আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা: দেশে-বিদেশে. শহীদ বিন ফজল:

‘মাদ্রসা’ আরবী শব্দ। মূল শব্দ হিব্রু ভাষার ‘মিদরাসা’। যে কোন ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মাদ্রাসা বলা যায়। হোক না তা ধর্মীয় বা ধর্মীয় বা ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ মাদ্রসা বলতে এমন এক স্থান বা প্রতিষ্ঠানকে বুঝায়; যেখানে শিখন- শেখানো এবং পড়ালেখা চলে।

মুসলিম দেশগুলোতেই মাদ্রাসা শব্দটির বহুল ব্যবহার দেখা যায়। যাহোক, মাদ্রাসা আরবী শব্দটি ইংরেজি স্কুল বা বাংলায় বিদ্যালয়-এর সমার্থক। আবার মাদ্রাসা বলতে বাংলাদেশের ন্যায় অনেক দেশে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বুঝানো হয়ে থাকে। বিশেষ ধরণের ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। হিফাজ বা কুরআন মুখস্থকরণ এবং আলিম বলতে মুসলমানদের মাঝে ধর্মীয় পান্ডিত্য অর্জনক্রী কোন বিশেষ ব্যক্তিকে বুঝানো হয়।

মাদ্রাসায় নিন্মোক্ত পাঠ্যবিষয়গুলো পড়ানো হয়। যেমন- আরবী ভাষা ও সাহিত্য, তাফসির বা কুরআনের ব্যাখ্যা, শরীয়াহ বা ইসলামী আইন, হাদিছ বা মহানবীর বাণী, মান্তিক বা যুক্তিবিদ্যা এবং ইসলামের ইতিহাস। প্রাক-আধুনিক যুগে, ওসমানিয়া সা¤্রাজ্যে, হাদিছ শিক্ষা ব্যবস্থা পাঠ্য তালিকাভুক্ত করা হয়। যুগের চাহিদা মেটানোর প্রয়োজনে কিছু মাদ্রাসায়; আরবী সাহিত্র, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য এবং অন্যান্য বিদেশী ভাষা ও বিজ্ঞান এবং বিশ্ব ইতিহাস পড়ানো হয়ে থাকে। ওসমানিয়া ধারার মাদ্রাসা শিক্ষা ব্রবস্থায়; ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি লেখা চর্চার রীতি অনুশীলণ, ব্যাকরণ, বাক্রপ্রকরণ, প্রবন্ধ, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, রাজনীতি বিজ্ঞান এবং নীতিবিদ্যা পাঠ্যতালিকাভুক্ত করা হয়।

‘আলিম’[ পাশের সনদ পেতে হলে, প্রায় বার বছর পড়ালেখা করতে হয়। মাদ্রাসাগুলোতে অনেক কুরআনে হাফেজ তৈরি হয়। মাদ্রসাগুলো; অনেকটা কলেজ বা মহাবিদ্যালয়ের অনুরূপ; যেখানে শিক্ষার্থীরা সান্ধ্যকালীন পাঠ গ্রহণ করে ও বাস করে। মাদ্রসাগুলোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলো; এতিম ও দরিদ্র শিশুদের ভর্তি করিয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেয়া। মাদ্রাসাগুলোতে মেয়েরাও আলাদাভাবে বা সহশিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।

দক্ষিণ আফ্রিকাতে সরকারি- বেসরকারি ধর্মবহির্ভুত বিদ্রালয়-মহাবিদ্যালয় হতে পড়াশোনারত মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে মাদ্রসাগুলো ভ’মিকা পালন করে থাকে। যাহোক, অফনেক স্বচ্ছল মুসলিম পরিবারের সন্তানেরা পূর্ণাঙ্গ বেসরকারি ইসলামী বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে থাকে। এখানে ধর্মনিরপেক্ষ ও ধর্মীয় শিক্ষা সম্মিলিতভাবে পড়ানো হয়। ভারতীয় অনেক মাদ্রাসায় উর্দুও পড়ানো হয়। মাদ্রাসা শিক্ষার আদি ইতিহাস: ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ছিলনা।

তবে এসময় মসজিদগুলোতে এসব ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হত। সেকালে অনেক মানুষ ইসলামী পন্ডিততুল্যব্যক্তিবর্গে চারিপাশে বসে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করত। এ অনানুষ্ঠানিক শিক্ষকগণই, পরে শেখ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন এবং এসব শেখ নিয়মিত ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষা দিতে আরম্ভ করেন। এধরণের শিক্ষাদান পদ্ধতিকে মজলিশ বা আলোচনা সভা বলা হত। মুসলিম বিশ্বে, মরক্কোর ফাস নগরীতে ‘জমিয়াত-আল-কারোবান’ নামে ৮৫৯ সালে স্থাপিত মাদ্রাসা, প্রথম মাদ্রাসা হিসেবে খ্যাত।

মুহাম্মদ আল ফিহরী নামক এক সম্পদশালী ব্যবসায়ীর কন্য; ফাতেমা ‘আল- ফিহ্রী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এ মাদ্রাসা স্থাপনের পর ৯৫৯ সালে মিশরের কায়রোতে বর্তমান আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। আব্বাসীয় শাসনামলের সেলযুগে নিজামুল মূলক নিজামিয়াহ্ মাদ্রাসা নামে মসজিদ ভিত্তিক একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। নিজামুল-মূল্ক, যিনি পরে আততায়ীর হাতে নিহত হন; তিনি ১১ শতকে বিভিন্ন নগরীতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নিজামিয়াহ্ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মধ্যপ্রাচ্যে ফাতেমিয়া ও মামলুক শাসনামলে অনেক অভিজাত শাসক ধর্মীয় ওয়াক্ফ স্ট্যাটের অধীনে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

মাদ্রাসা ব্যবস্থা; শুধু আভিজাত্যের প্রতীক ছিলনা, এগুলো ছিল সম্পদ হস্তান্তর ও উত্তরাধিকার সম্পদ হিসেবেও পরিচালিত হত। বিশেষত মামলুক শাসনামলে, যেখানে প্রাক্তন দাসরা শাসন ক্ষমতার অধিকারি হতো, তারা শাসক মামলুকদের উত্তরাধিকারি হতে পারতনা। এসময়েই কায়রোর সুলতান হাসান মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করা হয়েছিল। ১১শতক হতে ১৪শত সাল সময়কে আরব ও ইসলামী দর্শনের স্বর্ণযুগ বলা হয়। ইমাম আল-গাজ্জালী তখন, মাদ্রাসা পাঠ্যক্রমে সফলভাবে যুক্তিবিদ্যা সংযোজন করেন।

ইসলামী সাম্রাজ্যের খেলাফতের প্রথমার্ধে মসজিদগুলোকে বিচারালয় সুফিদের আসর হিসেবে ব্যবহার করা হত। সেসময় মাদ্রাসায় ধর্মীয় সিয়সমূহ ছাড়াও গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, মহাকাশবিদ্যা, ভ’গোল, রসায়ন, দর্শন, যাদুবিদ্যা ও ভবিষ্যত বাণী করার বিদ্যা পড়ানো হত। যাহোক, মাদ্রাসাগুলোতে উন্নত বিজ্ঞান চর্চা হত, এ কথা বলা যাবেন পন্ডিতরা রাজকীয় পৃষ্ঠপোশকতায় তা করতেন। এসময় শিক্ষার হার ছিল মধ্যপ্রাচ্যে সর্বোচ্চ, যা গ্রীক শ্রেষ্ঠ শিক্ষাচর্চার সাথে তুলনীয়। মধ্যযুগের ইসলামী বিশ্বে; মক্তব ও মাদ্রাসাগুলো শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করে।

প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা: মধ্রযুগের ইসলামী বিশ্বে; প্রাথমিক শিক্ষায় ‘মক্তব’ নামে পরিচিত ছিল, যা দশম শতাব্দী পর্যন্ত বহার ছিল মাদ্রাসার মত মক্তবগুলো মসজিদের সাতে সংযুক্ত ছিল। ১১শতকের বিখ্যাত পারস্য ইসলামী দার্শনিক ও শিক্ষক ইবনে সিনা, তাঁর একটি বইযে মক্তব নামে একটি নিবন্ধ লিখেন, যা মক্তবের শিক্ষকদের নির্দেশিকা হিসেবে ব্যবহৃত হত্ তিনি লিখেন যে, শিশুরা এককভাবে কোন শিক্ষকের নিকট পড়ার চেয়ে শ্রেণিকক্ষে ্কসাথে ভালভাবে শিখতে পারে। তিনি তাঁর যুক্তির স্বপক্ষে উল্লেখ করেন যে, শ্রেণিবদ্ধ হয়ে পড়াশোনা করলে, প্রতিযোগিতা, দলীয় চেতনা ও তির্ক চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হয়। ইবনে সিনা মক্তব বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিরও বর্ণনা দেন। প্রাথমিক শিক্ষা: ইবনে সিমা লিখেছেন যে, শিশুদের ৬ বছর বয়সে মক্তব বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো উচিত এবং ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত তাদেরকে প্রাথমিক শিক্ষা দিতে হবে।

তিনি লিখেন, এ বয়সে শিক্ষার্থীদেরকে কুরআন, ইসলামী মেটাফিজিক্স, ভাষা, সাহিত্য, ইসলামী নৈতিকতা ও ব্যবহারিক বিষয়ে শিক্ষা দেযা উচিত। মাধ্যমিক শিক্ষা: ইবনে সিনা বলেন, মক্তব শিক্ষকালের মাধ্যমিক স্তরে, শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষায়িত শিক্ষা দিতে হবে। এ সময় শিক্ষার্থীরা সামাজিক মর্যাদা নির্বিশেষেখ ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করতে শিখে। তিনি আরও লিখেন যে, ১৪ বছর বয়সের পর, শিক্ষার্থীদেরকে তাদের পছন্দের বিশেষায়িত বিষয়গুলোর প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে। সেটা পঠন, ব্যবহারিক দক্ষতা, সাহিত্য, ধর্মপ্রচার, চিকিৎসা, জ্যামিতি, ব্যবসায় ও বাণিজ্র, শিল্পকর্ম বা অন্য কোন পেশাভিত্তিক বিষয় হতে পারে।

তিনি অভিমত দেন যে, এসময়টা শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রান্তিকাল। এসময় শিক্ষার্থীদর স্বাধীন-স্বাতন্ত্র ও সনদ অর্জনের কাল। তাদের আবেগগত উন্নয়ন এবং বিষয় নির্বাচনের সুযো দিতে হবে। উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা: মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার ধারণা বিকাশকালে, এটাকে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হত। এখানে প্রথমদিকে শুধু ‘ধর্মীয় বিজ্ঞান’ পড়ানো হত।

দর্শন ও ধর্মীয় বিজ্ঞান শিক্ষা বাদ দেয়া হয়েছিল। পাঠ্যক্রমে ধীরে ধীরে পরিবর্তন সাধন করা হয়। পাের অনেক মাদ্রাসায়, ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ জ্ঞিান বিষয় পাঠ্যতালিকাভুক্ত করা হয়। যেমন- যুক্তিবিদ্যা, গণিত ও দর্শনশাস্ত্র। কিছু মাদ্রাসা তাদের পাঠ্যসূচিকে আরও সম্প্রসারিত করে তাতে ইতিহাস, রাজনীতি বিজ্ঞান, নৈতিকতা, মেটাফিজিক্স, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও রসায়নশাসত্্র সংযোজন করা হয়।

মাদ্রাসার সাধারণত এর প্রতিষ্ঠাতা কতৃক প্রণিত হয়ে থাকে। ইসলামী বিশ্বের সর্বত্র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১০ম শতাব্দীতে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১শ শতাব্দীতে নিজামিয়াহ্ মাদ্রাসা সবচেয়ে বিখ্যাত। এছাড়া, কায়রোতে ৭৫টি, দামেস্কে ৫১টি এবং আলেপ্পোতে ৪৪টি মাদ্রাসা ১১৫৫ হতে ১২৬০ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়। কর্ডোভা, সেভিলে, টোলেভো, মার্সিয়া, আলজেরিয়া, ভেলেন্সিয়া ও কাডিজে অনেকগুলো মাদ্রাসা স্থাপন করা হয়েছিল।

ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের আধুনিকায়নের প্রথমার্ধে, মাদ্রসাগুলো নিন্ম ও বিশেষায়িত স্তর, দুভাগে বিভক্ত ছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা: ভারতে প্রায়৩০,০০০ মাদ্রাসা আছে। এসব মাদ্রাসার বেশির ভাগই হানাফি ভাবধারার। এ দেশে মাদ্রসাগুলো প্রধানত দুধারায বিভক্ত। যেমন- দেওবন্দী মাদ্রাসা ধারা এবং বেরলভী মাদ্রাসা ধারা।

দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রথম ধারার মধ্যে সর্ববৃহত মাদ্রাসা। আর বেরলভী ধারার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল; জামিয়াহ্ আশরাফিয়া, মুবারকপূর, মারজার ইসলাম বারেশী, জামেয়াহ্ নিজামদিনা নয়াদিল্লী, জামেয়া মুরাদাবাদ। বেরলভী ধারায়, শেষের মাদ্রাসাটি অন্যতম বৃহত মাদ্রাসা। ভারত সরকার মাদ্রাসাগুলোর একটি বোর্ড প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এ বোডৃ মাদ্রাসা শিক্ষা ব্রবস্থাকে পরিছালনা করবে।

মাদ্রাসাগুলোতে যদিও, কুরআন ভিত্তিদক শিক্ষাদান করা হয়, এতে পাঠ্যক্রমে গণিত, কম্পিউটার ও বিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ভারতীয় মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার: ভারতে বৃটিশ শাসন প্রতিষ্ঠা লাভের পর, এবং দারুল উলুম মানজারে ইসলামবেরলবী শরীফ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর মুসলিম পন্ডিতবর্গ , পৃথিবীর অন্যান্র অঞ্চলে মাদ্রাসা স্থাপনের জন্য ভারত ত্যাগ করেন। তাদের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো; দারুল উলুম হোলোলোম্বে ও দারুল উলুম আল- মাদানিয়া। প্রথম মাদ্রাসাটি হতে প্রখ্যাতপন্ডিত শেখ ইব্রাহিম মেমন মাদানীর মত মানুষ সৃষ্টি হয়েছেন। এসব মাদ্রাসা ধর্মীয় ভাবধারা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠ করা হয়, যা অন্য কোথাও বিরল।

পাকিস্তানে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা: ইসলামী বিশ্বে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্রবস্থা গড়ে ওঠেছে ১১শ শতকে। সেগুলো ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে স্থাপিত হলেও, ধর্মরিপেক্ষ ভাবধারাও সেখানে শিক্ষা দেয়া হত। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রমাণ হল; এসব মাদ্রাসা হতে চিকিৎসক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিচারক এবং শিক্ষক গড়ে ওঠা। ফিলিপাইনে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা: ফিলিপাইনের মুসলিম অধ্যুষিত মিন্দানাওতে ১৫টি অঞ্চলে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্রবস্থা প্রচলিত রয়েছে। মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে আরবী ভাষা ও ইসলামী মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে শিক্ষা বিভাগ সরকারি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে।

মাদ্রাসাগুলোতে উন্নত পাঠ্যক্রম অনুমোদন করা হয়। এদেশের বিখ্যাত মাদ্রাসাগুলো হলো; ইবনে সিনা ইন্টেগ্রেটেড মাদ্রাসা, সারাং বাংগুন ইত্যাদি। তাছাড়া, বেসরকারিভাবেও কেশ কিছু বিক্ষিপ্ত এলাকায় মাদ্রাসা স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা: বাংলাদেশে বতৃমানে তিন ধারার মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মূল দরছে নিজামী, সংস্কারকৃত দরছে নিজামী ও আলীয়া মাদ্রসা।

প্রথম দুটি কওমী বা বেসরকারি মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত। সেগুলোর মধ্যে প্রসিদ্ধ মাদ্রাসাগুলো হলো; আল-জামিয়াতুল আলীয়াহ্ দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী), আল-জামিয়াহ। আল- ইসলামীয়াহ্ (পটিয়া) এবং জামিয়াহ্ তাওয়াক্কুলিয়াহ্ রেঙ্গা মাদ্রাসা (সিলেট)। ২০০৬ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৫,০০০ হাজারের অধিক কওমী মাদ্রাসা রয়েছে। মাদ্রাসা শব্দের প্রতি বিরূপতা: মাকিৃন যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ টুইন টাওয়ার হামলার পর হতে পাশ্চাত্রে মাদ্রাসা শব্দটি বিরূপতার ষিকার হয়েছে।

এ মাদ্রাসাগুলোকে উগ্র মুসলিম পুণরুজ্জীবনবাদী, মার্কিন বিরোধী, উগ্রবাদী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। আসলে মাদ্রাসাগুলো মুসলিম ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেলেও এখানে ধর্মীয় বিষয় শুধু পড়ানো হয়না বা পাশ্চাত্র বিরোধী শিক্ষা দেয়া হয়না। মাদ্রসা ধারার শিক্ষা ব্রবস্থায় প্রথমে ‘আল্লাহ্র ওপর জ্ঞানার্জনকে’ অধিক গুরুত্ব দেয়া হলেও, এখানে গণিত এবং কবিতাও পড়ানো হয়। কিছু মাদ্রাসা; বিশেষত ভারতে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভ’মিকা পালন করে থাকে। আরও উল্লেখ্য যে, ওসমানিয়া শাসনামলে, মাদ্রাসাগুলোতে বিজ্ঞানের ৭টি বিষয় অন্ত্যর্ভুক্ত ছিল্ যেমন- লেখা চর্চা বিষয়ক কোর্স, ভাষা বিজ্ঞান, ফার্সি, আরবী, ব্যাকরণ, বাক্যপ্রকরণ, অলংকার শাসত্র, ইতিহাস এবং যুক্তিবিদ্যা।

আসলে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্রবস্থা হল; পাশ্চাত্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্রাথলিক চার্চ ফ্যাকাল্টি প্রতিষ্ঠা ও ধর্মীয় শিক্ষা শাখার মত। এ নিবন্ধে আমরা মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উৎপত্তি ও বিকাশ ধারা আলোচনা করেছি। মাদ্রাসা নিয়ে বাংলাদেশেও বিরূপ প্রচারণা চলছে। আসলে, মাদ্রাসাগুলোতে ধর্মীয় ও আধুনিক জীবনযাত্রার প্রয়োজনানুগ পাঠ্যক্রম অনুসরণ করা হয়ে থাকে। দমর্,বিশ্বাসী মানুষ ও উন্নত নৈতিক মানসম্পন্ন মানুষ সৃস্টিতে মাদ্রাসাগুলো যুগে যুগে আলো ছড়িয়ে আসছে।

কিছু কিছু বিভ্রান্ত মানুষ; মাদ্রাসা শিক্ষা পাশ করা তরুণদের বিপথগামী করেছেমাত্র। ঢালাওভাবে মাদ্রাসা শিক্ষাকে এ জন্য দোষারূপ করা সমীচিন হবেনা। যা দরকার, মাদ্রাসাগুলোকে সংস্কার ও উন্নত করা। http://islambarta.com/2012/08/4482/ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.