আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপরিচিতার প্রতি

সন্ধ্যার আঁধারে আমি যদি হারিয়ে যাই বন্ধু, আমাকে মনে রেখো তোমার ঘরের ধূপ-আগরের সুবাসে- তোমার ঘরের প্রদীপের আলোয়, আমাকে ফেলে দিও না বাসি ফুলের মত। মনের ঘরেই রেখো বন্ধু পথের ধারের ফুলটি ভেবে। আমি যে জলসাঘরে ...www.jolsaghor.com মেঘমেদুর দ্বিপ্রহরে বাতায়নের পাশে বসিয়া যখনই অব্যক্ত কথাগুলি তোমাকে উদ্দেশ্য করিয়া লিখিতেছি- তখনও জানি না, এমন কোন দিন আসিবে কি আসিবে না- যেইদিন তোমাকে সম্মুখে বসাইয়া কথাগুলি পাঠ করিয়া শুনাইব। সেইদিন অবশ্য সম্বোধনের বিশেষ্যটি বদলিয়া যাইবে। কিন্তু আমি যে একখানি অপরাধ করিয়া লইয়াছি- ‘অপরিচিতা’ সম্বোধন করিয়াও শিষ্টাচারের ঘোমটা ফেলিয়া ‘তুমি’ গোত্রের সম্বোধনবাচক সর্বনামে তোমাকে ডাকিয়া যাইতেছি।

জানি, সেইদিন মার্জনা চাহিবার অবসর থাকিবে না, তাই আগেই মার্জনা চাহিতেছি। বন্দুর পথে চলিতে চলিতে পথের দিশা না পাইয়া তোমাকেই আমার পথের দিশা করিয়াছিলাম। সেই পথের দিশাতে চলিবার সংকল্প করিতেই কোথা হইতে জানি অজস্র পথের দিশা সম্মুখে আসিয়া দণ্ডায়মান হইতে লাগিল। জানি, তাহা প্রলোভনের। হয়তো শুভাকাঙ্ক্ষার অজস্র আশিস।

কিন্তু, আমি যে তোমাকেই পথের দিশা করিয়াছি। দ্বিধাদ্বন্ধের নিযুত শরাঘাত হইতে পরিত্রাণ পাইয়াছি। তোমাকে ঘিরিয়া এত কিছু হইয়াছে- তুমি তাহার এক বিন্দু জানিতেও পারিবে না। আজিকার দিনে যদি মুখ ফিরাইয়া অন্য কোন পথের দিশাতে পথ হাঁটিতে চলি- তুমি জানিবে না। সে কি অপরাধ হইবে না? শাস্তির স্বরূপে আসিয়া বিবেকের দহন ‘অকৃতজ্ঞ’ কালিমার লেপনে আমাকে নাগপাশে জড়াইয়া যাইবে।

অকূল পাথারে অযুত ঊর্মির ফণা দেখিয়া ভীত নাবিক- ধ্রুবতারাকে দেখিয়া বাঁচিবার পথ বাছিয়া লয়; কেহই ত্রাতাকে ভুলিয়া যায় না। আমার না হয় অন্য পথের দিশাতে- অতি মঙ্গল অথবা অতি অশুভ কিছু রইয়াছে, সেই অতি মঙ্গলের আকর্ষণে কেনইবা আমি দ্বিধামুক্তির ত্রাতাকে ভুলিয়া যাইবো? না, তাহা আর হইবে না। ইহার অতিরিক্ত কিছু হইলে তাহাকে বিধির বিড়ম্ববনা বলিতে হইবে- আমি কিন্তু নিশ্চিত দিশা চয়ন করিয়াছিলাম। ইহার অতিরিক্ত হইলে এই কথাগুলি চিরঅশ্রুত হইয়া রহিবে তাহার কাছে- যাহাকে উদ্দেশ্য করিয়া কথাগুলিকে অব্যক্ততার নিগড় ছিন্ন করাইয়াছিলাম। শ্রুত করিবার নিমিত্তেই লিখিয়াছি।

যেইদিন পথের দিশা- জীবন পথের একান্ত সহচরী হইয়া যাইবে সেইদিন কথাগুলি শ্রুতি হইবে। সেইদিন সোহিনী রাগিনীর শেষ রাত্রিতে বীণার শিঞ্জনে তোমার ‘অপরিচিতা’ ঘোমটাখানির উন্মোচন করিয়া তোমাকে ‘পরিচিতা’ করিয়া লইবো- এই সুপ্ত কামনার সাথে আজিকার লিপির সমাপন টানিতেছি। অব্যক্ত রাখিলেও শুভকামনা প্রার্থনার রীতিটুকু কিন্তু অন্তরে ভুলিয়া যাইনি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।