আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াত নেতার সমকামিতা নিয়ে নিশ্চুপ, কিন্তু ঘেটুপুত্র নিয়ে কলরব। কেন?

http://www.facebook.com/Kobitar.Khata প্রথমেই জেনে নিন ঘেটুপুত্র কমলার কাহিনী সংক্ষেপ। চলচ্চিত্রটির সময়কাল ব্রিটিশ আমল। প্রায় দেড়শ বছর আগের এক গ্রামীন পরিবেশের কথা খুজে পাওয়া যায় চলচ্চিত্রটিতে। ব্রিটিশ শাসনাধীন (বর্তমান বাংলাদেশের) হবিগঞ্জ জেলার জলসুখা গ্রামের পটভূমিতে চলচ্চিত্রটির কাহিনী চিত্রিত। সে সময় জলসুখা গ্রামের এক বৈষ্ণব আখড়ায় ঘেটুগান নামে নতুন গ্রামীন সঙ্গীতধারা সৃষ্টি হয়েছিল।

নতুন সেই সঙ্গীত ধারাতে মেয়েদের পোশাক পরে কিছু সুদর্শন সুন্দর মুখের কিশোরদের নাচগান করার রীতি চালু হয়। এই কিশোরদের আঞ্চলিক ভাষাতে ঘেটু নামে ডাকা হতো। নব এই সঙ্গীত ধারাতে গান প্রচলিত সুরে কীর্তন করা হলেও উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের প্রভাব বেশ লক্ষনীয় ছিল। গ্রাম্য অঞ্চলের অতি জনপ্রিয় নতুন সঙ্গীতরীতিতে নারী বেশধারী কিশোরদের উপস্থিতির কারণেই এর মধ্যে অশ্লীলতা ঢুকে পড়ে। সমাজের বিত্তবানরা বিশেষ করে জমিদারদের এইসব কিশোরকে যৌনসঙ্গী হিসেবে পাবার জন্যে লালায়িত হতে শুরু করেন।

একসময় সামাজিকভাবে বিষয়টা স্বীকৃতি পেয়ে যায়। হাওর অঞ্চলের জমিদার ও বিত্তবান শৌখিন মানুষরা বর্ষাকালে জলবন্দি সময়টায় কিছুদিনের জন্যে হলেও ঘেটুপুত্রদের নিজের কাছে রাখবেন এই বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে বিবেচিত হতে থাকে। আর তাদের বিত্তবানদের স্ত্রীরা ঘেটুপুত্রদের দেখতেন সতীন হিসেবে। কমলা নামের এমনই এক ঘেটুপুত্রের গল্প নিয়েই হুমায়ুন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। ঘেটুপুত্র কমলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিশুশিল্পী মামুন।

সূত্র: http://bn.wikipedia.org এই ছবির মাধ্যমে হুমায়ুন আহমেদ এক সময়ের একটি অন্ধকার যুগকে তুলে ধরেছেন। আমি ছবিটি দেখিনি তবে না দেখেও হলফ করে বলতে পারি সে সময়টাকে অবশ্যই তিনি অন্ধকার সময় হিসেবেই তুলে এনেছেন। যুগে যুগে মানবসভ্যতায় অনেক অন্ধকার যুগ এসেছিল। এক একটি সময় এক একটি কুঅভ্যাস মানুষের উপর ভর করত, আবার সেই অন্ধকার সময়কে পরাজিত করে মানুষই একসময় আলোর পথে এসেছে। মানব সভ্যতার সবচে অন্ধকার যুগ ছিল আয়ামে জাহেলিয়া যুগ।

এখন আমি যদি আয়ামে জাহেলিয়া যুগে কি কি বর্বরতা হত তা যদি বলি তাহলে আমাকে কি বলা হবে আমি সে যুগের সে বর্বরতা গুলোরা গুনগান করছি? অথবা আমরা যে সমকামিতার কথা বলছি সে সমকামিতারও একটা অন্ধকার যুগ ছিল। হযরত লুদ (আঃ) এর সময় সমকামিতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। আল কুরানের সাত জায়গায় লুত (আঃ) এর কওমের কথা বলা হয়েছে যাদের কে সমকামিতার অপ্রাধের জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামিন ধংশ করে দেন। লুত (আঃ) এর কওম বাস করত সোদম ও গোমরাহ নগরীতে। এই সোদম থেকে ইংরেজী সোডোমি শব্দটি এসেছে যেটা পায়ুকাম বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

*আল কোরআনের সাত জায়গাঃ ১। সুরা আল আরাফের ৮০-৮৪ আয়াত ২। সুরা হুদ এর ৭১-৮৩ আয়াত ৩। সুরা আল আম্বিয়া এর ৭৪ আয়াত ৪। সুরা আল হাজ্জ্ব এর ৪৩ আয়াত ৫।

সুরা আশ-শুয়ারা এর ১৬৫-১৭৫ আয়াত ৬। সুরা আন-নামল এর ৫৬-৫৯ আয়াত ৭। সুরা আনকাবুত এর ২৭-৩৩ আয়াত সূত্র এখন হযরত লুত (আঃ) এর সময় যে ধরণের সমকামিতা হত তা নিয়ে কথা বললে কি বলা হবে যে আমি সেই সময়টির গুনগান করছি? যদি তা না হয় তবে হুমায়ন আহমেদ তার ছবির মাধ্যমে একটি অন্ধকার যুগকে তুলে আনলে, আমাদের জানালে সেটা কেন সেই অন্ধকার যুগের গুনগান করা হচ্ছে বলে ধরে নিতে হবে? যখনই আপনি কাউকে একটি ভাল উপদেশ বা নির্দেশ দিতে যাবেন তখনই আপনাকে আগে খারাপ জিনিসটার কথা বলতে হবে, তা না হলে খারাপ ভালটা বুঝাবেন কি করে? আয়ামে জাহেলিয়া যুগ যেমন থাকেনি, তেমনি থাকেনি হযরত লুত (আঃ) এর সময়কার সেই অন্ধকার যুগ। থাকেনি প্রায় দেড়শ বছর আগের ঘেটু নাচের যুগও। কিন্তু সেই খারাপ সময় গুলো পার হয়ে আসা মানেই সেই খারাপ সময়কে ভুলে যেতে হবে তা নয়।

সেই খারাপ সময় গুলো কে মনে রেখেই সামনে ভাল সময়ের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। অনেকেই ঘেটুপুত্র কমলা নিয়ে বেশ হুলুস্থুল শুরু করে দিয়েছেন। সেই প্রায় দেড়শ বছর আগের ঘেটুনাচের কাহিনী নিয়ে এত কাহিনী অথচ নিকট অতীতে একজন ধর্মের লেবাসধারী রাজনীতিক অনেক বড় কুকীর্তি করেছিলেন সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নাই। অথচ আমরা সেই নেতার নামে এখনও জিগির তুলি, গলা ফাটাই। উনার কিছু হলে আমরা শহীদ হতেও প্রস্তুত।

কি নির্লজ্জ দ্বিমুখীতা। আসুন সেই কাহিনী আমরা একটু একটু পড়ি এবং ভাবি কার বিরুদ্ধে মুখর হওয়া উচিত, হুমায়ুন আহমেদ নাকি সেই ধর্ম ব্যবসায়ী, ধর্মের লেবাসধারী নেতার। আসুন পড়ি সেই জামায়াত নেতার সমকামিতার কাহিনী।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.