয়ে দাড়ানো, যেন মনে হচ্ছে জামাতে দাড়িয়েও একাই নামাজ পড়ছি ।

নামাজ শেষ করে মুসল্লী চাচাকে কিছু বলতে খুব ইচ্ছা হল। কিন্তু সাহস হচ্ছিল না, যদি চেচিয়ে উঠেন। কারন একটু আগে ধাক্কা খেয়েছি তো কেউ খেয়াল করেনি, আর চেচামেচি হলে তো লোকজন জমে যাবে, তখন আম ছালা সবই যাবে। তবে যখন দ্বীনের দাওয়াতের কথা মনে হল তখন মনটা বেশ শক্ত হল এবং একটা বুদ্ধিও আসল। তাড়াতাড়ি আমার সাথে থাকা মোবাইলটা বের করে http://www.shorolpoth.com এর কতিপয় গুরুত্বপুর্ন হাদীসের পেজ থেকে কাতারের মাঝে ফাঁক বন্ধ করার হাদীসটা বের করলাম।

এবার সর্বোচ্চ বিনয়ের সাথে চাচাকে বললাম...চাচা যদি একটু সময় দেন তাহলে একটা জিনিস দেখাতাম। তিনি বেশ সহজেই রাজি হয়ে গেলেন। আমি তাকে সুনানে আবু দাউদের নিচের হাদীসটি দেখালাম। রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন “কাতার সোজা করো, কাঁধের সাথে কাঁধ বরাবর করো, ফাঁক বন্ধ করো, শয়তানের জন্য কোন ফাঁক রাখবে না। যে ব্যক্তি কাতারের সংযোগ স্থাপন করে আল্লাহও তার সাথে সংযোগ স্থাপন করেন, আর যে কাতার ছিন্ন করে, আল্লাহও তার সাথে সংযোগ ছিন্ন করেন।

” (আবু দাউদ, প্রগুক্ত, কিতাবুস সালাত, বাব নং ৯৫, হাদীস নং ৬৬৬, ১/১৭৮)এই হাদীসটি ইমাম ইবনে খুযায়মাঃ ও ইমাম হাকিম সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। হাদীসটি পড়ে উনার অভিব্যাক্তি দেখে তো আমি অবাক......তিনি আমার সব আশংকা ভুল প্রমান করে দিয়ে বললেন .....হা আমি তো আগে এরকমই জানতাম...আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবই তো এশার নামাজে বলেন ফাঁকা ফাঁকা হয়ে দাড়াতে। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না সমস্যাটা কোথায়। তবে ফিতনা এড়ানোর লহ্মে একলা চল নীতি অবলম্বন করে বাকি নামাজ শেষ করে বাসার দিকে যেতে লাগলাম। কিন্তু একটা অপরাধ বোধ বার বার আমাকে ভুগাতে লাগল যে, হাদীসটি জানার পরও কেনও আমি তা ইমাম সাহেবকে জানবো না বা তার কাছ থেকে এটার কোন ব্যাখ্যা জানতে চাইব না।

এভাবে কয়েকদিন চলার পর মনের সাথে আর পেরে উঠতে পারলাম না, তাই কোন এক এশার নামাজের পর ইমাম সাহেবকে একাকী জিঞ্জাসা করলাম এবং হাদীসটি জানালাম। তিনি আমার কথা বা হাদীস কোনটিকেই গুরুত্ব না দিয়ে বললেন আপনার মাযহাব কি? তারপর বললেন আমাদের মাযহাবে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে দাড়ানো জায়েয আছে। বলেই উনি আমাকে পাত্তা না দিয়ে হাটা ধরলেন। ব্যাপারটা আমার কাছে এরকম মনে হল যে, সহীহ হাদীসে কি আছে সেটা কোন বিষয় না। বিষয় হল মাযহাবে কি আছে? এবং মাযহাবের কোথায় কিভাবে তাও জানা বা জনানোর দরকার নাই।

বার বার মনে হচ্ছিল ইমাম আবু হানিফার সেই উক্তিদুটি ক. ‘যখন ছহীহ হাদীছ পাবে, জেনো সেটাই আমার মাযহাব’। (হাশিয়াহ ইবনে আবেদীন ১/৬৩। ) খ. ‘যে ব্যক্তি আমার দলীল জানে না, আমার কথা দ্বারা ফৎওয়া প্রদান করা তার জন্য হারাম’। (ড. অছিউল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আব্বাস, আত-তাক্বলীদ ওয়া হুকমুহু ফী যুইল কিতাব ওয়াস-সুন্নাহ, পৃঃ ২০। ) (বিস্তারিত এখানে Click this link. ..) তারপরও ব্যাপারটি আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে, ইমাম আবু হানিফা এভাবে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে দাড়ানোর আদেশ দিয়েছেন।

তাই কিছু দেওবন্দী ভাইয়ের সাথে আলাপ করলাম। এবং তারা আমকে নিশ্চিত করল ইমাম আবু হানিফা এভাবে কিছু বলেন নি। যাই হোক ব্যাপারটা নিয়ে হয়ত আমাদের সবারই একটা পরিস্কার ধারনা থাকা দরকার তাই কুরআন সুন্নাহর আলোকে জামাতে দাড়ানো নিয়ে একটি সংহ্মিপ্ত আলোচনা শেয়ার করলাম: নামাযের কাতারে পরস্পর কাঁধ ও পা মিলিয়ে দাঁড়ানোঃ সহীহ বুখারী শরীফে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি রাসূল (সঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসূল (সঃ) বলেছেন, “তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করো, কেননা, আমি তোমাদিগকে আমার পিঠের পিছন থেকে (বাঁকা অবস্থায়) দেখতে পাই।

আনাস (রাঃ) বলেন: (রাসূল (সঃ) এর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে) আমাদের একজন তাঁর কাঁধ ও পা তাঁর পার্শ্বের জনের কাঁধ ও পায়ের সাথে মিলিয়ে রাখতো। ” (বুখারী, প্রাগুক্ত; কিতাবুল আ-যান, বাব নং ৪৭, হাদীস নং ৬৯২, ১/২৫৪; ইবনে হাজার, ফতহুল বারী; কিতাবুল আ-যান, বাব নং ৭৬, হাদীস নং ৭২৫, ২/২১১) এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর সাহাবীগণকে নামাযে কাতার সোজা করার ব্যাপারে নির্দেশ করেছিলেন। তিনি তাঁর সাহাবীগণকে এজন্য পরস্পরের সাথে কাঁধে কাঁধ ও পায়ে পা লাগিয়ে দাঁড়াতে না বললেও তাঁরা কাতার সোজা করার জন্য এমনটি করেছিলেন। তবে ইবনে ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তাঁরা রাসূল (সঃ) এর এ সংক্রান্ত অপর একটি নির্দেশ পালন করতে যেয়েই এমনটি করেছিলেন। রাসূল (সঃ) বলেছেনঃ “কাতার সোজা করো, কাঁধের সাথে কাঁধ বরাবর করো, ফাঁক বন্ধ করো, শয়তানের জন্য কোন ফাঁক রাখবে না।

যে ব্যক্তি কাতারের সংযোগ স্থাপন করে আল্লাহও তার সাথে সংযোগ স্থাপন করেন, আর যে কাতার ছিন্ন করে, আল্লাহও তার সাথে সংযোগ ছিন্ন করেন। ” (আবু দাউদ, প্রগুক্ত, কিতাবুস সালাত, বাব নং ৯৫, হাদীস নং ৬৬৬, ১/১৭৮) এই হাদীসটি ইমাম ইবনে খুযায়মাঃ ও ইমাম হাকিম সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। (ইবনে হাজার আসক্বলানী, ফাতহুল বারী; প্রগুক্ত; ২/২১১) এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কাতার সোজা করে দাঁড়ানোর নির্দেশ করার পাশাপাশি দু’জনের পায়ের মধ্যখানে কোন ফাঁক না রাখার ব্যাপারেও তাঁর সাহাবীদের প্রতি নির্দেশ করেছিলেন। আর সে জন্যেই তাঁরা পরস্পরের সাথে কাঁধে কাঁধ বরাবর করার পাশাপাশি পায়ের সাথে পা ও মিলিয়ে দাঁড়াতেন। এত প্রমাণিত হয় যে, নামাযের কাতারে পরস্পরের সাধে কাঁধ ও পা যথাসম্ভব লাগিয়ে দাঁড়ানো সুন্নাত।

এ বিষয়টি অন্যান্য মাযহাব দ্বারা সমর্থিত হলেও হানাফী মাযহাবে শুধু পরস্পর মিলিয়ে ও কাঁধের সাথে কাঁধ বরাবর করে দাঁড়ানোর বিষয়টি সমর্থিত হয়েছে। পায়ের সাথে পা মিলানোর বিষয়টি সমর্থিত হয়নি। যেমন, হানাফী মাযহাবের ফিকহের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘বাদাই’উস সানাএ’-তে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছেঃ “আর যখন কাতারে দাঁড়াবে তখন পরস্পর মিলে দাঁড়াবে এবং কাঁধের সাথে কাঁধ বরাবর করবে কেননা; রাসূল (সঃ) বলেছেন: তোমরা পরস্পর মিলে দাঁড়াও এবং কাঁধের সাধে কাঁধ মিলাও। ” (আল-কা-সানী, ‘আলাউদ্দীন আবু বকর ইবন মাস’উদ, বাদই’উস সানাএ; (করাচী: এস.এম.সাঈদ কমআপনী, ১ম সংস্করণ, ১৯১০ ইং), ১/১৫৯) এ হাদীসে পায়ের সাথে পা মিলাও, এ কথাটি না থাকায় আমাদের মাযহাবে পায়ের সাথে পা মিলানোর বিষয়টি কোন গুরুত্ব পায়নি। যদিও তা উপর্যুক্ত আনাস ও ইবনে ‘উমার (রাঃ) এর হাদীসদ্বয় দ্বারা প্রমাণিত।

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, মাযহাবে যেটুকু করার নির্দেশ রয়েছে আমাদের সমাজে সেটুকু করারও প্রচলন নেই। নামাযে দাঁড়ালে প্রতি দু’জন নামাযীর মাঝখানে বিস্তর ফাঁক পরিলক্ষিত হয়। কাঁধের সাথে কাঁধ মিলানো তো দূরের কথা একটু কাছে আসতে বললেও তারা আসতে চান না। উল্লেখ্য যে, ‘সাহাবীগণ পায়ের সাথে পা লাগাতেন’ এ-কথাটিকে আমাদের মাযহাবের কোন কোন বিদ্বান ‘পায়ের গোড়ালির সাথে গোড়ালি মিলাতেন’ মর্মে ব্যাখ্যা করেছেন। সে-কারণেই আমরা পায়ের সাথে পা মিলাতে চাই না।

যদিও ইমাম ইবনে হাজার ‘আসক্বলানী এ বর্ণনানুযায়ী এ-ব্যাখ্যাটি একটি অনুল্লেখযোগ্য মত, যা মাযহাবের মুহাক্কিক বিদ্বানদের দ্বারা সমর্থিত নয়। (ইবনে হাজার আসক্বলানী, ফতহুলবারী; ২/২১১) জাবির ইব্ন সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমাদের নিকট আগমন করে বললেন তোমরা চঞ্চল ঘোড়ার লেজের মত হাত উঠাচ্ছ কেন? সালাতের মধ্যে নিশ্চল থাকবে। একবার তিনি আমাদেরকে দলে দলে বিভক্ত দেখে বললেন, তোমরা পৃথক পৃথক রয়েছ কেন? আরেকবার আমাদের সামনে এসে বললেন, তোমরা কেন ফিরিশতাদের মত কাতার বেঁধে দাঁড়াচ্ছ না যেভাবে তারা তাদের প্রভুর সামনে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ায়? আমরা জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসূলুল্লাহ্! ফিরিশতাগণ তাদের রবের সামনে কিভাবে কাতারবন্দী হন? তিনি বললেন, ফিরিশতাগণ সামনের কাতারগুলি আগে পূর্ণ করেন এবং গায়ে গায়ে লেগে দাঁড়ান । (মুসলিম-ই:ফা:৮৫১) উপর্যুক্ত হাদীস সমূহের বিভিন্ন শব্দ ও বাক্যের প্রতি লক্ষ্য করলে পায়ের সাথে পা মিলানোর কথাই সঠিক বলে প্রমাণিত হয়। কেননা, রাসূল (সঃ) দু’জনের মধ্যে শয়তানের দাঁড়ানোর স্থান রাখতে নিষেধ করেছেন।

কাঁধের সাথে কাঁধ বরাবর বরে দাঁড়ালে রাসূল (সঃ) এর উক্ত নির্দেশটি আংশিকভাবে পালিত হলেও পায়ের সাথে পা লাগিয়ে দাঁড়ালে তা পূর্ণভাবে পালিত হয়। এছাড়া সহীহ বুখারী শরীফে নু’মান ইবনে বশীর (রহঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন: “আমি আমাদের একজনকে তাঁর পাশের জনের র গ্রন্থির সাথে তাঁর পায়ের গ্রন্থি মিলাতে দেখেছি। ” (বুখারী, প্রগুক্ত; কিতাবুল আযান, বাব নং ৪৭; ১/১৫৪) বস্তুত পায়ের সাথে পা মিলানো কথাটি হাদীসে সুস্পষ্টভাবে থাকা সত্বেও গোড়ালির সাথে গোড়ালি মিলানোর দ্বারা এর ব্যাখ্যা করা আদৌ সমীচীন নয়। কেননা, ‘কা’ব শব্দটির আভিধানিক অর্থ: টাখনু বা গ্রন্থি। তা পায়ের গোড়ালির অর্থ প্রকাশ করার কথা কোন অভিধানে পাওয়া যায়না।

তা ছাড়া এর দ্বারা যদি গোড়ালির অর্থই উদ্দেশ্য হয়ে থাকতো, হা হলে আনাস (রাঃ) ও নু’মান ইবনে বশীর এর হাদীসে বর্ণিত ‘ক্বাদাম’ ও ‘কা’ব শব্দের পূর্বের ক্রিয়াপদটি ‘ইয়ালঝিকা’ না হয়ে ‘ইউছাও-ওয়াই” ব্যবহ্রত হতো। অর্থাৎ কথাটি এভাবে হতো: ‘আমাদের একজন তাঁর পায়ের গোড়ালী অপরজনের গোড়ালির বরাবর করতো। ” কিন্তু কথাটি এভাবে না হয়ে হয়েছে: ‘আমাদের একজন তাঁর পা অপরজনের পায়ের সাথে লাগাতেন’। এতে প্রমাণিত হয় যে, সাহাবীগণ আসলে পায়ের সাথেই পা মিলাতেন। কেননা, এদে দু’জনের মাঝে ফাঁক না রাখা সংক্রান্ত রাসূল (সঃ) এর নির্দেশ পূর্ণভাবে পালিত হয়; যা গোড়ালির সাথে গোড়ালি বরাবর করলে সঠিকভাবে পালিত হয়না।

তবে আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, এক ব্যাখ্যাটি হাদীস বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও এবং মাযহাবের সকলের দ্বারা সমর্থিত না হয়ে কারো কারো দ্বারা সমর্থিত হওয়া সত্ত্বেও এটাই আমাদের নিকট অনুসরণীয় হয়ে রয়েছে। যা আদৌ উচিত নয়। আসুন আমরা জাম’আত সহকারে নামায আদায় করার সময় আমাদের পার্শ্ববর্তী মুক্তাদীর সাথে কাঁধে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলিয়ে ফাঁকা জায়গা বন্ধ করে দাঁড়াই। অনেকে বলেন, পাশের ব্যক্তি বয়সে বড়; ওনার পায়ের সাথে পা লাগলে আদবের খেলাফ হবে। একবার ভাবুনতো; সাহাবীগণ কিভাবে একজনের পায়ের সাথে পা লাগিয়ে দাঁড়াতেন? নামাজে কোন ছোট -বড়, ধনী-গরীব নাই, এখানে আমরা সবাই আল্লাহর দাস; এখানে কোন অহংকার নিয়ে দাঁড়ানো যাবে না; পাশের ব্যক্তি ভিখারী হলেও তার সাথে মিলে মিশে দাঁড়াতে হবে।

কাল কেয়ামতের মাঠে কারো গায়েই দামী পোশাক বা গলায় দামী নেকলেস থাকবে না, যা দ্বারা আভিজাত্য প্রকাশ পাবে। সবাই আল্লাহর সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকব। ভয়ে সবার অবস্থা এমন হবে যে, কেউ কারো দিকে তাকানোর সময় পাবে না। ইয়অ নফসী, ইয়া নফসী করতে করতে গলা কাঠ হয়ে যাবে!!! আসুন আমরা অন্ধ গোঁড়ামি থেকে নিজেদের মুক্ত করে এক কুরআন-সুন্নাহর পতাকা তলে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করি। পরিশেষে কিছু কোরআনের আয়াত দিয়ে আজকের কিস্তি শেষ করছি: তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না।

“(Al-'A`rāf:2-2-3) “আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। ”(আল-ইমরান:১০৩) “নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপার আল্লাহ তা’আয়ালার নিকট সমর্পিত। অতঃপর তিনি বলে দেবেন যা কিছু তারা করে থাকে।

[সূরা আনাআম ১৫৯] ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.